বৃহস্পতিবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৪, ২ কার্তিক ১৪৩১

বন্যায় প্লাবিত ভবদহ এলাকায় পানিবন্দি মানুষ পশুর সাথে বসবাস করছে

মণিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি
  ১৭ অক্টোবর ২০২৪, ১৯:৫৯
ছবি যাযাদি

পানিবন্দি ভবদহ বিল পাড়ের দুর্গত মানুষ রাস্তার উপর টোং ঘর বানিয়ে গবাদি পশুর সাথে মিলেমিশে এক সাথে বসবাস ও খাওয়া-দাওয়া। শৌচাগার ও টিউবওয়েল পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় বিশুদ্ধ খাবার পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। একই সাথে গো-খাদ্যেরও সংকট দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি প্রাকৃতিক কাজ সারতেও চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। এতে করে চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে ভ্থক্তভোগি মানুষ। অবশ্য উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে কিছু টিউবওয়েল, স্যানিটেশন স্থাপন করা হলেও তা চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল বলে ভূক্তভোগিদের দাবি।

সম্প্রতি ভারি বৃষ্টি ও উজানের ঢলে বাড়ি-ঘর পানি তলিয়ে যাওয়ায় জলাবদ্ধ ভবদহ বিল পাড়ের হাজারো মানুষ ঠাই নিয়েছে রাস্তার উপর। ভবদহ বিলপাড়ের কমপক্ষে তিনশ গ্রামের তিন লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছে।

সরেজমিন মণিরামপুর উপজেলার লখাইডাঙ্গা, পদ্মনাথপুর, সুজাতপুর, হাটগাছাসহ একাধিক গ্রাম ঘুরে এসব চিত্র চোখে পড়ে। ওই এলাকার অধিকাংশ বাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে। ঘরবাড়ি হারা এসব ভ্থক্তভোগিদের অনেকেই মণিরামপুর-নওয়াপাড়া সড়কের সড়কের উপর টোং ঘর বানিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। একটু অবস্থা সম্পন্ন পরিবার যাতায়াতের জন্য বাড়ির উঠানে বাশের সাঁকো আর ডিঙ্গী নৌকা বানিয়ে নিয়েছেন।

আর অস্বচ্ছল পরিবারগুলো রাস্তার উপর টোং ঘর বানিয়ে গৃহপালিত পশুর সাথে দিনাতিপাত করছে। টোং ঘরের এক পাশে থাকছে গরু-ছাগল আরেক পাশে চৌকি বানিয়ে রাত যাপন করছেন তারা। সেখানেই চলছে খাওয়া-দাওয়া। প্রাকৃতিক কাজ সারতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। একই বিশুদ্ধ খাবার পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।

হাটগাছা গ্রামের ফুগী মন্ডল, মান্দারী মন্ডল, অধীর মন্ডল, ক্ষুদেরাম বিশ্বাস, গুরুদাস মন্ডল, মালতি বালাসহ একাধিক ভূক্তভোগির সাথে কথা হয়। তারা জানান, আর কতকাল তারা এভাবে কষ্টে দিন যাপন করবেন। ভবদহ দিয়ে পানি সরে গেলে তাদের কষ্টের লাঘোব হবে। কিন্তু কেউ তাদের দিকে ফিরে তাকাচ্ছে না। এভাবে বৃষ্টি হলেই বছরের পর বছর পানিবন্দী হয়ে গরু-ছাগলের সাথে আর কত দিন একসাথে দিন কাটাবেন তারা। ।

স্থানীয় স্কুল শিক্ষক উৎপাল বিশ্বাস বলেন, ল্যাট্রিন আর খাবার পানির সংকট দেখা দেওয়ায় চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়েছেন এলাকার মানুষ।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শেখর চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, পানিবন্দী মানুষের বাঁচাতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে জোরালো দাবি জানিয়েছেন।

উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী জয়দেব দত্ত জানান, সংকট নিরসনে গেলো সপ্তাহে দুর্গত এলাকায় ১০টি টিউবওয়েল ও ৪০টি অস্থায়ী ল্যাট্রিন স্থাপনসহ ৫ হাজার বিশুদ্ধকরন ট্যাবলেট (হ্যালোজেন) বিতরন করা হয়েছে। কিন্তু এগুলো চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল বলে তিনি নিজেও জানান।

যাযাদি/এসএস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে