ধর্ষণের অভিযোগ এনে কৃষি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা

প্রকাশ | ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ১১:৪৪

বগুড়া প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি

বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণের ঘটনায় এক কৃষি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী ওই নারী। এই মামলা দায়েরের পর থেকে বিভিন্নভাবে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন এই কর্মকর্তা। এতে করে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন অভিযোগকারী।

কাহালু থানায় ছদ্মনাম (রুমকি)র দায়েরকৃত অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেছেন যে, আসামি মো. মামুনুর রশিদ  মিমো (৩৬), পিতা-মৃত খায়রুল আলম, গ্রাম: উত্তর সাহাপাড়া, থানা- শেরপুর, জেলা- বগুড়া। তিনি পাবনার চাটমোহর উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত আছেন। এই কর্মকর্তার গ্রামের বাড়ি ও আমার বাড়ি পাশাপাশি গ্রামের হওয়ার সুবাদে তিনি আমাকে প্রেমের প্রস্তাব দেন। আমি রাজি না হলে তিনি নিজের প্রাণ শেষ করে দিবে বলতে থাকে এবং একপর্যায়ে বিয়ের প্রলোভন দেখাইয়া আমাকে মিথ্যা প্রেমের জালে ফাসায়। দীর্ঘদিনের সম্পর্কের এক পর্যায়ে গত ১৩ এপ্রিল কাহালু থানাধীন জামগ্রাম ইউনিয়ন এর অন্তর্গত শান্তা গ্রামের বালিয়াদিঘী শ্মশান নামক জায়গায় বেড়ানো কথা বলে নিয়ে গিয়ে লাশ পোড়ানোর ঘরের পাশে আমাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করার চেষ্টা করে। এতে আমি বাধা দিলে মারধর করে এবং জোরপূর্বক একাধিকবার ধর্ষণ করে। বিষয়টি আমি মামলার স্বাক্ষী ১। মোছাঃ আল্পনা খাতুন ২। রাকিবুল হাসান ৩। খাদিজা খাতুন ৪। মোছাঃ সাবিনা ইয়াছমিনকে অবগত করি। সে অনুযায়ী স্বাক্ষীরা আসামীকে ডেকে নিয়ে তার কাছে শুনতে চাইলে তিনি সম্পূর্ণ বিষয়গুলো স্বীকার করে। এসময় তাকে বিয়ে করার কথা বললে তিনি তাতে অস্বীকার করে দ্রুত স্থান ত্যাগ করে চলে যায়। এরপর থেকে আমাকে বিভিন্নভাবে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে।

ঘটনা এখানেই শেষ নয়, কৃষি অফিসার মামুনুর রশিদ মিমোর বিরুদ্ধে রয়েছে আরো একাধিক মেয়েদের সাথে প্রতারণার অভিযোগ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন জেলার মেয়েদেরকে প্রেমের জালে ফাঁসিয়ে অর্থ আদায় করা ও গিফট নেওয়া ছিলো তার নেশা। এমনই অভিযোগ করেন সিলেট জেলার এক ভুক্তভোগী নারী। 

তিনি বলেন, কৃষি কর্মকর্তা মামুনুর রশিদের সাথে পরিচয় হয় তিন বছর আগে। বিয়ে করার আশ্বাস দিয়ে বিভিন্ন পার্কে দেখাও করেন তারা। মিথ্যা প্রেমের আশ্বাস দিয়ে কাটে তাদের তিনটি বছর। একপর্যায়ে আমি তার বন্ধুর মাধ্যমে জানতে পারি তার আগে স্ত্রী ছিল। বিষয়টি মামুনুরের কাছে জানতে চাইলে তিনি এরিয়ে যান। এক পর্যায়ে ভুক্তভোগী নারীকে কিছু না বলেই যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। ওই নারীর দেয়া তথ্যানুযায়ী খোজ নিয়ে দেখা যায় বগুড়ার বাগবাড়ীতে ইতিপূর্বে একটি বিয়ে করেছিল কিন্তু তার নানামুখী অনৈতিক কর্মকান্ডের জন্য ২০১৪ সালে তাদের মধ্যে ডিভোর্সে হয়ে যায়। ভুক্তভোগী ওই বলেন মামুনুর রশীদ অনেক নারীর সর্বনাশ করেছে আমি তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। 

এছাড়াও টাউট এই কর্মকর্তা মিথ্যা প্রেমের জালে ফাসিয়েছে ঢাকা জেলার আরেক ভুক্তভোগী নারীকে। ভুক্তভোগী ওই নারী জানায় নারীর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কৃষি অফিসার মামুনুর রশিদ মিমোর সঙ্গে ২ বছর আগে পরিচয় হয়। একপর্যায়ে তাদের মধ্য গভীর সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরবর্তীতে বিভিন্ন সময়ে ঢাকায় গিয়ে উক্ত নারীর সাথে সময় কাটান। পরবর্তীতে এই নারীর পরিবার মামুনুরকে বিয়ের জন্য প্রস্তাব দিলে  তিনি জানায় যে অন্যত্র বিয়ে করেছেন। ভুক্তভোগী এই নারীও মামুনের উপযুক্ত শাস্তি চায়।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে কাজে লাগিয়ে মেয়েদেরকে মিথ্যা প্রেমের জালে ফেলে তাদের সর্বস্ব লুটে নেয়াই ছিল তার নেশা। তিনি বিভিন্ন জেলার মেয়েদের সাথে প্রতারণা করে তাদের সর্বনাশ করেছেন।

এ বিষয়ে এই মামলার বাদী ছদ্মনাম (রুমকী) বলেন, মামুনুর রশীদ অনেক নারীর সর্বনাশ করেছে কিন্তু তার নানা প্রভাবে কোন নারীই অভিযোগ করতে পারেনি। আমি এই অভিযোগ দায়েরের মাধ্যমে লম্পট ধর্ষকের বিচার দাবি করছি।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত মামুনুর রশীদ মিমোর সাথে মুটোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি প্রেমের সম্পর্ক অকপটেই স্বীকার করেন। তবে ধর্ষণের বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন। তার বিরুদ্ধে আরো একাধিক নারীর অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন। বর্তমান সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকের সাথেই যোগাযোগ হয়। কিন্তু তাদের সাথে আমার অনৈতিক সম্পর্ক ছিল না।

এ বিষয়ে কাহালু থানার অফিসার ইনচার্জ জানান, অভিযোগ পেয়েছি আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।


যাযাদি/ এসএম