আসামীদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে দাগনভূঞায় সংবাদ সন্মেলন 

প্রকাশ | ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ১৮:৩৬

দাগনভূঞা (ফেনী) প্রতিনিধি
ছবি : যায়যায়দিন

মামলাবাজ, ষড়যন্ত্রকারী, পরিবারের বিশৃঙ্খলার ইন্ধনকারী ও জোরপূর্বক জমি এবং দোকান দখল করে নেয়ার প্রতিবাদ করায় শফিউল আজম রাজন, তামিম এবং নাহিদকে হত্যা চেষ্টার অভিযোগে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন মামলার বাদি আরিফুল আজম নাহিদ ও ভুক্তভোগীর পরিবার। মঙ্গলবার বিকেলে স্থানীয় একটি চাইনিজ রেষ্টুরেন্টে এ সংবাদ সন্মেলন করা হয়েছে।

ফেনীর দাগনভূঞা থানা সংলগ্ন হাজী আবদুর রশিদ মিয়ার নতুন বাড়ির প্রবাসী করিমুল আজিম এর স্ত্রী রাবেয়া বশ্রী ওরফে জলসা (৪৬) নামে এক   নারি ও ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীদের অতর্কিত হামলায় আপন ভাসুরের ছেলে আরিফুল আজিম নাহিদ (৩২), ভাসুর শফিউল আজম (৫৫) ও তার সন্তান তামিম (২৩)কে কৌশলে বাসায় জরুরি কাজ আছে বলে নিজেদের চলাচলের রাস্তায় নির্জনস্থানে অতর্কিত হামলায় তিনজনকে মারাত্নক আহত করেন। তাদের আত্নচিৎকারে স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় স্থানীয় সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহন করেন। আশংঙ্কাজনক অবস্থায় শফিউল আজম রাজনকে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করেন এবং চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৫ মঙ্গলবার  চট্রগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। ঘটনাটি গত ৩ নভেম্বর রবিবার সকাল সাড়ে দশটায় থানা সংলগ্ন নির্মানাধীন বহুতল বাসায় এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনার দুইদিন পর মামলার বাদি আরিফুল আজিম নাহিদ ও চাচার পরিবারসহ বিভিন্ন মাধ্যমে হুমকি ধামকি ও মিথ্যা মামলা করার পায়তারা  এবং নতুনভাবে ফন্দিফিকির প্রদর্শন করে আসছেন বিবাদীগন। মঙ্গলবার  গ্রেফতারকৃত দুজন জামিন পেয়ে বিভিন্ন হুমকি প্রদর্শন করছেন মর্মে সংবাদ সন্মেলন করেন। মঙ্গলবার বিকেলে সংবাদ সন্মেলনে নাহিদ জানান,  আমার আপন চাচী রাবেয়া বস্রী (জলসা) মামলার গতি ভিন্নখাতে সাজানোর জন্য পাল্টা মামলার করার পায়তারা করছেন এবং হাসপাতালে গিয়ে নাটক তৈরি করছেন। আমার মেঝো চাচা করিমুল আজিমকে গত চার বছর দেশে আসতে দিচ্ছেন না নিজের স্ত্রী। তিনি দেশে আসলে আমাদের পারিবারিক সমস্যা বিশেষ করে সম্পত্তির ভাগবাটোয়ারা সমাধান হয়ে যাবে তাই। সমাধান না চেয়ে তিনি পারিবারিক সম্পত্তি ভাগবাটোয়ারা নিয়ে করেন নোংরা রাজনীতি যার কারনে প্রতিনিয়ত বিশৃঙ্খলা তৈরি করছেন কোন না কোন উপায়ে। বাড়িতে পুকুরের মাছ, গাছপালা থেকে শুরু করে সবই আমার চাচির দখলে। উনার কথা হলো সবকিছু তিনিই নিয়ন্ত্রন করবেন। এটা নিঃসন্দেহে জবরদখল।  অর্থের দাপটে বিগত ফ্যাসিষ্ট সরকারের শাসনামলে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় মোটা অংকের টাকা দিয়ে এ বহুতল ভবন নির্মান করেন সন্ত্রাসীদের সহায়তায়। যা বিল্ডিং তৈরির নিয়মানুযায়ী বিল্ডিং কোড পালন করেননি। এরই প্রেক্ষিতে গত আট মাস আগে আমার বড় চাচার টিন ছিদ্র করে ইট পাথর পড়ে চা দোকানে। সে সময় থানার বিভিন্ন অফিসার সেখানে বসতেন এবং বিভিন্ন মানুষের সেবা দিতেন। ইট / পাথর টিনে পড়ার কারনে দূর্ঘনার আশংঙ্কা বিধায় চা দোকান অনেকটাই থমকে যায়। সংসার চালাতে দিশেহারা হয়ে পড়লে আমার চাচাকে মানসিক রোগী বলে প্রচার করেন যদিও তিনি তখন সুস্থ এবং মানসিক রোগী কখনও ছিলেন না। তিনি চা দোকান করে সংসার চালান। দুটি ছেলে সন্তান সহজ সরল স্বভাবের কারনে তাদেরকে চা দোকান থেকে উচ্ছেদ করার পায়তারার নতুন ষড়যন্ত্র হিসেবে গত তিনদিন আগে আমাদেরকে হত্যার চেষ্টা করেছেন। আমার চাচি রাবেয়া বস্রী (জলস)  আমার চাচা আজিমুল করিমসহ আমার দাদা জীবিত থাকাকালীন সময়ে শষ্যাশায়ী অবস্থায় মুল্যবান সম্পত্তিগুলো নিজেদের পচন্দমতো নিয়েছেন। এবং আমার ছোট চাচা নাসির উল আজিমকে বাড়িতে পর্যন্ত ডুকতে দেননি এবং কি সম্পত্তি থেকেও বঞ্চিত করেছেন। যার কারনে তিনি পৈতৃক সম্পত্তির মালিকানা নিয়ে আসতে পারেন না দীর্ঘবছর। তিনি অর্থের লোভ, সম্পত্তির লোভ ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে দীর্ঘবছর আমাদের সুন্দর সংসারকে হুমকির মধ্যে রেখেছেন। ন্যায্য অধিকারের কথা বললেই তিনি মামলা দিয়ে চোদ্দগুষ্টিকে জেলের ভাত খাওয়াবেন এমন হুমকি প্রদর্শন করেন। আমরা এর পরিত্রান চাই। শান্তিতে বসবাস করতে চাই। ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীদের কারনে মামলা করার পরও আমাদের তিনটি পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি। আসামী গ্রেফতার হলেও জামিনে এসে ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন। 

