রোববার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

ব্রিজ নির্মাণের ৮ বছর পার হলেও হয়নি সংযোগ সড়ক, ভোগান্তিতে এলাকাবাসী

আ.রাজ্জাক শেখ, রূপসা (খুলনা)
  ২৪ অক্টোবর ২০২৪, ১২:১৯
ছবি : যায়যায়দিন

খালের উপর ব্রিজ নির্মাণ হলে কয়েকটি গ্রামের হাজার হাজার মানুষ বিভিন্ন সুয়োগ-সুবিধা ভোগ করতে পারবেন বলে তারা স্বপ্ন দেখে। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে সরকার দীর্ঘ ৮ বছর আগে ৫৪ লাখ টাকায় নির্মাণ করেন ব্রিজটি। ব্রিজ নির্মাণ হলেও দুই পাশের যাতায়াতের রাস্তা না থাকাই আরো ভোগান্তিতে পড়েছে এই অঞ্চলের বাসিন্দারা।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, খুলনার রূপসা উপজেলার নৈহাটি ইউনিয়নের বাগমারা গুপিয়ার খালের উপর শামসুর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পিছনে আজমলের বাড়ির পাশে নির্মাণ হয় ব্রীজ। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের ৬০ ফুট দৈর্ঘ্য ব্রীজটি নির্মাণ সম্পন্ন করার জন্য নির্মাণের প্রকল্প ব্যয় ৫৪ লাখ ৪ হাজার ৬৫০ টাকা ধরা হয়। যা ২০১৬-১৭ সালের অর্থ বছরে শেষ হয়। নির্মাণের কাজ পেয়েছিলেন মেসার্স মিজানুর রহমান টেডার্স।

তবে দীর্ঘদিনেও হয়নি ব্রীজটির দুপাশের সংযোগ সড়ক। আর এতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে নৈহাটির জাবুসা ও বাগমারা গ্রামের কয়েক হাজারো মানুষের। যে কারনে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী। মানুষের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশিত ব্রীজটি নির্মান হওয়ায় যার মাধ্যমে এলাকাবাসির অনেক দিনের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। কিন্তু ব্রীজ নির্মাণের ৮ বছর অতিক্রম হওয়ার পরও ব্রীজের এপ্রোচ রোড (দুই পাশের রাস্তা) না থাকায় সুবিধাবঞ্চিত হচ্ছেন মানুষ।

এলাকাবাসী জানান, ব্রীজ নির্মাণের ফলে বাগমারা শামসুর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়, রূপসা কলেজ ও আল আকসা মাদ্রাসা সহ আশপাশ এলাকার অল্প সময়ের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের পাশাপাশি এলাকাবাসীর স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। কিন্তু ব্রীজ নির্মাণের পর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ব্রীজের দুই পাশের রাস্তা নির্মাণ করেনি। ব্রীজের দুই পাশে রয়েছে হাজার ও বাড়ি। রাস্তা না থাকায় শিক্ষার্থীসহ কয়েক হাজার মানুষের চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। অসুস্থ রোগীদের আনা নেওয়া করতে ব্যাপক ভোগান্তির শিকার হচ্ছে বলেও জানান।

যদিও এবিষয়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ জানান, নকশা অনুযায়ী ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে।ব্রীজের রাস্তা নির্মাণের জন্য স্থানীয় বাসিন্দরা জমি না দেয়ার কারণে রাস্তার কাজ করা হয়নি। জানা যায়,

ব্রীজটি নির্মাণ শেষ হওয়ার পর প্রতিষ্ঠানটি জামানতের টাকাসহ সকল বিল উত্তোলন করেন। অসম্পূর্ণ রয়ে যায় ব্রীজের দু'পাশের এ্যপ্রোচ রোডের কাজ। এলাকার বাসিন্দা মিজানুর রহমান বলেন, ব্রীজ নির্মাণ শেষ হয়েছে ৮ বছর আগে। তবে রাস্তা নির্মাণের কোন অগ্রগতি আজও নেই। ব্রিজ নির্মাণ হলে কী হবে, রাস্তা নির্মাণ করেনি সরকার। রাস্তা না থাকায় ব্রীজে যানবাহন তো দূরের কথা মানুষ ও উঠা- নামা করতে ভোগান্তিতে পড়াতে হয় ।

যার কারণে প্রতিদিনই ঘটছে দুর্ঘটনা। অনেক মানুষের হাত-পা ভেঙেছে। রাস্তা না থাকায় অসুস্থ রোগিকে সময় মত হাসপাতালে নেওয়া সম্ভব হয় না।রাস্তাটি নির্মাণ হলে জাবুসা ও বাগমারা দুটি গ্রামের হাজারও মানুষ উপকৃত হবে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা কিছু কাজ করেছেন রাস্তায়। তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অতি জরুরিভাবে রাস্তা নির্মাণের জোর দাবি জানান। শামসুর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি ও স্থানীয় বাসিন্দা মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক বলেন, ব্রীজের রাস্তা নির্মাণে কিছুটা জটিলতা রয়েছে।মাটি না পাওয়ার কারণে রাস্তা মেরামত করা যাচ্ছে না। প্রতিদিন স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসাসহ অনেক মানুষ চলাচল করে এ রাস্তা দিয়ে।

উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বাস্তবায়ন হওয়া সম্ভব বলে তিনি জানান। অপরদিকে তৎকালীন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের স্বত্ত্বাধিকারী মিজানুর রহমান বলেন, ব্রীজের এ্যাপ্রোচ রোডের জন্য মাটি না পাওয়ার কারণে এ অবস্থা। তবে আমাদের সিডিউল যেভাবে ছিল সেইভাবে আমরা কাজ করেছি।

এ ব্যাপারে রূপসা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শেখ বোরহান উদ্দিন বলেন, আমি আসার আগে ব্রীজটি নির্মাণ করা হয়েছে।এছাড়া ব্রীজের রাস্তা নির্মাণের জন্য এলাকার কেউ মাটি না দেওয়ার কারণে আজ এ অবস্থা।আমার আগে যারা ছিলেন তারা অনেকবার সমাধানের চেষ্টা করেছেন। কিন্তু স্থানীয়রা মাটি না দেওয়ার জটিলতার কারণে সম্ভব হয়নি। আমি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে আলাপ আলোচনা করে অতি দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করব।

যাযাদি/ এসএম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে