চট্টগ্রাম নগরের হাজারী লেইনে ফেসবুকের পোস্টকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা সৃষ্টি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলা-এসিড নিক্ষেপের ঘটনায় সনাতন ধর্মবিশ্বাসী সংগঠন ‘আন্তর্জাতিক শ্রীকৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘ- ইসকন’ জড়িত বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বুধবার (৬ নভেম্বর) বিকেলে নগরের দামপাড়া পুলিশ লাইনে এক সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) মুখপাত্র উপ-কমিশনার (অপরাধ) রইছ উদ্দিন।
রইছ উদ্দিন বলেন, ইসকনকে নিয়ে দেওয়া একটি ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে ওসমান আলী নামে এক ব্যক্তিকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে এমন তথ্য ৯৯৯-এ পেয়ে আমাদের কোতোয়ালী থানা পুলিশ রেসপন্স করে। তারা সেখানে গেলে অবরুদ্ধ ওসমান নামে ওই ব্যক্তিকে উশৃঙ্খল জনতা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। পরিস্থিতির অবনতি হলে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ এবং সেনাসদস্যসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত হন। ছিনিয়ে নেওয়ায় বাধা দেওয়ায় উশৃঙ্খল জনতা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর ইটপাটকেল ও এসিড নিক্ষেপ করলে আমাদের ৯ জন সদস্য আহত হন। যার মধ্যে একজন এসিড দগ্ধ হয়েছেন।
হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে আটকের সংখ্যা জানিয়ে তিনি বলেন, ঘটনাস্থল থেকে বিপুল সংখ্যক ব্যক্তিকে আটক করা হলেও যাচাই বাছাই করে আমরা ৮২ জনকে আটক দেখিয়েছি। তাদের মধ্যে বেশিরভাগই ইসকন সমর্থক। কয়েকজন মুসলিম থাকতে পারে। এটিও যাচাই-বাছাই চলছে।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে তিনি জানান, ঘটনার সাথে যারা জড়িত ছিল তারা ‘জয় শ্রীরাম’ বলে স্লোগান দিয়েছে। আর ফেসবুকে যে মিথ্যা প্রচার-প্রচারণা করা হয়েছে সবকিছু বিচার বিশ্লেষণ করে জানতে পেরেছি, ইসকন সমর্থকরাই জড়িত রয়েছে।
হামলাকারীদের রাজনৈতিক সম্পৃক্ততার বিষয়ে জানতে চাইলে রইছ উদ্দিন বলেন, কোনো রাজনৈতিক মদদ রয়েছে কি না সেটা তদন্ত করা হচ্ছে। আটক করা হয়েছে যাদের, তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। শান্ত নগরীকে যারা বিশৃঙ্খল করতে চায়, তাদের বিষয়ে আমাদের কার্যক্রম চলমান।
হাজারি গলির ওষুধের কয়েকটি দোকান সিলগালা করায় নগরজুড়ে রোগীরা ভোগান্তিতে পড়েছে এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে রইছ উদ্দিন বলেন, বন্ধ করার জন্য নির্দেশনা আমাদের নেই। নিরাপত্তার স্বার্থে যেন সেখানে কোনো নাশকতা বা লুটতরাজ না হয় এজন্য কয়েকটি দোকান জেলা প্রশাসন সিলগালা করে সাময়িক বন্ধ করেছে। কিন্তু সব দোকান বন্ধ করা হয়নি।
ফেসবুকে ‘বিতর্কিত’ পোস্ট দেওয়া যুবককে আটক করা হয়েছে কি না- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ওসমান আলী বর্তমানে কাস্টডিতে আছে। যদি এখানে কেউ ধর্মীয়ভাবে সংক্ষুব্ধ হয়েছে, এমন অভিযোগ ওসমান আলীর বিরুদ্ধে নিয়ে আসে তাহলে তার বিরুদ্ধে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।
এদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলার ঘটনায় নগর পুলিশের কোতোয়ালি থানায় ৮২ জনের নাম উল্লেখসহ ৫০০ থেকে ৬০০ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা দায়ের করেছেন কোতোয়ালি থানার উপ পরিদর্শক (এস আই) মিজানুর রহমান।
যাাযদি/ এম