ধর্ম যার যার অধিকার সবার: মাসুদ সাঈদী
প্রকাশ | ১২ অক্টোবর ২০২৪, ১৩:১৮ | আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০২৪, ১৩:২০
পিরোজপুরের সদর উপজেলার বিভিন্ন পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের খোঁজখবর নিয়েছেন জিয়ানগর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান, পিরোজপুর-১ আসনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মনোনীত এমপি প্রার্থী মাসুদ সাঈদী।
ছাত্র-জনতার গণবিক্ষোভের মুখে ক্ষমতা ছেড়ে ভারতে পালিয়েছেন শেখ হাসিনা।
গণ-আন্দোলনের মুখে সরকার পতনের পর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কিছুটা বিশৃঙ্খল অবস্থা তৈরি হয়েছিল। এমন নাজুক পরিস্থিতি কাজে লাগিয়ে পতিত স্বৈরাচারের দল আওয়ামী লীগ সারা দেশে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টির পাঁয়তারা করেছে।
দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে সারা দেশে অরাজকতা সৃষ্টির ষড়যন্ত্র করেছিল আওয়ামী লীগ। কোথাও কোথাও হিন্দু ঘরবাড়িতে হামলার কথাও শোনা গিয়েছিল। বিরাজমান অবস্থার প্রেক্ষিতে পিরোজপুরের সদর উপজেলার বিভিন্ন পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করলেন আল্লামা সাঈদীপুত্র মাসুদ সাঈদী।
এসময় মাসুদ সাঈদী মন্দিরের পুরোহিত ও হিন্দু ধর্মাবলম্বী সঙ্গে কথা বলে নিরাপত্তার বিষয়টি আশ্বস্ত করেন। হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ যেন কোনোরকম সন্ত্রাসী হামলার শিকার না হন, সেজন্য বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা অতন্দ্রপ্রহরী হয়ে তাদের পাশে থাকবেন বলে জানান তিনি।
মাসুদ সাঈদী বলেন, প্রত্যেক জাতির নিজস্ব ধর্মীয় সংস্কৃতি আছে। হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় উৎসব হচ্ছে এই দুর্গাপূজা। ইসলাম ধর্ম শিক্ষা দিয়েছে যার যার ধর্ম তারা সঠিকভাবে পালন করবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম দেশে সংখ্যালঘুরা হচ্ছে একটা আমানত। তারা যদি তাদের ধর্মীয় উৎসব পালন করতে কোনো বাধাপ্রাপ্ত হয় তাহলে রাসুলুল্লাহ (সা.) কেয়ামতের দিন মুসলমানদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করবেন। রাসুল (সা.) এই হাদিসের চেতনা অনুযায়ী আমরা আপনাদের খোঁজখবর নিতে এসেছি।
তিনি বলেন, শারদীয় দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে বর্তমানে কিছু মহল দেশে সম্প্রীতি বিনষ্ট করার অপচেষ্টা করছে। এছাড়াও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মিথ্যা তথ্য ও গুজব ছড়িয়ে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। আমাদের সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। বাংলাদেশে সকল নাগরিক নিজ নিজ ধর্ম আনন্দের সঙ্গে পালন করবে। এটা নাগরিক অধিকার। প্রশাসনের পাশাপাশি আপনাদের উৎসব সুন্দরভাবে উদ্যাপনের লক্ষ্যে জামায়াতে ইসলামী সারা দেশে সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করে যাচ্ছে। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের জন্য বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহযোগিতা আগামীতেও অব্যাহত থাকবে।
পূজামণ্ডপগুলোতে পুলিশ-আনসারের পাশাপাশি সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারি রয়েছে জানিয়ে সকলকে আশ্বস্ত করে মাসুদ সাঈদী বলেন, পূজামণ্ডপে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা মেনে নেওয়া হবে না। আমরা চাই, সবাই নিজ নিজ ধর্ম শান্তিপূর্ণভাবে পালন করুক। আমরা সব সময় আপনাদের পাশে আছি এবং থাকব। আপনারা যেকোনো প্রয়োজনে আমাকে পাশে পাবেন।
তিনি আরও বলেন, শুধু উৎসবের সময় নয় বরং আপনাদের সুখ-দুঃখসহ যেকোনো পরিস্থিতিতে আপনারা আমাকে ডাকলে আমি ছুটে আসব।
মাসুদ সাঈদী পিরোজপুর সদরের মণ্ডপগুলো ঘুরে ঘুরে দেখেন ও পূজা উদ্যাপন কমিটির নেতাসহ হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের নিরাপত্তার বিষয়ে খোঁজ-খবর নেন।
এসময় মাসুদ সাঈদীর সঙ্গে ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী পিরোজপুর জেলা শাখার সেক্রেটারি অধ্যক্ষ জহিরুল হক, পৌর আমীর মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক শেখ, সদর উপজেলা আমীর মাওলানা সিদ্দিকুর রহমান, সেক্রেটারি রাকিব হাসান, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খৃস্টান ঐক্য পরিষদের জিয়ানগর উপজেলা সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা বাবু স্বপন কুমার ডাকুয়া, জিয়ানগর উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট ননি গোপাল সাহা, হুলারহাট পূজামন্ডপের সভাপতি কমলেশ সিংহ, সেক্রেটারি মনমোহন রায়, নারকেলবাড়ি পূজামণ্ডপের সভাপতি সনজয় শিকদার, সেক্রেটারি স্বপন কুমার, হালদার, নগরবাড়ি সার্বজনীন পূজামণ্ডপের সভাপতি সুদিপ গাইন, সেক্রেটারি সুব্রত বৈরাগী, দক্ষিণ দিবগ্রাম পূজামণ্ডপের সভাপতি পরিমল মজুমদার, সেক্রেটারি মহাদেব ডাকুয়া, শিকদার মল্লিক বাজার পূজামণ্ডপের সভাপতি ডা. দোদুলেশ রায়, সেক্রেটারি গোপাল চন্দ্র, কদমতলা ধম্ম পূজা মণ্ডপের সভাপতি শংকর পাল, সেক্রেটারি বিমল হালদার, রাজবাড়ি সার্বজনীন পূজামণ্ডপের সভাপতি গৌর রায় চৌধুরী, সেক্রেটারি বাবুল দাসহ স্থানীয় জামায়াত শিবিরের নেতৃবৃন্দ।
যাযাদি/ এসএম