কেক কেটে পান পিয়াসিরা দোকানীকে বিদায় সংবর্ধনা জানালেন

প্রকাশ | ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ২২:২২

গৌরীপুর
ময়মনসিংহ
বিদায় সংবর্ধনা
ছবি-যায়যায়দিন

ময়মনসিংহের গৌরীপুর পৌর শহরের জালাল হোটেল এন্ড রেস্টেুরেন্টের বারান্দার এক কোনের অংশ ভাড়া নিয়ে ২০০৯ সনে পান বিক্রি শুরু করেন আব্দুস সালাম। একাধারে ওই বারান্দাতেই পান বিক্রি করে কাটিয়ে দেন দীর্ঘ ১৫ বছর। ইতোমধ্যে  তিনি পেশা বদল করার সিদ্ধান্ত নিয়ে নিজ বাড়িতে মুরগির খামার করার উদ্যোগ গ্রহন করেছেন।

সোমবার (৭ অক্টোবর) উল্লেখিত দোকানে শেষবারের মতো পান বিক্রি করে পান ব্যবসা ছাড়লেন  আব্দুস সালাম। পান দোকানির শেষ দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে জালাল হোটেল, হারুন টি হাউজ ও পান পিয়াসীগন পান দোকানী আব্দুস ছালামের বিদায় সংবর্ধনার আয়োজন করে।

ওইদিন সন্ধ্যায় জালাল হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্টে কেক কেটে, মিষ্টিমুখ ও উপহার দিয়ে পান দোকানী আব্দুস সালামকে  বিদায় সংবর্ধনা  জানান তারা। পরে সংক্ষিপ্ত পরিসরে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় জালাল হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্টের পরিচালক এসএম জলিল বলেন, সালাম ভাই আমার রেস্টুরেন্টের বারান্দার একাংশ ভাড়া নিয়ে পান বিক্রি করতো। পেশা বদল করার কারণে তিনি আজ শেষবারের মতো দোকান খুলেছেন। তার বিদায় ক্ষনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে আমরা কেক কাটা ও মিষ্টিমুখের আয়োজন করেছি।

ইসলামাবাদ সিনিয়র মাদরাসার উপাধ্যক্ষ এমদাদুল হক বলেন, বাজারে অনেক পান দোকান থাকলেও সালাম ভাইয়ের পান ছিল অন্যরকম স্বাদের। আমি ১৫ বছর ধরে তার দোকান থেকে পান খেয়ে আসছি। আজ শেষবারের মতো তার দোকানের পান খেলাম। এক্ষেত্রে পান পিয়াসীরা সালাম ভাইয়ের হাতের সুস্বাধু  পান আর খেতে পারবে না।

গৌরীপুর পাবলিক কলেজের অধ্যক্ষ শফিকুল ইসলাম মিন্টু বলেন, সালাম ভাই ছিলেন সৎ ও নিষ্টাবান পান ব্যবাসায়ী।  তিনি বাজারের সেরা পান, সুপারী ও সুগন্ধী রকমারী মসলায়  মিষ্টি পান খিলি বিক্রি করতেন। যা এখন আর কেউ খেতে পারবে না। পান দোকানি আব্দুস সালাম বলেন, আমি দেখেছি সরকারি- বেসরকারি অফিসের বড় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বদলি হলে বিদায় সংবর্ধনা দেয়া হয়। কিন্ত আমার মত ক্ষুদ্র খিলি পান ব্যবসায়ীকে যেভাবে গ্রাহক ও দোকান মালিক বিদায় সংবর্ধনা দিয়েছে,  তা আমার জীবনে স্মরনীয় হয়ে থাকবে। এই আনন্দের জন্য আমি আমার দোকানের পান গ্রাহকদের সব বকেয়া খুশি হয়ে মওকুফ করে দিয়েছি। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন। আমি যেন নতুন ব্যবসায় সফল হতে পারি। আলোচনা সভায় অন্যান্যদের মাঝে অংশ নেন গৌরীপুর গণপাঠাগারের নির্বাহী পরিচালক আমিরুল মোমেনীন, ভুটিয়ারকোনা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ গোলাম মোহাম্মদ, সাংবাদিক রইছ উদ্দিন, হারুন টি হাউজের পরিচালক মো. হারুন মিয়া, পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক বিজন চন্দ্র সরকার প্রমুখ।

যাযাদি/ এস