"উদ্যোক্তা নির্ভর নতুন বাংলাদেশ গড়ি" এই মূল প্রতিপাদ্যে

আয়োজিত হলো অন্ট্রাপ্রেনিউরস ক্লাব অব বাংলাদেশের ৭১ তম মিট অ্যান্ড গ্রিট প্রোগ্রাম

প্রকাশ | ২২ অক্টোবর ২০২৪, ২০:২২

যাযাদি ডেস্ক
ছবি যাযাদি

গতকাল, ২১শে অক্টোবর ২০২৪, উদ্যোক্তাদের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক ও সহযোগিতা এবং ব্যবসায়িক সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে রাজধানীর গুলশান-বনানী এলাকার উদ্যোক্তাদের নিয়ে এক প্রাণবন্ত মিলনমেলার আয়োজন করেছে দেশের খ্যাতনামা সংগঠন অন্ট্রাপ্রেনিউরস ক্লাব অব বাংলাদেশ (ই-ক্লাব)। গুলশানের একটি অভিজাত রেস্তোরায় অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানটি উদ্যোক্তাদের মাঝে একটি অনন্য মিলনমেলায় পরিণত হয়। এই আয়োজনটির মূল দায়িত্বে ছিলেন ই-ক্লাবের কর্পোরেট এফেয়ার্স ডিরেক্টর ফারজানা ইসলাম মৌরি।

ক্লাবের প্রেসিডেন্ট প্রফেসর ড. শাহ আলম চৌধুরী তার উদ্বোধনী বক্তব্যে বলেন, "উদ্যোক্তারা নতুন উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে শুধু নিজেদের ভবিষ্যতই নয়, বরং দেশের উন্নয়নের নতুন দিগন্তও উন্মোচন করছেন। ই-ক্লাব তাদের এই প্রচেষ্টায় সহযোগিতা করতে এবং নেতৃত্ব দিতে সবসময় প্রস্তুত। আমাদের লক্ষ্য, একজন উদ্যোক্তা যেন তার স্বপ্ন পূরণের পথে সকল প্রকার সহযোগিতা পান।"

সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব রাহুল ঘোষ বলেন, "আমরা একটি এমন প্ল্যাটফর্ম গড়ে তুলতে চাই যেখানে আমাদের সদস্যরা তাদের নিজেদের অভিজ্ঞতা ও অর্জিত দক্ষতা শেয়ার করতে পারবেন। এই প্ল্যাটফর্মটি শুধু ব্যবসায়িক সাফল্যের গল্প নয়, বরং সমস্যার সমাধান, চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা এবং উদ্ভাবনী ধারণা নিয়ে আলোচনা করার সুযোগ করে দেবে।"

ভাইস প্রেসিডেন্ট ইঞ্জি: সজিবুল আল রাজীব বলেন, "উদ্যোক্তাদের মধ্যে পরিচিতি এবং যোগাযোগ বাড়ানো উচিত, যা ব্যবসায়িক সুযোগ সৃষ্টি করতে সহায়তা করে। সদস্যদের মধ্যে যত বেশি জ্ঞান, দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা শেয়ার হবে, ততই উপকৃত হবে সবাই। অন্ট্রাপ্রেনিউরস ক্লাব এই কাজটি প্রতি মাসেই আয়োজন করে থাকে।"

ক্লাবের গভর্নিং কমিটির চেয়ারম্যান কামরুল হাসান তার শুভেচ্ছা বক্তব্যে বলেন, "উদ্যোক্তারা দেশের অর্থনীতির মেরুদণ্ড। উদ্যোক্তা নির্ভর নতুন বাংলাদেশ গড়তে হলে আমাদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন উদ্যোক্তাদের জন্য সহযোগিতামূলক পরিবেশ তৈরি করা। ই-ক্লাব সেই লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছে, উদ্যোক্তাদের মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ এবং সহযোগিতা বৃদ্ধি করার মাধ্যমে আমরা একটি শক্তিশালী নেটওয়ার্ক তৈরি করছি।"

