বৃহস্পতিবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৪, ২ কার্তিক ১৪৩১

বসতবাড়ী, মিনি গার্মেন্টস, দোকান, নগদ টাকাসহ ভস্মীভূত

গাজীপুর প্রতিনিধি
  ১৭ অক্টোবর ২০২৪, ১৭:৪৭
ছবি যাযাদি

গাজীপুরে পৃথক অগ্নিকান্ডে বসতবাড়ী, মিনি গার্মেন্টস দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। অগ্নিকান্ডে প্রায় তিন কোটি টাকার মালামাল পুড়ে যায়। বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) ভোর ৪ টায় গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ী থানার (বাইমাইল) এবং শ্রীপুর পৌরসভার কেওয়া পূর্বখন্ড এলাকায় অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। সংশ্লিষ্ট এলাকার ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তারা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ভাড়াটিয়া ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ী আব্দুর রাজ্জাক জানান, আমার ঘরে নগদ ৫০ হাজার টাকা ছিল। ওই টাকাসহ ঘরের মূল্যবান আসবাবপত্র পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। হঠাৎ আগুন লাগায় কিছুই রক্ষা করতে পারিন।

নেত্রকোনার মৃত শামসুল হকের স্ত্রী রুবিনা আক্তার বলেন, আমাদের ঘরের সমস্ত কাপড়-চোপড় এবং মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আমার একেবারেই নিঃস্ব হয়ে গেছি। আমাদের প্রত্যেকের পড়নের কাপড়ের ছাড়া আর কিছুই রইলো না।

ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের পোশাক শ্রমিক দেলোয়ার হোসেনের স্ত্রী ইয়াসমিন আক্তার বলেন, আমার ঘরে নগদ তিন লাখ টাকা এবং দুই ভরি স্বর্ণালঙ্কার ছিল। কিছু স্বর্ণালঙ্কার উদ্ধার করতে পারলেও আমার সবগুলো টাকা পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।

বাড়ির মালিক কবির হোসেন সরকার বলেন, হঠাৎ ভোর ভোর ৪ টার দিকে একটি কক্ষে অগ্নিকান্ডের সূত্রপাত হয়। মুহূর্তেই আগুন পাশের ২০টি কক্ষে ছড়িয়ে পড়ে। আগুনে ওইসব কক্ষে থাকা টিভি, ফ্রিজ, আলমারী, ওয়ারড্রপ, লেপ-তোষক, খাট, স্বার্ণলঙ্কার, হাড়িপাতিল এবং নগদ টাকাসহ মূল্যবান মালামাল পুড়ে যায়। এতে প্রায় ৬০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল আরেফিন জানান, শ্রীপুর পৌরসভার কেওয়া পূর্বখন্ড এলাকার ব্যবসায়ী কবির হোসেন সরকারের বসতবাড়ীতে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে শ্রীপুরের মাওনা ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুনে ওই বসতবাড়ীর ২০টি কক্ষ পুড়ে যায়। ওইসব কক্ষে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও আশপাশের বিভিন্ন পোশাক কারখানায় কর্মরত শ্রমিকেরা পরিবারসহ বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করতো। তদন্তের পর আগুনের সূত্রপাত ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যাবে।

অপরদিকে, গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ী থানার (বাইমাইল) এলাকার মিনি গার্মেন্টসসহ ২৫টি দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ভোর সাড়ে ৫ টার দিকে ওই এলাকার গণির আড়তে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে কোনাবাড়ী মর্ডান ফায়ার সার্ভিসের ৩টি ইউনিটের কর্মীরা প্রায় এক ঘন্টার চেষ্টা করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

আগুনে ক্ষতিগ্রস্থ দোকান মালিকরা হলেন, মিনি গার্মেন্টসের মালিক ইলিয়াস, হিট ট্রান্সফার মেশিনের দোকান মালিক রজব খান, সেলুন মালিক মিঠু, প্রিন্টিং দোকান মালিক খায়রুল আলম, হোল বাটন মেশিন দোকানের মালিক এরশাদ, গেঞ্জির গোডাউনের মালিক তোতা মিয়াসহ অন্যান্য মালিকেরা জানান আগুনে তাদের দোকানের সব মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আগুনে তাদের নগদ টাকাসহ প্রায় আড়াই কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

কোনাবাড়ী মর্ডান ফায়ারসার্ভিসের ওয়ার হাউস ইন্সপেক্টর সাইফুল ইসলাম জানান, বাইমাইল এলাকায় অগ্নিকান্ডের খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৩টি ইউনিট প্রায় এক ঘন্টার চেষ্টা করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তদন্তের পর বলা যাবে। ধারণা করা হচ্ছে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়ে থাকতে পারে। তদন্তের পর আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।

যাযাদি/এসএস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে