কুমিল্লার ৪ লাখ কিশোরী পাবে জরায়ুমুখ ক্যানসার প্রতিরোধ টিকা

প্রকাশ | ২৩ অক্টোবর ২০২৪, ১৯:১৮

স্টাফ রিপোর্টার কুমিল্লা
ছবি যাযাদি

কুমিল্লা জেলায় ৩লাখ ৭৯ হাজার ৬৬৭জন কিশোরীকে হিউম্যান পেপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি) টিকা দেওয়া হবে। বুধবার (২৩ অক্টোবর) বেলা ১১ টায় কুমিল্লা জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মিলনায়তনে নারীদের জরায়ুমুখ ক্যানসার প্রতিরোধে আসন্ন এইচপিভি টিকাদান ক্যাম্পেইন উপলক্ষে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিকময় সভায় এসব তথ্য জানান জেলা সিভিল সার্জন ডা. নাছিমা আকতার। আগামী ২৪ অক্টোবর হতে শুরু হয়ে ২৪ নভেম্বর একমাস এই টিকা বিনামূল্যে প্রদান করা হবে। এরপর থেকে তা টাকা দিয়ে কিনে নিতে হবে।

এসময় জেলার সার্বিক টিকাদান পরিস্থিতি তুলে ধরেন সিভিল সার্জন অফিসের মেডিক্যাল অফিসার ডা. মেহেদী হাসান।

তিনি বলেন, জেলার পাঁচ হাজার ২১৯টি স্কুল, ইপিআই অস্থায়ী টিকাদান কেন্দ্র চার হাজার ৭০৪ ও ইপিআই স্থায়ী কেন্দ্র ১৯টিতে আমরা দুই ধাপে কিশোরীদের তালিকা করেছি। একটি প্রাতিষ্ঠানিকভাবে যেমন স্কুলগামী শিক্ষার্থী। অন্যটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বহির্ভুত।

জেলার দাউদকান্দিতে দুই ধাপে ২৪ হাজার ৭৮২ জন, হোমনায় ১৩ হাজার ৫৫৩ জন, মেঘনায় ৫ হাজার ৩৩০ জন, তিতাসে ১০ হাজার ৮৯৪ জন, দেবিদ্বারে ৩২ হাজার ৬৮৩জন, মুরাদনগর ৩৭ হাজার ৬১৪জন, চান্দিনায় ২৬ হাজার ৪৬০জন, বুড়িচং ২১ হাজার ৯০৫জন, ব্রাহ্মণপাড়া ১৬ হাজার ৮৭৬জন, সদরে ১৬ হাজার ৭৮৯জন, সদর দক্ষিণে ১০ হাজার ২৪৭জন, বরুড়ায় ২৪ হাজার ৬০৭জন, লাকসামে ১৭ হাজার ১০৯জন, লালমাইয়ে ১৩ হাজার ৫২৫জন, মনোহরগঞ্জ ১৬ হাজার ৮৪৭জন, নাঙ্গলকোট ২৫ হাজার ৪৩৭ জন, চৌদ্দগ্রাম ৩২ হাজার ২২৩ জন, লাকসাম পৌরসভা ৫ হাজার ৯২৯জন, কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনে ২৬ হাজার ৮৫৭জনকে টিকা দেয়া হবে।

মেডিক্যাল অফিসার ডা. মেহেদী আরও বলেন, আগামী বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) থেকে শুরু হয়ে পরবর্তী একমাস সারা জেলায় এইচপিভি টিকাদান কর্মসূচি চলবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত পঞ্চম থেকে নবম শ্রেণির ছাত্রীরা এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বহির্ভূত ১০ থেকে ১৪ বছরবয়সী কিশোরীরা কমিউনিটি পর্যায়ে এ টিকা নিতে পারবে। টিকা পাওয়ার জন্য http://vaxepi.gov.bd/ ওয়েবসাইটে অথবা VaxEPI অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধন করতে হবে। নিবন্ধন সম্পন্নের পরে ওয়েবসাইটে টিকা গ্রহণের কেন্দ্র হিসেবে স্কুল নির্বাচন করতে হবে। এরপর টিকা কার্ড ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড করে নিয়ে সংশ্লিষ্ট স্কুলে টিকা নিতে হবে।

টিকার নিরাপত্তা ও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রশ্নে সিভিল সার্জন নাছিমা আকতার বলেন, এই টিকা সরকারিভাবে দেয়া হচ্ছে। আমাদের ভবিষ্যৎ মায়েদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করেই তা দেয়া হচ্ছে। এটি শতাধিকবার ট্রায়ালের পর গুণগতমান নিশ্চিত হয়েই দেয়া হচ্ছে। নিঃসন্দেহে এটি নিরাপদ। তাছাড়া বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন ছাড়া কোনও টিকা সরকারিভাবে দেওয়া হয় না। এই টিকার কোনও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই। আমিও একজন নারী। নিশ্চই নারীদের ক্ষতি হবে এমন কিছু আমরা আমাদের মেয়েদের জন্য দেবোনা!

তিনি আরও বলেন, সামাজিকভাবে এর প্রচার ও প্রসার প্রয়োজন। তাতে করে আমাদের সর্বোচ্চ সংখ্যক আবেদন আসবে। এবং এর প্রয়োজনীয়তাও মানুষ বুঝবে। ক্যানসার প্রতিরোধে শিক্ষক, অভিভাবক ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। এ কার্যক্রমকে বাস্তবায়িত করতে সবাইকে আন্তরিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। ইতোমধ্যে এই টিকার ব্যাপক প্রচারণা চালানো হয়েছে। সেখানে আমাদের পর্যাপ্ত লোকবল রয়েছে।

যাযাদি/এসএস