ক্লাবের ফাউন্ডার প্রেসিডেন্ট জনাব মোহাম্মদ শাহরিয়ার খান সবার উদ্দেশ্যে বলেন, "আমরা এমন একটি উদ্যোক্তা কমিউনিটি তৈরি করতে পেরেছি যেখানে উদ্যোক্তারা একে অপরকে প্রেরণা দেন, সমস্যার সমাধান করেন, নিজেদের মধ্যে ব্যবসা করেন এবং নতুন নতুন আইডিয়ার মাধ্যমে নিজেদের এগিয়ে নিয়ে যান। আমাদের লক্ষ্য হল, সদস্যদের মধ্যে সহযোগিতামূলক একটি পরিবেশ তৈরি করা যেখানে তারা নিজেদের ব্যর্থতা এবং সাফল্য উভয়ই শেয়ার করতে পারেন এবং একে অপরের থেকে শেখার সুযোগ পান। এইভাবে, আমরা উদ্যোক্তাদের আরও সক্ষম এবং দক্ষ করতে চাই যাতে তারা নিজেদের ব্যবসাকে আরও উন্নত করতে পারেন এবং দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখতে পারেন। আমাদের ক্লাবের প্রতিটি সদস্যই নিজেদের মধ্যে দায়িত্বশীলতা এবং সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে কাজ করছে।"

উক্ত প্রোগ্রামে ৫টি প্রতিষ্ঠানের সাথে ই-ক্লাবের পারস্পরিক সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর হয়, যার মাধ্যমে ই-ক্লাবের মেম্বারদের জন্য উক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো বিভিন্ন রকম সুযোগ-সুবিধা ও অফার প্রদান করবে। এছাড়াও নতুন কয়েজন ক্লাবের ফাউন্ডার মেম্বারকে সম্মাননা প্রদান করা হয়।

অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক ফারজানা ইসলাম মৌরি বলেন, "এই গুলশান বনানী মিটআপ আয়োজনের মাধ্যমে উক্ত এলাকার উদ্যোক্তাদের মাঝে নিজেদের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক আরও মজবুত করার এবং নতুন আইডিয়া ও উদ্যোগ নিয়ে আলোচনা করার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। আমি আশা করি, আগামীতে এই ধরনের প্রোগ্রামগুলো উদ্যোক্তাদের জন্য আরও বড় সুযোগ সৃষ্টি করবে এবং তাদের পথচলাকে সহজতর করবে।" তিনি এই প্রোগ্রামকে সহযোগিতা করার জন্য এবং আমন্ত্রিত সকল অতিথি ও সদস্যদেরকে ধন্যবাদ দেন।

ক্লাবের ফাউন্ডার মেম্বারগণ, নিবন্ধিত সদস্যগণ ছাড়াও উক্ত প্রোগ্রামে উপস্থিত ছিলেন ভাইস প্রেসিডেন্ট ইঞ্জি: মো: সাজিবুল আল রাজীব, দপ্তর সম্পাদক মোহাম্মদ সোলায়মান আহমেদ জিসান, জনসংযোগ সেক্রেটারি রাবেয়া খাতুন লাকি, ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স সেক্রেটারি অরূপা দত্ত সহ ক্লাবের বিভিন্ন কমিটি ও প্রকল্প পরিচালকগণ। এই মিটআপ প্রোগ্রামটির সার্বিক সঞ্চালনায় ছিলেন ই-ক্লাবের দপ্তর সম্পাদক মো: সোলায়মান আহমেদ জিসান।

অন্ট্রাপ্রেনিউরস ক্লাব অব বাংলাদেশ বেসরকারিভাবে বাংলাদেশের প্রথম এবং সর্বাধিক জনপ্রিয় একটি উদ্যোক্তা কমিউনিটি প্ল্যাটফর্ম। এখানে উদ্যোক্তারা নেটওয়ার্কিং, ট্রেনিং, মেন্টরিং, ফান্ডিং এবং কমিউনিটি ডেভেলপমেন্টের মাধ্যমে নিজস্ব নেটওয়ার্কিং ও ব্র্যান্ডিং করে থাকেন। প্রায় এক হাজার নিবন্ধিত উদ্যোক্তা এবং ৭০ হাজারের অধিক সোশ্যাল ফলোয়ারের মাধ্যমে তাদের কার্যক্রম প্রতিনিয়ত এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।

যাযাদি/এসএস