বৃহস্পতিবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৪, ১৯ আশ্বিন ১৪৩১

বইয়ের প্রতি আগ্রহ বাড়াতে বিদ্যালয়ে ইউএনও'র নান্দনিক লাইব্রেরি স্থাপন

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
  ০৩ অক্টোবর ২০২৪, ১৬:০৯
ছবি যাযাদি

একসময় ছাত্র-ছাত্রীদের সময় কাটতো বই পড়ে। কিন্তু এখন কার ছাত্র-ছাত্রীদের সময় কাটে মোবাইল দেখে। এতে বেড়েছে নানা অনৈতিক ও অসামাজিক কাজের সংখ্যা। সমাজে দেখা দিয়েছে বিশৃঙ্খলা। দেশের নামকরা বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতেও ঘটছে নানান অপ্রীতিকর ঘটনা। যা কারোই কাম্য ছিলোনা।

তাই শিক্ষার্থীদের বইয়ের প্রতি আগ্রহ বাড়াতে ও সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে এবং মোবাইল বিমুখ রাখতে ব্যতিক্রমি উদ্যোগ নিয়েছে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুর রহমান। সম্প্রতি শিক্ষার্থীদের বইয়ের প্রতি আগ্রহ বাড়াতে সদর উপজেলার পাঁচটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অত্যাধুনিক মানসম্পন্ন ওডেন ফ্লোর লাইব্ররি স্থাপন করেন তিনি। আধুনিক ও নান্দনিক ডেকোরেশন সমৃদ্ধ লাইব্রেরি পেয়ে খুশি শিক্ষার্থীরাও।

জানা গেছে, লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ২১টি ইউনিয়নের ২১টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে লাইব্রেরি স্থাপনের উদ্যোগ নেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুর রহমান। উদ্যোগের শুরুতে পাঁচটি বিদ্যালয়ে স্থাপন করা হয়েছে পাঁচটি নান্দনিক লাইব্রেরি।

লাইব্রেরি স্থাপন করা প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- ভবানীগঞ্জ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়, পালপাড়া ডিএম উচ্চ বিদ্যালয়, দালাল বাজার ফাতেমা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, নুরুল্যাপুর আনজুমান আরা উচ্চ বিদ্যালয় ও প্রতাপগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়।

লাইব্রেরি গুলোতে ইতিমধ্যে বই সরবরাহ করা হয়েছে। এরমধ্যে স্থান পেয়েছে রাজনীতি, সমাজনীতি, দর্শন, উপন্যাস, গল্প, কবিতা, এশিয়ান ইতিহাস, প্রখ্যাত ব্যক্তিদের জীবনী ও আত্ম উন্নয়নমূলক বই। লাইব্রেরি স্থাপন করা বিদ্যালয় গুলোর শিক্ষার্থীরা বলেন, বই মানুষের প্রকৃত বন্ধু। কিন্তু বর্তমানে আমরা বেশি মোবাইলমুখী হওয়ায় বই থেকে দূরে সরে গেছি। এ লাইব্রেরি আমাদের বইমুখী করবে। লাইব্রেরি গুলো থেকে আমরা জ্ঞানের পরিধি আরও বেশি সমৃদ্ধ করতে পারবো।

প্রতাপগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তাবাসসুম, হাবিবা, রিপাত চৌধুরী ও সানি বলেন, আগে মধ্যাহ্ন বিরতিতে ও অন্যান্য সময়ে মোবাইল দেখে বা গল্প করে আমাদের সময় কাটতো। ইউএনও স্যার আমাদের বিদ্যালয়ে নান্দনিক লাইব্রেরি করে দিয়েছে। তাই এখন বই পড়ে আমারা সময় কাটাবো। এতে আমরা অসামাজিক কার্যকলাপ থেকেও মুক্ত থাকতে পারবো।

প্রতাপগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, এটি একটি মহৎউদ্যোগ। প্রত্যেকটি স্কুলেই লাইব্রেরি প্রয়োজন রয়েছে। ছাত্র-ছাত্রীরা মোবাইলের প্রতি যেভাবে আশক্ত হয়ে পড়ছে বিদ্যালয়ে লাইব্রেরি থাকলে সেখান থেকে বের হয়ে আসতে পারবে। তাছাড়া লাইব্রেরি থাকলে শিক্ষার্থীদের জ্ঞানের পরিধিও বাড়বে। লাইব্রেরি স্থাপনের এ উদ্যোগকে আমরা সাধুবাদ জানাই। সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুর রহমান বলেন, বর্তমান প্রজন্মের শিক্ষার্থীরা মোবাইলমুখী হয়ে পড়েছে। এর অন্যতম কারন হচ্ছে প্রতিষ্ঠানগুলোতে ভালো মানের বইও নেই, লাইব্রেরিও নেই। তাই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি সদর উপজেলার ২১টি ইউনিয়নের ২১টি বড় প্রতিষ্ঠানে লাইব্রেরি স্থাপন করবো। তারই ধারাবাহিকতায় পাঁচটি বিদ্যালয়ে লাইব্রেরি স্থাপন করেছি। ইতিমধ্যে লাইব্রেরি গুলোতে বইও সরবরাহ করা হয়েছে। আশাকরি সেই বই পড়লে তাদের পড়ার প্রতি আগ্রহ তৈরি হবে এবং জ্ঞানের পরিধিও বাড়বে।

তিনি আরও বলেন, আমি দেখেছি এবিষয়ে শিক্ষার্থীদেরও আগ্রহ আছে। অচিরেই অন্য প্রতিষ্ঠান গুলোতেও লাইব্রেরি স্থাপন করা হবে।

আমার লক্ষ্য একটাই, মোবাইল আসক্তি থেকে বের হয়ে সুনাগরিক হিসেবে যেন ছাত্রছাত্রীরা গড়ে উঠে।

যাযাদি/এসএস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে