বৃহস্পতিবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৪, ২ কার্তিক ১৪৩১

মুছাপুর ডাকাতিয়া নদীর ভাঙন রোধে গতিপথ পরিবর্তনে ড্রেজিং কাজ শুরু

কোম্পানীগঞ্জ (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
  ১৭ অক্টোবর ২০২৪, ১৭:১০
ছবি : যায়যায়দিন

মুছাপুর ডাকাতিয়া নদী ভাঙ্গন রোধে নদী খননের মাধ্যমে নদীর গতিপথ পরিবর্তন করে ভাঙ্গন রোধের কাজ শুরু হয়েছে। ভাঙ্গান কবলিত এলাকার মানুষের মাঝে কিছুটা স্বস্তি এসেছে।

মঙ্গলবার সকালে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আনোয়ার হোসাইন পাটোয়ারী ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী হালিম সালেহী উপস্থিত থেকে এ খনন কাজ উদ্বোধন করেন।

মানুষের দাবির প্রেক্ষিতে দ্রুত সময়ের মধ্যে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মুছাপুরের নদী ভাঙন রোধে ড্রেজিং এর কাজ শুরু করা হয়েছে। এলাকাবাসী আশা করছে খননের ফলে নদীর স্রোত গতিপথ পরিবর্তন হবে এবং নদীর মাঝখানে জোয়ারের স্রোত প্রবাহমান থাকলে ভাঙ্গন রোধ সম্ভব হবে।

এর আগে প্রচন্ড পানির চাপে মুছাপুর রেগুলেটর ভেঙে যাওয়ায় জোয়ার ভাটার প্রভাবে নদীর তীরবর্তী এলাকায় ব্যাপক ভাঙন হয়। যার ফলে গত ২৬আগস্টের পর থেকে বিলীন হয়েছে ওই জনপদের বড় একটি অংশ। ড্রেজিং শুরু করায় কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে এ অঞ্চলের মানুষের মধ্যে, তবে ড্রেজিং পরবর্তী আবারও রেগুলেটর স্থাপন করে স্থায়ী সমাধানের দাবি এলাকাবাসির।

জানা গেছে, গত ২৬আগস্ট ফেনী থেকে নেমে আসা বন্যার পানির তীব্র চাপে ভেঙে নদী গর্ভে বিলিন হয় নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মুছাপুর রেগুলেটর। তার আগে বন্যার পানি দ্রুত নামার জন্য খুলে দেওয়া হয় রেগুলেটরের ২৩টি ভেন্ট (গেইট)। রেগুলেটরটি বিলীন হয়ে যাওয়ায় পর থেকে ওই অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে যায়। জোয়ার ভাটার প্রভাবে ভাঙতে শুরু কওে লোকালয়, ঘর-বাড়ি, মসজিদ, দোকান-পাট ও ফসলি জমি।

এখনও প্রতিনিয়ত বিলিন হচ্ছে আরও অনেক নতুন নতুন জায়গা। পানির স্রোতের তীব্রতা বাড়ার সাথে সাথে ফেনীর দাগনভুঁইয়া, সোনাগাজী ও নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ, কবিরহাট উপজেলার মানুষের মাঝে দেখা দেয় আতঙ্ক।

পরবর্তীতে অন্তবর্তীকালীন সরকারের পানি উন্নয়ন উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তাব্যক্তি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে নদী ভাঙন রোধে তড়িৎ ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন। তারই ধারাবাহিকতায় বুধবার দুপুওে ছোট ফেনী নদীর জনতা বাজার অংশে ড্রেজিং কাজের শুরু করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এতে স্বস্তি ফিরেছে এ নদী তীরবর্তী ৪টি উপজেলার কয়েক লাখ মানুষের মাঝে। দ্রুত সময়ের মধ্যে এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ আলী স্বপন ও মিজান চৌধুরী জানান, এ ড্রেজিং এর কাজের মাধ্যমে নদীর পানির প্রবাহ পরিবর্তনের পাশাপাশি মাঝ নদী দিয়ে পানি নামা শুরু করলে দুই পাশের আরও কয়েক লাখ মানুষের বসত ঘর রক্ষা হবে। একই সাথে ভাঙন সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য পুনঃরায় রেগুলেটর স্থাপনের দাবি তাদের। নদী ভাঙনের কবলে পড়ে এ জনপদের হাজারো পরিবার তাদের ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন। এখনও থেমে নেই ভাঙন। যাদের ঘরবাড়ি এখনো টিকে আছে তারাও আতংকে দিন কাটাচ্ছেন।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী হালিম সালেহী জানান, স্থানীয়দের দুর্ভোগের কথা বিবেচনায় রেখেই এই ড্রেজিং কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। ড্রেজিং এর মাধ্যমে নদীর পানি প্রবাহের গতিপথ পরিবর্তন হবে এবং ভাঙনের পরিমান কমে যাবে বলে আশা এ কর্মকর্তার।

তিনি বলেন, সুদূরপ্রসারী পরিকল্পার মাধ্যমে ভাঙনের স্থায়ী সমাধান করার পরিকল্পনা রয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের। প্রাথমিকভাবে আড়াই কোটি টাকা ব্যায়ে ড্রেজিং এর কাজ শুরু করা হয়েছে। এখানে ড্রেজিং মেশিন চলতে যে তেল খরচ হবে শুধু মাত্র সে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

যাযাদি/ এম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে