রোববার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৪ আশ্বিন ১৪৩১

সালিশের কথা বলে ইউপি সদস্যকে আটকে রাখার পর থানায় সোপর্দ!

শ্রীপুর(গাজীপুর) প্রতিনিধি
  ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৯:১৯
ছবি যাযাদি

সালিশের কথা বলে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে আটকে রাখার পর গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বরমী ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ড সদস্য মারুফ শেখ মুক্তারকে পুলিশে দিয়েছে লোকজন ।

রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলের দিকে তাকে পুলিশ হেফাজতে রাখার কথা নিশ্চিত করেছেন শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মন্ডল।

গত শনিবার রাতে তাকে লাকচতল গ্রাম থেকে সালিশের কথা বলে ধরে নিয়ে আটকের পর থানায় সোপর্দ করা হয়। মারুফ শেখ মুক্তার (৪০) ওই ওই ইউনিয়নের ঠাকুরতলা গ্রামের বারেক মিয়ার ছেলে। তিনি বরমী ইউনিয়ন শ্রমিকলীগের আহবায়ক।

স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, জনপ্রতিনিধি হলেও আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলেন মারুফ শেখ মুক্তার । সম্প্রতি হোয়াটসঅ্যাপে স্থানীয় এক একজনকে একটি মেসেজ দেওয়াকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে বিরোধ আরো বেশি দানা বাঁধে। এর জেরে শনিবার রাতে শালিসি বৈঠকের কথা বলে বাড়ির পাশের একটি মসজিদের সামনে থেকে মারুফ শেখকে ধরে নিয়ে যায় ১০ থেকে ১৫ জনের একটি দল। এরপর তাকে প্রথমে কাওরাইদের একটি এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরে রাতেই শ্রীপুর থানা পুলিশের কাছে তুলে দেয় তাঁরা।

স্থানীয় লোকজনের ভাষ্য, আওয়ামী লীগের রাজনীতি করা হয় সরকার পতনের পর থেকে মারুফ শেখ মুক্তার চাপে ছিলেন। তিনি ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য হলেও দৈনন্দিন দাপ্তরিক কাজগুলো করতে পারছিলেন না। বিভিন্ন সময় তাকে বিএনপির স্থানীয় নেতারা হুমকিও দিচ্ছিল। সর্বশেষ শনিবার রাতে ফোন করে বাড়ির বাইরে বের করে এনে তুলে নিয়ে যায়।

মারুফ শেখ মুক্তারের বোন রওশন আরা বলেন,' গভীর রাতে দরকারি শালিস আছে বলে ফোন করে জরুরি বের হতে বলা হয় মুক্তারকে। সকালে শালিস করবে বলে জানানো হলেও এক প্রকার চাপ দিয়ে তাঁকে ডেকে নেওয়া হয়। এরপর তাকে কাওরাইদ এলাকায় একটি বাড়িতে আটকে রেখে মারধর করা হয়। একপর্যায়ে তাকে পুলিশে দেওয়া হয়। কারা এমন ঘটনা করেছে থানার ভেতরে থাকায় বিস্তারিত সে বলেনি। এখনো থানায় আছি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসলে তাঁকে ছাড়া হবে বলে জানানো হয়েছে। বাড়িতে যাওয়ার পর বিস্তারিত ঘটনা জেনে পরে বলতে পারবো।'

এ বিষয়ে বরমী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হোসেন বলেন,' রোববার সকালে ওই মেম্বারের স্বজনরা আমাকে ফোন করে জানিয়েছেন। শুনেছি থানায় আছে। খোঁজ নিয়ে বিস্তারিত পরে জানাতে পারবো।'

এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান ফকির বলেন,' মেম্বারকে ধরে নিয়ে যাওয়ার বিষয় সম্পর্কে আমার জানা নেই। এছাড়াও গত ২দিন ধরে শারীরিক অসুস্থতার কারনে আমি বাড়িতেই আছি।'

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ব্যারিস্টার সজীব আহমেদ বলেন,' কয়েকজন লোকের অভিযোগের ভিত্তিতে ওই মেম্বার থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে বলে ওসি আমাকে জানিয়েছেন। অভিযোগ ক্ষতিয়ে দেখে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছি।'

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) জয়নাল আবেদীন যায়যায়দিনকে বলেন,'কয়েকজন লোক তাকে থানায় দিয়ে গেছে। আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করছি। তদন্ত করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। '

যাযাদি/এসএস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে