রাণীশংকৈলে টানা বৃষ্টিতে ধানের ব্যাপক ক্ষতি কৃষক-দুশ্চিন্তায়!

প্রকাশ | ২৭ অক্টোবর ২০২৪, ১৮:৪৭

রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও)প্রতিনিধি
ছবি : যায়যায়দিন

রাণীশংকৈল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্রে জানা গেছে, এ বছর উপজেলায় আমন ধানের চাষ হয়েছে ২১ হাজার ৬৫০ হেক্টর। এর মধ্যে বিভিন্ন জাতের আগাম জাতের ধানের আবাদ হয়েছে প্রায় ১০ হাজার ৪৯ হেক্টর জমিতে। রাণীশংকৈল উপজেলা জুড়ে ঘ‚র্ণিঝড় দানা’র প্রভাব পড়েছে ফসলের মাঠে। ফলে গত ৩’দিন ধরে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিসহ দমকা হাওয়ায় অনেক কৃষকের রোপা আমন ধান নুয়ে পড়েছে মাটিতে। ক্ষতির মুখে পড়েছে শীতকালীন আগাম শাকসবজিসহ বিভিন্ন ধরনের রবিশস্য।
 
উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ফসলি মাঠে গিয়ে দেখা যায়, বৃষ্টি ও ঝড়ো বাতাসের কারণে অনেক স্থানে পাকা ও আধাপাকা ধান গাছ মাটিতে নুয়ে পড়ছে। এতে পাকা আমন ধান নিয়ে ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকরা। বিশেষ করে জমিতে কেটে রাখা ধান নিয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন তারা। পাকা আমন ধান ঘরে তোলার এখনই মোক্ষম সময়। ধানগুলো ঘরে তোলা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন আমন চাষিরা। ধর্মগড় ইউনিয়নের কয়েকজন কৃষক বলেন, জীবন-জীবিকার জন্য অধিকাংশ মানুষ কৃষির ওপর নির্ভরশীল। 

চলতি রোপা আমন মৌসুমে খরায় রোপা আমন ধান চাষ করা হয়েছে। অধিকাংশ কৃষক বাড়তি খরচে সেচ দিয়ে রোপণ করেছেন এই ধানের চারা। এ অবস্থায় প্রভাব পড়েছে ঘ‚র্ণিঝড় দানা’র। গত বৃহস্পতিবার, শুক্রবার ও শনিবার তিন’দিন ধরে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিসহ বইছে দমকা হাওয়া। বৃষ্টি ও ঝড়ো বাতাসের কারণে অনেক স্থানে পাকা ও আধাপাকা ধান গাছ মাটিতে নুয়ে পড়েছে। 

অনেকেই এসব পড়ে যাওয়া ধানগাছ রক্ষা করতে ঝুঁটি বেঁধে দিচ্ছেন। 
উপজেলার ভাংবাড়ি গ্রামের কৃষক আবুল হোসেন বলেন, এবছর আমি ৪ বিঘা জমিতে আমন ধান আবাদ করেছি। প্রথমদিকে বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা ছিল। গত ৩'দিনের বৈরী আবহাওয়ার কবলে ২ বিঘা জমির ধান মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। তার কথা শেষ না হতেই নাজমুল হোসেন নামে আরেক কৃষক জানান, গতবার ধানের ভালো দাম পাননি তারা। 

এসব নিয়ে হতাশায় ছিলেন। গত বৃহস্পতিবার থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি ও দমকা বাতাসের কারণে আমার ২০ শতক জমির ধান মাটিতে নুয়ে পড়েছে।এর মধ্যে ঝড়বৃষ্টিতে অন্যান্য ফসলের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা আছে। কৃষক আমিরুল ইসালাম বলেন, বৃষ্টি ও দমকা বাতাসের কারণে ইতিমধ্যে তাঁদের অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে। আগে প্রতিবিঘা জমিতে যেখানে ২৫-৩০ মণ ধান পাওয়া যেত, সেখানে পড়ে যাওয়া জমিতে মাত্র ৪-৫ মণ ধান আসতে পারে বলে মনে করছি। 

এ বিষয়ে রাণীশংকৈল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সহিদুল ইসলাম বলেন, ঘ‚র্ণিঝড় দানা’র কারণে অনেক এলাকায় ধান গাছ নুয়ে মাটিতে পড়ে গেছে। তবে এখন আর বৃষ্টি না হলে ধানের বেশি ক্ষতি হবে না। পাশাপাশি যেসব ক্ষেতের ধান পেঁকে গেছে সেসব ধান দ্রুত কাটার জন্যও কৃষকদের নিয়ে মাঠ পর্যায়ে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

যাযাদি/ এম