কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার মেঘনা নদীতে গড়ে ওঠা অবৈধ ঝোপঝাড়ের কারণে নৌযান চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টির পাশাপাশি আরও ভয়াবহ পরিণতির মুখোমুখি হচ্ছে নদী নির্ভর জীববৈচিত্র্য। বিশেষত এই ঝোপঝাড়ের কারণে দিন দিন বিলুপ্তির পথে দেশীয় প্রজাতির মাছ। স্থানীয় জনগণ এই বিষয়ে বারংবার সচেতনতা সৃষ্টি করলেও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কার্যকর উদ্যোগের অভাবে পরিস্থিতি ক্রমশই খারাপ হচ্ছে।
নদীতে গড়ে ওঠা এসব ঝোপঝাড়ের মধ্যে কিছু অসাধু চক্র মাছ ধরার ফাঁদ হিসেবে ব্যবহার করছে, যা প্রাকৃতিক প্রজননক্ষেত্রকে ধ্বংস করছে। ফলে রুই, কাতলা, পাবদা, শোল, টেংরা এবং অন্যান্য দেশীয় প্রজাতির মাছ বিলুপ্তির ঝুঁকিতে পড়েছে। মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হওয়ায় নতুন প্রজন্মের মাছ নদীতে জন্মাতে পারছে না। এই অবস্থায় স্থানীয় জেলেরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং নদী-নির্ভর জীবিকা হারানোর শঙ্কায় রয়েছেন।
এদিকে সংশ্লিষ্ট স্থানীয় প্রশাসনের একাধিক কর্মকর্তা এ বিষয়ে অবগত থাকলেও কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুধু আশ্বাস দেওয়া হচ্ছে, অথচ অবৈধ ঝোপঝাড় অপসারণ কিংবা নিয়মিত মনিটরিং সিস্টেম চালু করার মতো কোনো পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। পত্র-পত্রিকায় একাধিকবার নিউজ প্রকাশিত হলেও ব্যবস্থা নেননি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। স্থানীয়রা এ বিষয়ে দ্রুত ও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন। দেশীয় প্রজাতি মাছ রক্ষা এবং নদীর পরিবেশ রক্ষায় ঝোপঝাড়গুলো অপসারণের পাশাপাশি কড়া নজরদারির দাবি তুলেছেন তারা।
এ বিষয়ে চালিভাঙ্গা নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. আজমগীর হোসাইন আমাদের প্রতিবেদককে জানান, 'নদীতে অবৈধ ঝোপঝাড়ের সমস্যাটি আমরা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছি। খুব শিগগিরই এগুলো অপসারণে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নদীর স্বাভাবিক পরিবেশ বজায় রাখতে এবং জনসাধারণের দুর্ভোগ কমাতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।'
যাযাদি/এসএস