রোববার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৪ আশ্বিন ১৪৩১

প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে শিক্ষার্থীদের ক্লাস বর্জন

স্টাফ রিপোর্টার, কুমিল্লা
  ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৬:৫০
ছবি : যায়যায়দিন

কুমিল্লা মডার্ণ হাইস্কুলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরোধীতাকারী প্রধান শিক্ষক এ কে এম আকতার হোসেন, সহকারী প্রধান শিক্ষক রাসেল উদ্দিন মজুমদার, আবুল কাসেমসহ ৩ শিক্ষকের অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করে তাদের অপসারণের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলছে।

রোববার শিক্ষার্থীরা স্কুলের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে কোনো শিক্ষক-কর্মচারীকে স্কুলে প্রবেশ করতে দেয়নি। এসময় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে তাদের কর্মসূচি পালন করে। এতে প্রায় ৮ হাজার শিক্ষার্থীর এ প্রতিষ্ঠানটিতে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও তাদের অভিযোগে জানা গেছে, কুমিল্লা সদর আসনের সাবেক এমপির অনুসারী এ কে এম আকতার হোসেন ২০১৯ সালে স্কুলটিতে প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ লাভ করেন।

পরবর্তীতে ক্ষমতার দাপট খাটিয়ে স্কুলটির সহকারী প্রধান শিক্ষক (দিবা) রাসেল উদ্দিন মজুমদার ও সহকারী প্রধান শিক্ষক (প্রভাতী) আবুল কাসেমকে সাথে নিয়ে নানান অনিয়ম দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে সাধারণ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের হয়রানী করে আসছিলেন।

অভিযোগে বলা হয়, এ সময়ে তারা ভর্তি, কোচিং, ক্লাসপার্টি, প্রশসংসাপত্র, ট্রান্সফার সার্টিফিকেট, বাণিজ্য, নন-এমপিও শিক্ষকদের কাগজপত্র সরিয়ে অবৈধ সুবিধা লাভ, শিক্ষকদের বেতনবৈষম্য, সিলেবাস, ডায়েরি, ছাত্রব্যাচ বাবদ টাকা উত্তোলন, আনন্দ ভ্রমণ, স্কুলের অর্ধবার্ষিক, প্রাক্নির্বাচনি, নির্বাচনি, মডেল টেস্ট ও বার্ষিকসহ বিভিন্ন পরীক্ষার উত্তোলনকৃত টাকা শিক্ষকদের মাঝে নামমাত্র বিতরণ করে আত্মসাৎ বার্ষিক ক্রীড়া অনুষ্ঠানের নামে ভুয়া-বিল ভাউচারে অর্থ আত্মসাৎ এবং স্কুলের পারফরমেন্স বেজডগ্রান্ডস ফর সেকেন্ডারি ইন্সটিটিউশন্সের (পিবিজিএসআই) টাকাসহ স্কুল তহবিলের মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নেন। এরই মধ্যে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ছাত্র আন্দোলনের মুখে ওই ৩ শিক্ষক গতকাল রোববার পর্যন্ত স্কুলে অনুপস্থিত রয়েছেন।

এদিকে এসব অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত দাবি করে ক্ষুব্দ শিক্ষার্থীরা স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও কুমিল্লা জেলা প্রশাসকের নিকট গত ১২ সেপ্টেম্বর ১৬ দফা অভিযোগ দাখিল করে।

এসব অভিযোগ তদন্তের জন্য গত ২২ সেপ্টেম্বর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৩ সদস্যের কমিটি করা হয়। ক্ষুব্দ শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, অভিযুক্ত ৩ শিক্ষকের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় রোববার তারা স্কুলটির প্রধান ফটকে তালা লাগিয়ে ক্লাস বর্জন করে।

কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়ছার বলেন, এসব বিষয়ে ৩ সদস্যের উচ্চপর্যায়ের কমিটি তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

তিনি ওই কমিটিকে ছাত্র-শিক্ষকসহ সংশ্লিষ্টদের সহযোগীতার আহবান জানিয়ে বলেন, কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর দোষীদের বিরুদ্ধে বিধিমোতাবেক কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। ওই পর্যন্ত ক্লাস বর্জন না করে ছাত্র-শিক্ষকদের ধৈর্য ধারনের আহবান জানান।

যাযাদি/ এম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে