বৃহস্পতিবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৪, ২ কার্তিক ১৪৩১

হিলি কাস্টমসের বৈষম্যর কারণে ডিম আমদানি করতে পারছে না আমদানিকারকরা

হাকিমপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
  ১৭ অক্টোবর ২০২৪, ২০:৩৯
ছবি : যায়যায়দিন

অনুমতি থাকলেও দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ডিম আমদানি করতে পারছে না আমদানিকারকরা। কাস্টমসের বৈষম্য ও গাফিলতিকে দায়ী করছেন তারা। যেকোন নতুন পণ্য ভারত থেকে আমদানি করতে প্রতিনিয়ত নিরুৎসাহিত করে আসছেন এই কাস্টমস।

আমদানিকারকরা বলছেন এ স্থলবন্দর দিয়ে ডিম আমদানি করতে খরচ কম গুনার পাশাপাশি উত্তরাঞ্চলের বাজার গুলোতে বাড়বে ডিমের সরবরাহ। তবে কাস্টমস কর্মকর্তা বলছেন, আমদানি যোগ্য হয়ে থাকলে এই বন্দর দিয়ে ডিম আমদানি করতে পারবেন ব্যবসায়ীরা।

বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) দুপুরে হিলি বন্দর ঘুরে জানা যায়, দেশের বাজারে হঠাৎ করে ডিমের দাম অস্বাভাবিক ভাবে বেড়ে যাওয়ায় ডিম আমদানির অনুমতি দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। ডিম আমদানির অনুমতি পায় এই স্থলবন্দরের বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী। অনুমতি পত্রে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশের যেকোন স্থলবন্দর দিয়ে এসব ডিম আমদানি করতে পারবেন।

তবে হিলি কাস্টমসের বৈষম্যের কারণে এই স্থলবন্দর দিয়ে ডিম আমদানি করতে পারছেন না এখনকার আমদানিকারকরা। আলিফ র্ডাস নামের একটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ৩০ লাখ পিচ ডিম আমদানির অনুমতি পেয়েছে এই বন্দর দিয়ে।

এদিকে স্থানীয় বাজারে প্রতি পিচ ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩ টাকা দরে আর গ্রাম পর্যায়ে সেই ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪ থেকে ১৫ টাকা দরে। এতে ডিম কিনতে অনেকটাই কষ্টে পড়তে হচ্ছে মধ্যবিত্ত নিম্নবিত্ত পরিবার গুলোকে।

হিলি বন্দরে ডিম আমদানিকারক নূর-ইসলাম বলেন, এই স্থলবন্দর দিয়ে ডিম আমদানি করা গেলে অনেকটাই খরচ কম গুনতে হবে ফলে উত্তরাঞ্চলে ডিমের সরবরাহ বাড়ার পাশাপাশি কমে আসবে দাম। প্রতি ডজন ডিম ভারত থেকে আমদানি করতে খরচ হবে ০.৫৮ মার্কিন ডলার আর প্রতি পিচ ডিমে শুল্ক পরিশোধ করতে হবে প্রায় ২ টাকা। সব খরচ মিলে আমদানিকৃত এসব ডিম ১০ থেকে ১১ টাকার মধ্যে বাজারে বিক্রি করা সম্ভব হবে। কিন্তু কাস্টমসের কারণে আমি এই বন্দর দিয়ে ডিম আমদানি করতে পারছি না।

আমদানিকারক শহিদ ইলাম বলেন, হিলি কাস্টমসের কাছে আমরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছি। নতুন কোন পণ্য আমদানিতে কাস্টমস আমাদের নিরুৎসাহিত করে আসছে। যার কারণে দিন দিন বন্দরে আমদানি-রপ্তানি তলানিতে যাচ্ছে। ডিম আমদানির অনুমতি পায় হিলি স্থলবন্দরের বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী। অনুমতি পত্রে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশের যেকোন স্থলবন্দর দিয়ে এসব ডিম আমদানি করতে পারবেন। কিন্তু কাস্টমসের বৈষম্যের কারণে এই স্থলবন্দর দিয়ে ডিম আমদানি করতে পারছেন না আমরা আমদানিকারকরা।

হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানি কারক গ্রুপের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন শিল্পী বলেন, দেশের বাজারে ডিমের সংকট, যার জন্য দামও বৃদ্ধি পেয়েছে। ভারত থেকে অন্যান্য বন্দর দিয়ে দেশে ডিম আমদানি হচ্ছে। কিন্তু আমাদের এই বন্দর দিয়ে ডিম আমদানি হচ্ছে না। ডিম আমদানি হলে উত্তরাঞ্চলের বাজারে এর প্রভাব পড়বে। দাম অনেকটা কমে যাবে। তাই আমি আশা করবো সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ হিলি বন্দর দিয়ে ডিম আমদানিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

হিলি সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি ফেরদৌস রহমান বলেন, বর্তমান দেশে ডিমের সংকট রয়েছে। তাই এই বন্দরের যেকোন আমদানিকারক ডিম আমদানি করলে আমরা সিএন্ডএফ এজেন্টরা আছি দ্রুত কাস্টমসের সাথে সমন্বয় করে দেশের বিভিন্ন বাজারে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করবো।

হিলি কাস্টমসের সহকারী কমিশনার নার্গিস আক্তার জানান, ডিম যদি আমদানি যোগ্য হয়ে থাকে তাহলে আনতে পারবেন আমদানিকারকরা, সেক্ষেত্রে কিছুটা সময় দিতে হবে। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে বিষয়টি দেখবো।

যাযাদি/ এম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে