শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ২০ আশ্বিন ১৪৩১

কেরানীগঞ্জে মাস্টার মাইন্ড মোতাহের গ্রেফতার

কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি
  ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১৪:১৫
ছবি : যায়যায়দিন

কক্সবাজার রামুর আলোচিত নুরুল আলম ছিদ্দিকী (৪৫) হত্যাকান্ডের মাস্টার মাইন্ড মোতাহের’কে ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)-১০। জমি সংক্রান্ত দীর্ঘদিনের বিরোধ ও ফুলনীরচর স্কীম মৌসুমে ভিকটিম নুরুল আলম সঙ্গে নির্বাচনে পরাজিত হয়ে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন মোতাহের বাহিনী।

শুক্রবার (৪ অক্টোবর) দুপুরে র‌্যাব-১০ অ্যাডিশনাল ডিআইজি অধিনায়ক মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, কক্সবাজার রামু বাইপাসস্থ নাহার পেট্রোল পাম্প সংলগ্ন এন. আমিন প্লাজায় নুরুল আলম ছিদ্দিকী রাশেদ তার স্ত্রী-সন্তানসহ বসবাস করে আসছিলেন। ভিকটিম নুরুল আলম ছিদ্দিকী আসামি মোতাহের হোসেনের সঙ্গে জমি-জমা নিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ বিরোধ ছিলো। আসামি মোতাহের বিগত ফুলনীরচর স্কীম মৌসুমে ভিকটিম নুরুল আলম সঙ্গে নির্বাচন করে পরাজিত হয়। নির্বাচনে জয়লাভের পর ভিকটিম নুরুল আলম কৃষকদের সুবিধা হয় এরকম কিছু সিদ্ধান্ত গ্রহন করে যাতে কৃষকের লাভ হয়।

এতে করে আসামি মোতাহের ভিকটিম নুরুল আলমের উপর আরও ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। তিনি জানান, গত ৩১ আগস্ট দুপুর সাড়ে ৩ টার দিকে ভিকটিম ফরিদুল আলমের বাড়ির সামনে জনসাধারনের চলাচলের রাস্তায় পৌঁছামাত্র পূর্ব হতে ওৎ পেতে থাকা আসামি মোতাহের তার ১৫/২০ জন সহযোগী আসামিরা চাইনিজ কুড়াল, রাম-দা, দুই ধারার লম্বা ছুরি, সুইচ গিয়ার, ধারালো দা ও এসএস পাইপ দিয়ে এলোপাথারি আক্রমন শুরু করে। এসময় আসামি মোতাহের ধারালো দা দ্বারা ভিকটিম নুরুল আলমের পায়ে আঘাত করে পা গোড়ালি থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন করে ফেলে। ভিকটিমের ডাকচিৎকারে আসে পাশের লোকজন এগিয়ে আসলে মোতাহেরসহ কয়েকজন আহত করে আসামিরা অস্ত্র-সস্ত্র সহকারে মামলা মোকদ্দমা না করার হুমকি ধমকি প্রদর্শন করে ঘটনান্থল ত্যাগ করে। পরবর্তীতে উপস্থিত লোকজন ভিকটিম নুরুল আলমকে উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

অধিনায়ক মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন জানান, ঘটনার পর মৃত নুরুল আলমের ভাই সাইফুর রহমান ওরফে সুজন তার পরিবারের সাথে পরামর্শ করে কক্সবাজার রামু থানায় আসামি মোতাহের হোসেনসহ ১৪ জন আসামি এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৬/৭ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। ইতোমধ্যে হত্যাকান্ডের ঘটনায় বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও ইলেক্ট্রনিক প্রিন্ট মিডিয়ায় গুরুত্বসহকারে প্রকাশ করায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। ঘটনাটি জানতে পেরে র‌্যাব-১০'র একটি আভিযানিক দল উক্ত চাঞ্চল্যকর হত্যাকান্ডে জড়িত আসামিদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি ও ছায়া তদন্ত শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ৩ অক্টোবর, র‌্যাবের আভিযানিক দল তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় এবং র‌্যাব-১৫'র সহযোগীতায় ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার হাসনাবাদ এলাকায় একটি যৌথ অভিযান পরিচালনা করে। নুরুল আলম ছিদ্দিকী হত্যাকান্ডের মাস্টার মাইন্ড মোতাহেরকে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত মোতাহের হত্যাকান্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ও মাস্টার মাইন্ড বলে স্বীকার করেছে। গ্রেফতারকৃত আসামিকে সংশ্লিষ্ট থানায় স্থানান্তর করা হয়েছে।

এদিকে নিহত নুরুল আলমের ছোট ভাই সাইফুল ইসলাম সুজন জানান, তার ভাই এলাকায় নানান অপরাধ, অপকর্মের বিরুদ্ধে সবসময় সোচ্চার ছিল, যার কারণে তার এই কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমার ভাইকে এ মোতাহারসহ তার সহযোগিতারা নির্মমভাবে হত্যা করেছে তাদের প্রত্যেকের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি কামনা করছি। মোতাহার গ্রেফতারের পূর্বে মামলা উঠাইয়া নেওয়া ও মামলার তদবির না করার জন্য এবং স্বাক্ষীদের ঘরে ঘরে গিয়ে স্বাক্ষ্য না দেওয়ার জন্য হুমকি ও ভয় ভীতি প্রদান করতো। স্বাক্ষীরা যদি স্বাক্ষ্য দেয় তাদের বাড়িঘরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেবে এবং তাদের সন্তানদের ধরিয়া নিয়ে মুক্তিপণ আদায়সহ হত্যা করার হুমকি ধমকি অব্যাহত রেখেছিলো এ মোতাহার।

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে