নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াই হাজার উপজেলার তিলচন্দী বাজারে তৈরি কাঠের ফার্নিচার বিক্রি হচ্ছে সারাদেশে। বাজারটি ১৯৮২ সনে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে এখানে ফার্নিচার ব্যবসা শুরু হয়। সর্বপ্রথম ফার্নিচার ব্যবসা শুরু করেন খন্দকার কলাগাছিয়া গ্রামের আব্দুল কাদির নামে এক ব্যক্তি। এরই ধারাবাহিকতায় এখন এ বাজারটি কাঠের তৈরি ফার্নিচার ব্যবসার জন্য দেশ বিখ্যাত।
১৯৮২ সনে এলাকার মুরুব্বী শাহাবুদ্দিন, মোহাম্মদ আলী, জিন্নত আলী, দুখু মিয়া, প্রয়াত বোরহানউদ্দিন মাস্টার, মীর আবুল কাশেম মুক্তার, হাজী আব্দুল কুদ্দুস, তারা মিয়া, ইমান আলী মেম্বার এরা মিলে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় এখানে একটি বাজার গড়ে তোলেন। এখানে প্রতি শনিবার ও মঙ্গলবার বিকেলবেলা হাট জমে।
হাটে শাকসবজি, চাল, ডাল, কাপড়চোপর, হালকা খাবারসহ সকল প্রকার নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পাওয়া যায়। তবে এই বাজারটি দেশের মধ্যে পরিচিতি লাভ করেছে ফার্নিচার সামগ্রী দিয়ে। এখানে রয়েছে দুটি স মিল। ব্যবসায়ীরা সিলেট, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ এ সমস্ত পাহাড়ি এলাকা থেকে গাছ ক্রয় করে ট্রাকযোগে এখানে এনে স মিলে সাইজ মত কেটে বিভিন্ন ফার্নিচার তৈরিতে কাজে লাগায়। এখানে তৈরি ফার্নিচার গুলোর মধ্যে রয়েছে বড় বড় ভবনের দরজা জানালা, পার্টিশন, চেয়ার, টেবিল, খাট পালঙ্ক, শোকেস, আলনা, আলমারি, ওয়ারড্রপ, ড্রেসিং টেবিল, ডাইনিং টেবিল সেট, সোফা ইত্যাদি। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে লোকজন এসে এখান থেকে ফার্নিচার সামগ্রী ক্রয় করেন। এইজন্য এই বাজারটি ফার্নিচার ব্যবসার জন্য দেশ বিখ্যাত। এই বাজারে ছোট-বড় প্রায় ২০০ টি ফার্নিচারের দোকান রয়েছে। এখানে প্রায় ২০০০ শ্রমিক ফার্নিচার তৈরি, ডিজাইন করা, রং করা ইত্যাদি কাজে নিয়োজিত আছে। বাজারটি ধীরে ধীরে পশ্চিম দিকে হযরত গরীবুল্লাহ শাহ (রঃ) এর মাজার ছেড়ে আরো বহুদূর পর্যন্ত বিস্তৃত হয়ে গেছে। উত্তর দিকে দরি সিঙ্গাপুর গ্রাম এবং পূর্ব দিকে নারান্দী তিলচন্দীর মোড় পর্যন্ত বিস্তৃত হয়ে গেছে।
তবে এ বাজারের পরিচিত ফার্নিচার ব্যবসায়ী কামাল হোসেন জানান, ফার্নিচার ব্যবসায় এখন লাভ অনেকটা কম। গাছের দাম ও যানবাহন খরচ বেড়ে যাওয়ায় এবং শ্রমিকদের মজুরি ও আগের চেয়ে বেশি হওয়ায় ফার্নিচার ব্যবসার লাভ অনেকটা কমে গেছে। তিনি জানান, যে করেই হোক আমরা ফার্নিচার ব্যবসা ধরে রাখার চেষ্টা করছি।
যাযাদি/ এসএম