চাঁদপুর সেচ প্রকল্প : এখনও জলাবদ্ধতায় অনেক এলাকা

প্রকাশ | ২৭ অক্টোবর ২০২৪, ১৩:২৫

চাঁদপুর প্রতিনিধি
ছবি: যায়যায়দিন

বন্যা ও প্লাবনের হাত থেকে চাষযোগ্য কৃষি জমি এবং বসতবাড়ি রক্ষায় নির্মাণ করা হয় চাঁদপুর সেচ প্রকল্প। বন্যামুক্ত হওয়ায় প্রকল্প অভ্যন্তরের নিচু এলাকায় গড়ে উঠে রাস্তাঘাটসহ নানা ধরনের অপরিকল্পিত অবকাঠামো। শুধু তাই নয়, পানি নিষ্কাশনের সেচ খালগুলোও রক্ষণাবেক্ষণ হচ্ছে না।

এমন পরিস্থিতিতে ভারি বৃষ্টিপাতে ভয়াবহ জলাবদ্ধতায় তলিয়ে থাকে প্রকল্পের সিংহভাগ এলাকা। ফলে চাঁদপুর ও লক্ষ্মীপুর জেলার ১শ’ কিলোমিটার বাঁধ অভ্যন্তরের এই প্রকল্পটি এখন স্থানীয়দের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে সমস্যাটি দূর করতে নানা উদ্যোগের কথা জানিয়েছেন সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

প্রবাহমান খাল। একসময় যেখানে চলাচল করতো নৌকা। কিন্তু তা এখন বদ্ধ জলাশয়। কয়েক দফা বৃষ্টিপাতে শিকার হয় এমন ভয়াবহ জলাবদ্ধতায়। আবার কোথায়ও সেচ খালগুলো পরিণত হয়েছে নর্দমায়। আর সেই খালের অংশবিশেষ ভরাট করে তৈরি করা হয়েছে রাস্তাঘাট আর নানা অবকাঠামো। 

চাঁদপুরের সদর উপজেলার রঘুনাথপুর, ফরিদগঞ্জের বড়ালি। কিংবা হাইমচর উপজেলার আলগী। এমন আরও অনেক এলাকায় সেই একই চিত্র। এতে নিয়মনীতি মানেনি কেউ-ই। বিগত বছরগুলোতে কমবেশি বৃষ্টিপাত হলেও এবারে তার চিত্র উল্টো। 

দফায় দফায় ভারি বৃষ্টিপাতে সৃষ্ট এমন জলাবদ্ধতা দূর হয়নি গত দুই মাসেও। যে কারণে নির্ধারিত সময়ের পর ধানের চারা রোপণ করেও তার সুফল মিলছে না। এতে চরম দুর্ভোগে স্থানীয় বাসিন্দাসহ কৃষকেরা। তাদের অভিযোগ, সময় মতো জলাবদ্ধতা দূর করা হলে তাদের এখন পর্যন্ত কষ্ট করতে হতো না। এরমধ্যে দুই দফায় ধানের চারা রোপণ করেও এখনও ক্ষতির মুখে তারা। 

দেখা গেছে, প্রয়োজনীয় সংস্কারের অভাব আর অবৈধ দখল এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরদারি না থাকায় সেচ সালগুলোর বেহাল দশা। যার কারণে ভারি বৃষ্টি হলে সহজেই দূর হয় না জলাবদ্ধতা। তাছাড়া অনেক খালই এখন মাছ খামারিদের দখলে। তারা নিজেদের মতো বাঁধ কিংবা প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে খালে মাছ চাষ করছেন। এতে স্বাভাবিকভাবে পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না।

এদিকে, অপরিকল্পিত অবকাঠামো নির্মাণের ফলে সৃষ্টি হয়েছে এমন জনদুর্ভোগ। তা স্বীকার করেছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্ট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী  (পওর) জহুরুল ইসলাম। 

তিনি বলেন, প্রকল্প অভ্যন্তরে পরিকল্পিতভাবে নগরায়ন করা করা হলে এর উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করা সম্ভব। সেজন্য বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। যাতে নতুন করে জলাবদ্ধতা ঠেকানো যায়।  

অন্যদিকে, বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দ্রুত সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মুহসীন উদ্দিন। 

তিনি বলেন, প্রকল্প তদারককারী পানি উন্নয়ন বোর্ডের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে বাস্তবসম্মত উদ্যোগ নেওয়া হবে।

চাঁদপুর ও লক্ষ্মীপুর জেলার ৬টি উপজেলার অংশবিশেষ নিয়ে চাঁদপুর সেচপ্রকল্প। ১শ” কিলোমিটার বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ অভ্যন্তরে এই প্রকল্পের ভূমির পরিমাণ ৫৪ হাজার হেক্টর। যার বেশির ভাগ কৃষি ও মাছ চাষে ব্যবহার হয়ে থাকে। আর পানি নিষ্কাশনের জন্য রয়েছে দুটি স্লুইস গেইট। 

যাযাদি/ এসএম