শ্রীবরদীতে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের মিছিল
প্রকাশ | ২৩ অক্টোবর ২০২৪, ১৯:২০
যথাযথ নিয়ম না মেনে ও নিলাম কমিটিকে না জানিয়ে সরকারি গাছ নিলামে বিক্রয় করার খবর প্রকাশ করায় সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মিছিল করেছে কলেজের শিক্ষার্থীরা। ঘটনাটি ঘটেছে শ্রীবরদী সরকারি কলেজে। বুধবার দুপুরে শ্রীবরদী সরকারি কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে ঐ মিছিল করা হয়। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ভুল বুঝিয়ে অনিয়মের পক্ষে অবস্থান নেওয়ায় সচেতন মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া বিরাজ করছে। এঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে সাংবাদিক ও সুশীল সমাজ।
জানা যায়, সরকারি গাছ কাটার আইন লঙ্ঘন করে কয়েকদিন আগে গোপনে শ্রীবরদী-বকশীগঞ্জর সড়কের সরকারি কলেজের বাউন্ডারি ঘেঁষে ৩টি গাছ নিলামে স্থানীয় এক আ’লীগ নেতার কাছে বিক্রি করে দেন অধ্যক্ষ। এর মধ্যে বাউন্ডারির বাইরে সড়ক ও জনপদ বিভাগের রাস্তা ঘেঁষে ১টি বটগাছ, ১টি আমগাছ (মরা) ও কলেজ বাউন্ডারির ভিতরে ১ প্রীতিরাজ গাছ রয়েছে। গত সোমবার (২১ অক্টোবর) ক্রেতা গাছগুলো কর্তন করতে যায়। বিষয়টি জানাজানি হলে, সাংবাদিকরা তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে বেরিয়ে আসে থলের বিড়াল। এব্যাপারে জানতে চাইলে অধ্যক্ষ প্রফেসর একেএম আলিফ উল্লাহ আহসান বলেন, গাছ কাটার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর আবেদন করেছি। রেঞ্জ অফিস কর্তৃক মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। তাই নিলামে বিক্রি করে দিয়েছি। কবে নিলাম করেছেন এ প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে তিনি বলেন পরে জানাবো। শুধু আবেদন করেই গাছ কাটতে পারেন কিনা, এরকম প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, উন্নয়নের স্বার্থে গাছ কেটেছি। তবে নিলামের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ জাবের আহমেদ। তাঁর সাথে এব্যাপারে কথা হলে তিনি বলেন, গাছ কাটার জন্য কলেজের অধ্যক্ষ একটি আবেদন করেছেন। কিন্তু এখনো কাটার অনুমোদন হয়নি। যেহেতু গাছগুলো সরকারি সম্পত্তি, তাই আমি তাকে যথাযথ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে গাছ কাটতে বলেছি।
এনিয়ে নিয়ম না মেনে গাছ কর্তন ও বিক্রি করার ঘটনায় বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরই জের ধরে কলেজের স্বার্থন্বেষী মহল কৌশলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ভুল বুঝিয়ে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিয়েছেন। অবস্থান নিয়েছেন অনিয়মের পক্ষে। বুধবার দুপুরে শ্রীবরদী সরকারি কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে কলেজ থেকে একটি মিছিল বের হয়। এসময় শিক্ষার্থীরা সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে নানা আপত্তিকর স্লোগান দিতে থাকে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় ইতিমধ্যেই দুটি গাছ কর্তন করেছে ক্রেতা। অনুমোদন না নিয়েই গাছ কিভাবে কাটেন এনিয়ে প্রশ্ন সচেতনমহলের। অনেকেই বলেছেন অন্যায়কে সমর্থন করে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের দিয়ে এধরনের মিছিল কারনোর ফলে তাঁদের জীবনে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
এব্যাপারে শ্রীবরদী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর একেএম আলিফ উল্লাহ আহসান সাংবাদিকদের জানান, মিছিলের বিয়টি আমার জানা নেই। এটা সাধারণ শিক্ষার্থীরা করেছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ জাবের আহমেদ বলেন, গাছ কাটার অনুমতি, রেজুলেশন কোনটিই হয়নি। তিনি কিভাবে নিলামে বিক্রি করেছেন আমি জানিনা। এছাড়াও কর্তৃনকৃত গাছ দুইটি আমার জিম্মায় রয়েছে।
যাযাদি/এসএস