মসজিদ ফান্ডের হিসাব চাওয়ায় যুবকের ওপর হামলা, মামলা দায়ের

প্রকাশ | ২৩ অক্টোবর ২০২৪, ১৩:০৫

সাতকানিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
ছবি : যায়যায়দিন

চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় একটি মসজিদের ফান্ড থেকে টাকা উত্তোলন করে হিসাব না দেওয়ায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছ থেকে নামাজ শেষে হিসাব চাওয়ায় এক যুবকের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। ওই হামলার ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করেছেন হামলার শিকার হওয়া ভুক্তভোগী।

দায়েরকৃত মামলাটির আসামিরা হলেন- উপজেলার নলুয়া ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মরফলা গ্রামের বাসিন্দা হাজী আবদুস সালামের ছেলে মো. লোকমান (৪১) ও একই এলাকার কালা মিয়ার ছেলে মো. রিদুয়ান (২২)। এ ছাড়া এ মামলায় ১০-১২ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
 
সাম্প্রতি মামলাটি দায়ের করেন ভুক্তভোগী মোহাম্মদ নেয়াজুর রহমান (৩৮)। মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাতকানিয়া থানার উপ পরিদর্শক (নিরস্ত্র) মোহাম্মদ বেলাল।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ১ নম্বর আসামি মো. লোকমান হাকিমের পিতা হাজী আবদুস সালাম তৎকালীন নলুয়া ইউনিয়নের মরফলা শাহী জামে মসজিদের সভাপতি ছিলেন। সভাপতি পিতার প্রভাব খাটিয়ে ১ নম্বর আসামি মসজিদের ফান্ড থেকে ৪ লক্ষ টাকা উত্তোলন করে মসজিদের জন্য ২টি এসি ক্রয় করেন। যার আনুমানিক বাজার মূল্য ছিল ২ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা। ১ নম্বর আসামি বাকী টাকা মসজিদের ফান্ডে ফেরত না দেওয়ায় গত বছরের (১০ নভেম্বর) জুমার নামাজ আদায় শেষে বাদী তার কাছ থেকে মুসল্লীদের সম্মুখে বাকী টাকার হিসাব চান। এতে ১ নম্বর আসামি বাদীর উপর ক্ষিপ্ত হন। নামাজ শেষে বাদী মোহাম্মদ নেয়াজুর রহমান নিজস্ব কার চালিয়ে তার শশুর বাড়ি চন্দনাইশে যাওয়ার পথে ১ নম্বর আসামি তার দলবল নিয়ে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে রাস্তায় ব্যারিকেট দিয়ে বাদীর গাড়ি গতিরোধ করেন। এমতাবস্থায় ১ নম্বর আসামি বাদীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, 'তুই কেন মুসল্লিদের সামনে মসজিদে টাকার হিসাব চাইলে?' এ কথা বলে বাদীকে অকাথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে পকেট থেকে টিপ ছুরি বের করে হামলা চালায়। এতে বাদীর উভয় হাত কেটে যায়। পরে ২ নম্বর আসামি তার হাতে থাকা কিরিচ দিয়ে ডান হাতে কোপ দেয়। এ ছাড়াও অজ্ঞাতনামা আসামিরা তাদের হাতে থাকা লাঠিসোঁটা ও লোহার রড দিয়ে বাদীকে বেধড়ক পিঁটিয়ে গুরুতর আহত করে। এ ঘটনায় আহত বাদী দীর্ঘদিন ভারতে চিকিৎসা গ্রহণ শেষে দেশে ফিরে মামলাটি দায়ের করে করেন।

এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত মো. লোকমানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তার ব্যবহৃত মুঠোফোন নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়।

মামলার বাদী মোহাম্মদ নেয়াজুর রহমান বলেন, নামাজ শেষে মুসল্লিদের সামনে মসজিদের হিসাব চাওয়াটাই আমার অপরাধ ছিল। তার জন্য আসামিরা আমাকে মেরে রক্তাক্ত করেছে। আমি দীর্ঘদিন চিকিৎসার জন্য ভারতে ছিলাম। চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরে মামলাটি দায়ের করেছি। হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

সাতকানিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল খান বলেন, বাদীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মামলাটি রুজু করা হয়েছে। তদন্তপূর্বক দোষীদের বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

যাযাদি/ এসএম