পূর্বধলায় বন্যার পানি নেমেছে, রেখে গেছে ক্ষতচিহ্ন 

প্রকাশ | ২২ অক্টোবর ২০২৪, ১৫:৪৩

পূর্বধলা (নেত্রকোণা) প্রতিনিধি
ছবি: যায়যায়দিন

নেত্রকোণার পূর্বধলায় বন্যার পানি কমে গেছে। তবে পানি কমলেও রেখে গেছে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতির চিহ্ন। ক্ষয়-ক্ষতির মধ্যে আমন ফসলের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া কাঁচা-আধা পাকা ঘর, রেড়িবাঁধ, সবজি ফসল ও ফিসারীর ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো:সাইফুল ইসলাম জানিয়েছেন সাম্প্রতিক বন্যায় সব মিলিয়ে পূর্বধলা উপজেলায় ৩৯ কোটি টাকার মত ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। 

সরেজমিনে দেখা গেছে বন্যার পানি কমে গেলেও নীচু এলাকার পানি এখনো রয়ে গেছে। বন্যার পানিতে বিস্তর মাঠের রুপা আমন ফসল পঁচে নষ্ট হয়ে গেছে। এসব পঁচে যাওয়া ধান গাছে দুঃর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। পানি দূষিত হয়ে মাছ মরে ভেসে যাচ্ছে। উপজেলার জারিয়া, উদুয়ার কান্দা, বাইঞ্জা, মেঘশিমুল, হোগলা এলাকায় দেখা গেছে বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর ফসলী মাঠ গুলোতে পঁচা ধান গাছ বিছিয়ে পড়ে আছে। 

এসব পঁচা ধান গাছের দুর্গন্ধ বাতাশে ভেসে বেড়াচ্ছে। বাইঞ্জা গ্রামের এমদাদুল ইসলাম কামাল আকন্দ, হোগলা ইউনিয়নের ভরাকান্দা গ্রামের আব্দুল মজিদ, শিবপুর গ্রামের আশিকুল ইসলাম জানান বন্যার পানিতে ব্যাপক পরিমানে ফসলী জমি তলিয়ে যায়। এখন বন্যার পানি কমে গেছে কিন্ত, আমাদের ফসলের ব্যপক ক্ষতি করে গেছে। জমির ফসল গুলো পানির নীছে থাকায় সেগুলি পঁচে গেছে। এসব পঁচা ধানগাছ থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। 

পানি দূষিত হয়ে মাছ মরে ভেসে উঠছে। এ বিষয়ে অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলামের দৃষ্টি আকর্ষ করা হলে তিনি বলেন, ধান গাছ বা যে কোন আগাছা পঁচে গেলে অ্যামেনিয়া গ্যাসের পরিমান বেড়ে যায়। যার জন্য মাছে মরন ধরতে পারে।

এই সময়ে সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। তিনি আরও জানান, বন্যায় পূর্বধলা উপজেলায় ৪৪ লাখ ৩৫ হাজার টাকার মাছের ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার অফিস থেকে জানা গেছে বন্যায় ৩২টি আধাপাকা ঘর ও ১৭০ টি কাঁচা ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। 

এছাড়া উপজেলার বেড়িবাঁধটি জারিয়া ইউনিয়নে নাটেরকোনা এলাকায় অতিরিক্ত পানি চাপে ভেঙ্গে গেছে। এতে মানুষে চলাচলে অসুবিধা হচ্ছে। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে বন্যায় উপজেলার ২হাজার একশ হেক্টর জমির রুপ আমন ফসলের ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া ২৫ হেক্টর জমির সবজি ফসল নষ্ট হয়েছে। কৃষিতে রুপা আমনে ১৩ কোটি ১৪ লক্ষ টাকা এবং  ৮১ লাখ টাকার সবজি ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। 

উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো: জুবায়ের হোসেন জানান, এসব ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ক্ষতির বিবরনী উল্লেখ করে উর্ধ্বতন মহলে পাঠানো হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: খবিরুল আহসান জানান, সাম্প্রতিক বন্যায় উপজেলায় ক্ষয়-ক্ষতির বিবরণ তোলে ধরে জেলায় অফিসে পাঠানো হয়েছে। 

ইতিমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারে মাঝে জরুরী ভিত্তিতে বিভিন্ন সহযোগিতা প্রদান করা হয়েছে। সামনে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক পরিবারের মাঝে প্রণোদনার সহযোগিতা আসলে তাও দেওয়া হবে। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধটি দ্রুত মেরামতের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অবহিত করা  হয়েছে।

যাযাদি/এআর