সোনাইমুড়ীতে কাজ না করায় বরাদ্দ ফেরত দিতে চিঠি
প্রকাশ | ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১:১৮ | আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০০
নোয়াখালী সোনাইমুড়ীতে টিআর,কাবিটা-কাবিখা প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন না করায় ৪২ টি প্রকল্পের বিপরীতে বরাদ্দ করা প্রায় কোটি টাকা ফেরত দিতে চিঠি দিয়েছে বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, সোনাইমুড়ীতে কাবিখা/কাবিটা ও টেস্ট রিলিফের (টিআর) ৪২টি প্রকল্পের কাজ না করায় বরাদ্দের টাকা ফেরত দিতে প্রকল্পের সভাপতিদের চিঠি দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৩ জন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকেও টাকা ফেরত দিতে চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মিশকাতুর রহমান।২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (কাবিখা- কাবিটা) ওটেস্ট রিলিফ (টি আর) প্রকল্প বরাদ্দ দেওয়া হয়। প্রকল্প সভাপতি কাজ সঠিক ও নির্দিষ্ট সময়ে শতভাগ সম্পন্ন করার লক্ষে বাস্তবায়ন নির্দেশিকা ২০২১ অনুযায়ী নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে চুক্তিপত্র সম্পাদন করে। কাজ শুরু করার জন্য প্রথম ও দ্বিতীয় কিস্তিতে বরাদ্দের টাকা উত্তোলন করে। প্রকল্পের কাজের মেয়াদ অনেক আগেই শেষ হয়েছে। কিন্তু বারবার তাগাদা দেওয়ার পরও সভাপতিরা প্রকল্পের কোনো কাজ করেননি।২৩ নভেম্বর তারিখের মধ্যে উক্ত টাকা ফেরত দিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কানিজ ফাতেমা স্বাক্ষরিত চিঠি প্রেরণ করা হয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, উপজেলা ছনগাঁও বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠ ভরাট ৩ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। প্রকল্প সভাপতি বজরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মীরন অর রশিদ এ প্রকল্পের সভাপতি। তিনি মাটি ভরাটের কাজ করেনি।অম্বর নগর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ইব্রাহিম মেম্বার বাড়ির রাস্তা সংস্কার ৩ লক্ষ টাকা ও বারগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের পেয়ারাপুর পান বাড়ি হইতে খান বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা মেরামত ৬৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। এ প্রকল্পের সভাপতি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শামসুল আলম নিজেই। প্রকল্পগুলোর কাজ গত জুন মাসে ৩০ তারিখে শেষ করার নির্দেশনা ছিল। কিন্তু প্রকল্প সভাপতিরা কাজ না করে প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
সোনাইমুড়ীতে ছনগাঁও বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা শাহনাজ বেগম জানান, তার স্কুলের মাঠ ভরাটের জন্য তিন লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল। তা তিনি জানেন না। পিআইও তার স্কুলে গিয়ে তদন্ত করলে বিষয়টি জানতে পারেন।
এলাকাবাসী জানিয়েছেন, বিগত সরকারের আমলে এ উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের মধ্যে ৯ টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানগণ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী। এই উপজেলার ৬ টি ইউনিয়ন নোয়াখালী ১ আসন ও ৪ টি ইউনিয়ন নোয়াখালী ২ আসনে হওয়ায় ২ সাবেক এমপির আশীর্বাদ পুষ্ট অধিকাংশ চেয়ারম্যানরা বিভিন্ন ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে সরকারি বরাদ্দ আত্মসাৎ করে আসছিলেন।
সোনাইমুড়ী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মিশকাতুর রহমান জানান, তিনি ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে এখানে যোগদান করেছেন। সরেজমিন প্রকল্প এলাকায় তদন্ত করে ৪২ টি প্রকল্পের অস্তিত্ব পাননি।স্থানীয় এলাকাবাসীকে জিজ্ঞাসা করলে কাজ হয়নি মর্মে জানান। তিনি বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানিয়ে পরিপত্র মোতাবেক টাকা ফেরত দিতে চিঠি দিয়েছেন। এ পর্যন্ত প্রকল্প সভাপতিরা ব্যাংক চালানের মাধ্যমে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা ফেরত দিয়েছেন।
সোনাইমুড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসরিন আক্তার জানান,বরাদ্দের টাকা ফেরত দিতে সাবেক ইউএনও স্বাক্ষরিত চিঠি প্রকল্প সভাপতিদের দেওয়া হয়েছে।
যাযাদি/ এসএম