ফেনীতে শিক্ষকের বেত্রাঘাতে নিভে গেলো শিক্ষার্থীর চোখের প্রদীপ

প্রকাশ | ২৫ অক্টোবর ২০২৪, ১২:৩০

ফেনী প্রতিনিধি
ফাইল ছবি

ফেনীর দাগনভুইয়া পৌরসভার ওয়াজেরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের  শিক্ষক  তাপসের বেত্রাঘাতে চতুর্থ শ্রেণির এক ছাত্রের ডান চোখের প্রদীপ নিভে গেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে শাস্তি ও ক্ষতিপূরনের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন, শিক্ষকের হুমকি ধমকিতে তটস্হ পরিবার,  আদালতে মামলা করেছে  ক্ষতিগ্রস্তরা। 

 শিক্ষার্থীর মা হাসিনা আক্তার বলেন, গত ১৪ মে ফেনীর দাগনভূঞা  পৌরসভার  ওয়াজেরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্লাসে যান মাহেদুল হাসান। গণিতে ভুল করার অভিযোগে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক তাপস মজুমদারের ওই ছাত্রকে বেত্রাঘাত করে। পরে ছাত্রের শোর চিৎকারে স্কুলের শিক্ষক, কর্মচারী ও স্থানীয় লোকজন এগিয়ে তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে দাগনভুঞা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ফেনীতে রেফার করেন। একপর্যায়ে মাহেদুল হাসানকে চট্টগ্রামের পাহাড়তলী চক্ষু হাসপাতালে নেওয়া হয়। 


কয়েকদিন চিকিৎসা নেওয়ার পর রাজধানীর জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়।

সেখানে একমাস চিকিৎসা দেওয়ার পরে তাকে ভারতের  চেন্নাই শংকর  নেত্রালয় হাসাপাতালে  পাঠানো হয়।তারা মেডিকেল  বোর্ডের মাধ্যমে জানান  তার চোখের মনি থেকে  পানি সরে  গেছে। রাজা ছিদ্র  হযে গেছে, ভিতরে  ক্ষত রযেছে। তার চিকিৎসা   চলবে।বাকি বাম চোখে  এফেক্ট  হতে পারে। তারা হতাশ হয়ে  ফিরে আসেন। 

এ পর্যন্ত শিক্ষক সমিতি থেকে শুরু করে উপজেলা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দিলেও তারা কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি বলে অভিযোগ করেন তিনি।

আহত মাহেদুল হাসানের বাবা রেয়াজুল হক বলেন, ‘শিক্ষক তাপস মজুমদারের বেত্রাঘাতে আমার ছেলের ডান চোখ মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চিকিৎসা নিয়ে ব্যস্ত রয়েছি। আমি ওই শিক্ষকের শাস্তি চাই।

তিনি আরো জানান, তার ছেলেকে সেপ্টেম্বর অক্টোম্বর মাসে ঢাকায় কয়েক দপায়’ নেয়া হলে  ও তার আবারো  ডান চোখে  অপারেশন করে  বড় একটি বাঁশের খন্চির টুকরা বের করা হয়েছে।  এখন বাকী চোখের  অবস্থা  ভালো  নহে।   আবারো ডাক্তারের পরামর্শ  মোতাবেক  অপারেশন লাগবে। আমরা উপায়ন্তর  না দেখে  গত মাসে  ফেনীর  আদালতে মামলা করতে বাধ্য  হই।  আদালত মামলাটি  তদন্তের  প্রতিবেদন দাখিলের  জন্য  ফেনীর সিভিল সার্জন অফিসে  প্রেরন করেন। 

বক্তব্য জানতে অভিযুক্ত শিক্ষক তাপস মজুমদারকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। তার বড়ভাই  অপর একটি বিদ্যালয়ের শিক্ষক  রাজেস মজুমদার , এঘটনার কিছুই করতে পারবেনা বলে তাদের কে দেখে  নেবে বলে কতিপয়  সন্ত্রাসী  মাস্তান লেলিয়ে  তাদেরকে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে  রেখেছে  বলে আহত শিক্ষার্থীর বাবা রেয়াজুল হক জানান। বর্তমানে  তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। 

বিদ্যালয়ের প্রধান  শিক্ষক  সালাহউদ্দিন এ প্রতিনিধি কে জানান,  বিষয় টি  তদন্তের মাধ্যমে  সত্যতা প্রমাণিত হয়েছে। বিভাগীয়  মামলা হয়েছে।তার বিরুদ্ধে  অভিযোগের  ভিত্তিতে  সাসপেন্ড সহ শাস্তি হতে পারে বলে তিনি জানান। 


বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি  জসিম উদ্দিন লিটন  বলেন, বিষয়টি নিয়ে  আমরা কমিটির  সদস্যরা বসেছি সুরাহার  জন্য।  তবে সুরাহা করা সম্ভব হয়নি। শিক্ষকের বেত্রাঘাতে শিক্ষার্থীর ডান চোখ নস্ট হয়ে গেছে, এটি দুঃখ জনক ও নিন্দনীয় । 

দাগনভুঞা উপজেলার জগতপুর এলাকার ডাক্তার বাড়ির প্রবাসী রেয়াজুল হকের ছেলে মাহেদুল হাসান। আর অভিযুক্ত শিক্ষক উপজেলার রামানন্দপুর গ্রামের কামিনী মজুমদারের ছেলে।

যাযাদি/ এস