আমার চাচা শফিউল আজম রাজন তিনি তার জায়গায় চা দোকান করেন। আমার চাচি রাবেয়া বস্রী জলসা তিনি বিল্ডিং এর কাজ করার সুবিধার্থে একাধিকবার  সন্ত্রাসী দিয়ে রাতের অন্ধকারে চাচার চা দোকান ভাঙ্গচুর ও উচ্ছেদ করার ষড়যন্ত্র করেছেন কিন্ত পারেননি। আবার বিভিন্ন ভাবে প্রস্তাব ও দিয়েছেন চা দোকানের জায়গাটি ক্রয় করার জন্য।  তখন আমি দুবাইতে ছিলাম।

আমরা মামলা করেছি দুইজন আসামী গ্রেফতার হয়েছে কিন্ত বাকি আসামীরা এখনও গ্রেফতার হয়নি কিন্ত আমরা জানতে পেরেছি তারা প্রকাশ্য ঘুরাফেরা করছে। তারা বর্তমানে রাজনৈতিক মহলের কাছে সহযোগীতা চেয়েছেন কিন্ত বিগত সরকারের সময় জনৈক শাহীন মেম্বার (উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান দিদারুল কবির রতনের বিশ্বস্ত লোক) এর দাফটে তিনি জায়গাগুলো দখলে নেন। 
 
পলাতক আসামীদের দ্রুত গ্রেফতার ও সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে আমরা এর উপযুক্ত বিচার প্রত্যাশা করছি। একজন মহিলা কতটা জঘন্য হতে পারে তা আপনারা অনুসন্ধান করলে জানতে পারবেন। তিনি আরো জানান,  এমন কোন সাংবাদিক নেই তার বিরুদ্বে কথা বলার বা নিউজ করার। সব সাংবাদিক তিনি ম্যানেজ করতে পারেন। আমরা অসহায়, আমার চাচা একজন ছোট চা দোকানদার। তার চিকিৎসার খরচ এখন চলছে না। এ অমানবিক নিষ্ঠুরতার দায়ভার রাস্ট্রের আইনের মাধ্যমে আপনাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা আমরা প্রত্যাশা করছি। আমার চাচা বর্তমানে মুমুর্ষ  অবস্থায় চট্রগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

উল্লেখ্য,  এ ঘটনায় আপন ভাইর স্ত্রী রাবেয়া বস্ত্রী (জলসা)সহ নির্মাণাধীন কাজের শ্রমিক ও স্থানীয় সন্ত্রাসীর যোগসাজশে আসামী করা হয়েছে ৫ জনকে। তারা হলেন  রাবেয়া বশ্রী (৪৬), স্বামী- করিমুল আজিম করিম, নাইমুল (২৮), পিতা- অজ্ঞাত, জসিম (২২), পিতা- অজ্ঞাত, ফুয়াদ (২৩), পিতা- অজ্ঞাত,  নুরুল (২২), পিতা- অজ্ঞাত, সাং-ইউপি থানা জেলা-অজ্ঞাত সহ গত ৪ নভেম্বর বাদি হয়ে আরিফুল আজিম প্রকাশ নাহিদ দাগনভূঞা থানায় মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে দুইজনকে গ্রেফতার করলে বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে তারা জামিন পান। আসামী জামিনে এসে ভয়ভীতি দেখানোর কারনে বাদিগন চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন বলে জানান।

যাযাদি/ এম