বরিশালে শেখ হাসিনার ভাই ও সাবেক ডিআইজির নামে হত্যা মামলা

প্রকাশ | ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ১১:১১

বরিশাল অফিস
সাবেক মন্ত্রী আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ

বরিশালের আগৈলঝাড়ায় সাবেক ছাত্রদল নেতা কবির হোসেন রনিকে ‘ক্রসফায়ারে’র মাধ্যমে হত্যার অভিযোগে শেখ হাসিনার ফুফাতো ভাই সাবেক মন্ত্রী আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহসহ সাবেক ডিআইজি, এসপি, পুলিশের পাঁচ কর্মকর্তা এবং অর্ধশতাধিক আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। 

মঙ্গলবার (০৮ অক্টোবর) বরিশালের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি করেছেন নিহত ছাত্রদল নেতার ছেলে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বাদী পক্ষের আইনজীবী জাহিদুল ইসলাম পান্না।  

সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোখলেচুর রহমান মামলাটি এজাহার হিসেবে গ্রহন করার জন্য আগৈলঝাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দিয়েছেন বলে বেঞ্চ সহকারী সৈয়দ আক্তারুজ্জামান জানিয়েছেন। মামলার বাদী ক্রসফায়ারে নিহত ছাত্রদল নেতা কবির হোসেন রনির ছেলে আশিকুর রহমান আসিফ (২০)।  

মামলার আসামিরা হলেন বরিশাল-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফুফাতো ভাই আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ, আগৈলঝাড়া উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম মোর্তুজা খান ও আব্দুর রইচ সেরনিয়াবাত, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু সালেহ লিটন সেরনিয়াবাত, বরিশাল রেঞ্জের সাবেক ডিআইজি মো. হুমায়ন কবির, সাবেক অতিরিক্ত ডিআইজি আকরাম হোসেন, বরিশাল জেলার সাবেক পুলিশ সুপার মো. এহসান উল্যাহ, সাবেক সহকারী পুলিশ সুপার জাহাঙ্গির মল্লিক, আগৈলঝাড়া থানার সাবেক ওসি মনিরুল ইসলাম, আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুস ছাত্তার মোল্লা, সৈয়দ আশরাফ মিয়া, মামুন কবিরাজ, অনিমেষ মÐল ও স্বপন মÐল। মামলায় অজ্ঞাত আরও ৪০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার বরাত দিয়ে বাদী পক্ষের আইনজীবী জাহিদুল ইসলাম পান্না জানান, মামলার আসামি আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ, মোর্তুজা খান, রইচ সেরনিয়াবাত ও আবুল সালেহ লিটন মোল্লাসহ আওয়ামী লীগ নেতারা গত ১৫ বছর ধরে সমগ্র জেলাকে একটি নৈরাজ্য জনপদ এবং ভয়াল উপত্যকায় পরিণত করেন। রাজনৈতিকভাবে বাদীর বাবা কবির হোসেন রনি আগৈলঝাড়া ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক ছিলেন। মামলায় উল্লেখিত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে বাদীর বাবাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের প্ররোচনায় পুলিশ কর্মকর্তারা ২০১৫ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি ছাত্রদল নেতা রনিকে ঢাকার নবীনগর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাকে অমানুষিক নির্যাতন করে। ২০১৫ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি রাত আড়াইটায় আগৈলঝাড়া উপজেলার বাইপাস ব্রিজের পশ্চিম পাশে রাস্তায় রনিকে গুলি করে হত্যা করেন। পরে সব আসামিরা বিষয়টি একযোগে ক্রসফায়ার ও এনকাউন্টার নামে প্রচারণা চালায়। তখন আসামিদের ভয়ে মামলা করতে সাহস পায়নি তার পরিবার। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পরিপ্রেক্ষিতে নিজের নিরাপত্তা সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে আদালতে মামলা করেন বাদী। মামলায় বাদী আরও উল্লেখ করেন প্রধান আসামি আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ ১৯৭৪ সালে বরিশাল বিএম কলেজের ছাত্র নজরুল, সদরুল ও সমরেশকে রাতের আধারে গুন্ডাবাহিনী দিয়ে খুন করেছেন।

যাযাদি/ এসএম