বুধবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৪, ১ কার্তিক ১৪৩১

বাংলাদেশও তার শির উচু করে দাঁড়াবে : ডাঃ শফিকুর রহমান

স্টাফ রিপোর্টার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
  ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ১৭:৪৩
আপডেট  : ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ২২:৫৯
ছবি : যায়যায়দিন

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডাঃ শফিকুর রহমান বলেছেন, আমরা এমন একটি দেশ চাই, যেই দেশ অন্য কোনো দেশের অধীনতা মেনে নিবেনা। পৃথিবীর অন্য ১০টা দেশ যেমন বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়ায় বাংলাদেশও তার শির উচু করে দাঁড়াবে। বিদেশে আমাদের বন্ধু থাকবে কিন্তু কোন কোনো প্রভু আমরা মেনে নিবো না। কেউ প্রভুত্ব করতে এলে জাতি তার সঠিক জবাব দিবে।

তিনি আজ মঙ্গলবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার লোকনাথ উদ্যানে (ট্যাংকেরপাড়) পৌর মুক্ত মঞ্চে জেলা জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন।

জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর মোহাম্মদ গোলাম ফারুকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডাঃ ডাঃ শফিকুর রহমান আরো বলেন, ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় থেকে গেলে গেলে পাঁচ লাখ লোককে হত্যা করা হবে। কিন্তু গণ অভুত্থানের পর পাঁচজনকেও হত্যা করা হয়নি। মব জাস্টিস নামে দুই একটি হত্যাকান্ড ঘটেছে। আমরা এর প্রতিবাদ করেছি। এরাও আওয়ামী লীগের প্রেতাত্মা ছাত্রলীগ।

এ ঘটনায় জড়িত ছয়জনের মধ্যে পাচজনই ছাত্রলীগ। তারা এখনো খুনের নেশা থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি।

জনগনকে সাবধান থাকতে হবে। তাদের অন্তরে (আওয়ামীলীগ) জ্বালাপোড়া শুরু হয়েছে। তারা অঘটন ঘটাতে চায়। আনসার কান্ড, বয়স কান্ড, বিচারিক ক্যু করতে চেয়েছে। জনগণ্য ব্যর্থ করে দিয়েছে। ইসলামী চাদর দিয়ে নতুন রূপে আর্ভিভ‚ত হয়েছে। হাতে নাতে ধরা পড়েছে। ছাত্রলীগ যুবলীগের নেতারা বিশেষ একটি ইসলামী সংগঠনের ব্যানারে কোমলামতি শিক্ষার্থীদের উস্কে দিয়ে অশান্তি সৃষ্টি করতে চাচ্ছে। বিশেষ পতাকা বহন করে। বাংলাদেশকে দুনিয়ার সামনে জঙ্গী চরমপন্থী দেশ হিসেবে পরিচয় করতে চাচ্ছে। জাতি তাদেরকে সম্মিলিতভাবে ব্যর্থ করে দিবে। এই পতাকা নিয়ে যেন দাঁড়াতে না পরে।

তিনি বলেন, জাতির অনেক প্রত্যাশা এই সরকারের কাছে। যারা ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর তারা যেন সরকারের কোথাও না থাকে। তারা সরকারকে ব্যর্থ করে দিবে। জনগনের স্বপ্ন নষ্ট করে দিবে। যারা চিহ্নিত। তাদেরকে গুরুত্বপূর্ণ জায়গা থেকে সরিয়ে দিতে হবে।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডাঃ শফিকুর রহমান আরো বলেন, দুষ্ট সিন্ডিকেট পিয়াজ ৩০০ টাকা করেছিলো। এই দুষ্ট সিন্ডিকেট কারা ছিলো। বাণিজ্য মন্ত্রী থেকে শুরু করে সমস্ত চেলাচামুন্ডারা। তারাই সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছিলো। দুর্ভাগ্যভাবে আমাদের সন্তানরা বলছে ৫ আগস্ট আমরা স্বাধীন হয়েছি। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় এখনো সেই সিন্ডিকেট ভাঙ্গা সম্ভনব হয়নি। এখনো সেই সিন্ডিকেট জাতির ঘাড়ে বসে আছে। এই সিন্ডিকেট ভেঙ্গে তছনছ করে দিতে হবে। নইলে বাংলাদেশের মানুষ তাদের হাতে আরো নির্যাতিত হবে।

তিনি বলেন,আমরা এমন একটি সমাজ গঠন করতে চাই যেখানে বিচার প্রার্থীকে বিভিন্ন ধরনের হয়রানি শিকার হতে হবে না। কোন বিচারক আসনে বসে আল্লাহকে ছাড়া কোনো রাষ্ট্র শক্তিকে পরোয়া করবে না। রাষ্ট্রের আইন ও বিবেক অনুযায়ি বিচার কার্য পরিচালনা করবে। আমরা শুনতে চাই না বিচারকরা আসনে বসে ঘুষ খায়। পত্র পত্রিকার বের করে নিয়ে আসে অমুক ম্যাজিষ্ট্রেট ছিলেন তার পাঁচটা বাড়ি রয়েছে ১০টা গাড়ি রয়েছে। এই কলঙ্কজনক কথা শুনতে চাই না। আমরা এমন একটি বিচার ব্যবস্থা চাই যেই বিচার ব্যবস্থা উঁচু নিচু কাউকে ভাববে না। বিচার প্রার্থীকে বিচার প্রার্থী হিসেবে দেখবে। কোনো বিচার প্রার্থী যদি মিথ্যা অভিযোগ নিয়ে আদালতে হাজির হয় তাহলে মিথ্যার অভিযোগে তাকে দন্ড পেতে হবে।

আবার যদি সঠিক অভিযোগ নিয়ে হাজির হয় তাকে অন্যায় ভাবে বিচার প্রভাবিত করে ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত করা হবে না।

তিনি বলেন, হাজার প্রাণের বিনিময়ে এবং হাজার হাজার মানুষের পঙ্গুত ও আহত হওয়ার মধ্য দিয়ে এই বিপ্লব সংগঠিত হয়েছে। সেসব শহীদ পরিবারের প্রতি আপনারা সম্মান প্রদর্শন করুন। পাঠ্যপুস্তকে তাদেরকে যথাযথ ভাবে ফুটিয়ে তোলার ব্যবস্থা করুন। ইতিহাস সঠিকভাবে তুলে ধরেন। প্রত্যকটি শহীদ পরিবার থেকে কমপক্ষে একজনকে সরকারি চাকরি দিন। প্রত্যকটি আহতকে তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী সরকারি চাকরিতে নিয়োগ দিতে হবে। তারা এসব নিয়োগের জন্যে ত্যাগ স্বীকার করেননি। কিন্তু তাদের প্রতি সম্মান দেখানো আমাদের কর্তব্য। এরা সরকারি চাকরিতে গেলে দেশের জন্যে জানপ্রাণ দিয়ে চাকরি করবে।

কর্মী সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন কেন্দ্রীয় কমিটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এ.টি. এম মাসুম।

জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মুহাম্মদ মুবারক হোসেনের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় মজলিশে সূরা সদস্য ও কুমিল্লা-নোয়াখালী অঞ্চল অঞ্চল টিম সদস্য মোহাম্মদ আব্দুস সাত্তার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সাবেক আমীর কাজী নজরুল ইসলাম খাদেম, সৈয়দ গোলাম সারোয়ার, সাবেক নায়েবে আমীর কাজী মো. ইয়াকুব আলী, বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্রশিবির ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সভাপতি মো. আতিকুল ইসলাম প্রমুখ।

যাযাদি/ এম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে