গৌরীপুরে বিএনসিসি’র ট্রাফিক কন্ট্রোলের ২৫ বছরপূর্তি!

প্রকাশ | ১২ অক্টোবর ২০২৪, ১৮:৩৯

গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
ছবি : যায়যায়দিন

ময়মনসিংহের গৌরীপুরে শারদীয় দুর্গোৎসবে শহরের যানজট নিরসনে বাংলাদেশ ন্যাশন্যাল ক্যাডেট (বিএনসিসি) গৌরীপুর সরকারি কলেজ কন্টিনজেন্ট ২৫বছর ধরে এ কাজটি স্বেচ্ছাশ্রমে করে আসছে। শনিবার (১২ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত হয় ‘ট্রাফিক কন্ট্রোলের ২৫বছরপূর্তি’ উৎসব। 

২০০০সনে উপজেলা প্রশাসনের আমন্ত্রণে  মো. রইছ উদ্দিন সার্জেন্টের দায়িত্বপালন কালে এ কার্যক্রম শুরু হয়। তিনি বলেন, শহরবাসীর নিরাপত্তা ভ্রমণ ও পুজারীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে সড়কের নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে বিএনসিসি’র ক্যাডেটরা পৌরবাসীর ভূয়সী প্রশংসা কুড়িয়েছেন। তৎকালীন সময়ে ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক জাফর আহমেদ চৌধুরী ও বিএনসিসি’র মহাপরিচালক বিগ্রেডিয়ার শাহ জালাল পিএসসি এ কার্যক্রমের জন্য ধন্যবাদপত্র প্রেরণ করেন। 

এবার গৌরীপুর পৌরসভার প্রশাসক ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুনন্দা সরকার প্রমা’র সভাপতিত্বে শারদীয় দুর্গোৎসবে যানবাহন চলাচলে শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য বিএনসিসিকে দায়িত্ব পালনের অনুরোধ জানিয়ে সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। 

এ সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে বিএনসিসি সরকারি কলেজ কন্টিনজেন্টের ল্যান্স কর্পোরাল মো. মোস্তাফিজুর রহমান রাব্বি, হাসানুল মামুন মাজিদ, দাস্তগীর মোহাম্মদ, ক্যাডেট তাইজুল ইসলাম, মো. আশিক, মো. নূরে আলম, অনিক মিয়া, ইমন মিয়া, ফায়িম, বিপ্লব হাসান রাব্বি, নাঈম হাসান, সাব্বির আহম্মেদ, মো. মুরসালিন, তারিকুল ইসলাম সৌরভ, মো. প্রিয়ম, রাকিব শেখ, মো. শাহিনুল হক, মো. তরিকুল ইসলাম, সাফায়েত হোসেন ও জোনাইদ হোসেন ট্রাফিক কন্ট্রোলের দায়িত্ব পালন করছেন। বিএনসিসি’র সাবেক ক্যাডেট আন্ডার অফিসার (সিইউও) আল ইমরান মুক্তা জানান, শহরবাসীর স্বস্তির নাম হলো শারদীয় দুর্গোৎসবে ‘বিএনসিসি’র কার্যক্রম। তাদের কার্যক্রমের জন্যে যানবাহন চলাচলও স্বাভাবিক থাকে, ব্যবসায়ীরাও উপকৃত হন। 

বিএনসিসি’র কার্যক্রমের সন্তোষ প্রকাশ করে উপজেলা পুজা উদযাপন কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা রতন সরকার বলেন, ওরা কাউকে ছাড় দেন না, নিয়মের বাহিরে হাঁটে না। প্রত্যেকের চমৎকার আচরণ, দায়িত্ব পালনে কঠোর পরিশ্রমী। ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ও নিয়ন্ত্রণ উপ-কমিটির আহ্বায়ক গৌরীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মির্জা মাযহারুল আনোয়ার জানান, ওরা ওদের দায়িত্ব পালনে শতভাগ সফল। 

আমি ওদের কাজে সন্তুষ্ট। রোদ ও বৃষ্টিতেও কাজ চালিয়ে যাওয়ার কঠোর পরিশ্রমী বিএনসিসির প্রত্যেক ক্যাডেট। সহকারী কমিশনার ভূমি ও পৌর প্রশাসক সুনন্দা সরকার প্রমা জানান, ওরা পুরো শহরকে ওয়ানওয়ে রোড করেছে। আমার গাড়িও আটকে দিয়েছিলো। 

এতেই বুঝা যায়, ওরা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালনের কারণেই পুজা উদযাপন কমিটি ও মন্দির কমিটির দাবি ছিলো বিএনসিসি যেনো দায়িত্ব পালন করে। সবার অনুরোধের প্রেক্ষিতে তাদেরকে এ দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। ক্যাডেট ল্যান্স কর্পোরাল মো. মোস্তফিজুর রহমান রাব্বি বলেন, আমাদের এ দায়িত্ব পালনে প্রশাসন, পুজা উদযাপন কমিটি ও সাধারণ মানুষও সহযোগিতা করছে। কাজটা করতে পেরে আমরাও উৎফুল্ল। প্রতিবছর শারদীয় দুর্গোৎসবের ৩দিন এ কার্যক্রম বিএনসিসি’র ক্যাডেটরা করে আসছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. শাকিল আহমেদ বলেন, শুক্রবার বিকেল থেকে মুষলধারে বৃষ্টি হয়েছে। সেই বৃষ্টিতে ভিজে ক্যাডেটরা ট্রাফিক কন্ট্রোল করেছে। শহরে কোথাও দীর্ঘ সময় যানজট ছিলো না। 

শনিবার সাপ্তাহিক হাটের দিনে এমনিতেই কিছু যানজট থাকে। তবে বিএনসিসি কাজ করায় শনিবার (১২ অক্টোবর) শহরে কোথাও যানজট ছিলনা বললেই চলে। তাদের কার্যক্রম  আসলেই প্রশংসার দাবি রাখে।

যাযাদি/ এম