সারিয়াকান্দিতে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন   

প্রকাশ | ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৪:৫৫

সারিয়াকান্দি (বগুড়া) প্রতিনিধি
ছবি : যায়যায়দিন

বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার  কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন পরিষদের সদস্যসহ এলাকাবাসী। কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল শনিবার ২৮ (সেপ্টেম্বর) পালন করা হয়।

এর আগে ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম (সুজন) অপসারণের দাবিতে ইউপি সদস্যরা জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর স্মারকলিপি দেন।

গত শনিবার সকাল ১১টায় কুতুবপুর ইউনিয়ন  পরিষদ চত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়। কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৮ জন সদস্য ও এলাকাবাসীর ব্যানারে কুতুবপুর ইউপি চেয়ারম্যানের অপসারণের দাবিতে ঘণ্টা ব্যাপী মানব বন্ধন করা হয়। 

কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৮ জন সদস্যের দেওয়া ওই স্মারকলিপিতে অভিযোগ করা হয়, চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম (সুজন) স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি, অর্থ আত্মসাৎ ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে মানুষের বিপক্ষে দাঁড়িয়েছেন। সরকারি নিয়মকানুন না মেনে নিজের ইচ্ছেমতো পরিষদ চালাচ্ছেন। 

ইউনিয়ন পরিষদের নিয়মিত কোনও সভা করেনা চেয়ারম্যান যদি কখনও ২/১ সভার নোটিশ হয় কিন্ত সেখানে চেয়ারম্যান উপস্থিত থাকেনা। ইউনিয়ন পরিষদে গরীব দুস্হদের জন্য ২০২৩/২৪ অর্থবছরে উপজেলা থেকে ৪০ টি মাতৃকালিন ভাতা বরাদ্দ হয়। মাতৃকালিন ভাতার বিষয়টি মেম্বারদেরকে না জানিয়ে একাই তালিকা প্রস্তুত করে মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার অফিসে জমা দিয়ে অর্থ আত্মসাত করেন।

চেয়ারম্যান একটি নিজস্ব দোকান আছে সেখানে ভাতা ভোগীদের নিয়ে গিয়ে আইডি কার্ডের ফটোকপি,ছবি,ফিঙ্গার দিয়ে একটি সিম ক্রয় করে এবং নিজর ইচ্ছেমত পিন নিয়ে ৮/১০ মাস পরে প্রথম পর্যায়ের টাকা তুলে নিয়ে ভাতা ভোগীদের কাছে সিমটি দিয়ে দেয়। ২০২৩/২০২৪ অর্থ বছরে বিশেষ বরাদ্দের ১০,০০,০০০(দশ লক্ষ) টাকার কাজ এলেও আনুমানিক ১,০০,০০০ (এক লক্ষ) টাকার কাজ সে করেনি। সমস্ত টাকা সে আত্মাসাৎ করেছে।

হতদরিদ্রদের জন্য ইউনিয়ন পরিষদে ৪০ দিনের কাবিখা/কাবিটা,টি আর এর প্রকল্প আসলে উক্ত মাটি কাটা প্রকল্প মেম্বারদের দিয়ে সভাপতি করেন। সভাপতি করে তাদেরকে বিভিন্ন ভোলভাল বুঝিয়ে পরিষদের উদ্দোক্তা মো.শিপন মিয়াকে দিয়ে প্রকল্পের টাকা তুলে নেন। এবিষয়ে উক্ত প্রকল্পের সভাপতি কিছুই জানিতে পারেনা। ইউনিয়ন পরিষদ উন্নয়ন সহায়তা, টিআর, কাবিখা, কাবিটা, অতি দরিদ্র কর্মসংস্থান কর্মসূচি, এডিপি বরাদ্দসহ সরকারি আরও অনেক বরাদ্দ আত্মসাৎ করেন।

 কুতুবপুর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মোহাম্মদ আলী বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের ৮ জন সদস্যই সেপ্টেম্বরের ২ তারিখ সোমবার চেয়ারম্যানের অপসারণের দাবিতে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন।

কুতুবপুর ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের মেম্বার মো.আয়নাল বলেন, চেয়ারম্যান এত চতুর সে আমাদেরকে বলে ৪নখ ওয়ার্ডের ধলিরকান্দি তিনমাথা হইতে কুতুবপুর কোরস বাঁধ পর্যন্ত বেরী বাঁধের প্রয়োজন এতে দুই থেকে তিন হাজার মানুষ পানি বন্দি হতে মুক্তি পাবে। কিন্তু কাজটি অনেক বড় এটা পাশ করে আনতে বিশ থেকে এিশ লাখ টাকা খরচ হবে তোমরা লাখ দশেক টাকা দাও বাদবাকি যা লাগে আমি দিয়ে কাজটি নিয়ে এসে সবাই মিলে করবোনি। তার এ কথা শুনে আমরা সবাই মিলে তার হাতে ১০ লক্ষ টাকা দিই। কিন্তু সে কোনও কাজ না করিয়া টাকা গুলো নিজের কাছে রেখে দেয় আজ তা কাউকে ফেরত দেয়নি। চলতি অর্থ বছরে কুতুবপুর ইউনিয়নের হাট বাজারের টাকা চেয়ারম্যান আত্মাসাৎ করেছে। 

কুতুবপুর ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. ফরিদ উদ্দিন  বলেন, চেয়ারম্যানের নানান অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমরা সোচ্চার হয়েছি। উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও জেলা প্রশাসক বরাবর  কুতুবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও বিরুদ্ধে জনস্বার্থে অতি দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন করেছি।

কুতুব ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের ফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও সে কলটি রিসিভ করেনি। 

সারিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃতৌহিদুর রহমান বলেন,অভিযোগ গুলো পেয়েছি। তদন্ত কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে তদন্ত কমিটির রিপোর্ট পেলে যথাযথ ব্যাবস্হা নেওয়া হবে। 

অনাস্থা দেওয়া ইউপি সদস্যরা হলেন- ৪নং ওয়ার্ডের সদস্য মো.জহুরুল ইসলাম, ৬নং ওয়ার্ডের মোহাম্মদ আলী, ৫নং ওয়ার্ডের ফরিদ উদ্দিন, ৯নং ওয়ার্ডের মো.সুজন মিয়া, ৩নং ওয়ার্ডের নজরুল ইসলাম, ৭নং ওয়ার্ডের বাবুল চৌধুরী, ৮নং ওয়ার্ডের রফিকুল ইসলাম এবং ৭নং ওয়ার্ডের মো.আয়নাল হক । এছাড়াও রয়েছেন সংরক্ষিত , ৪,৫, ও ৬ নং ওয়ার্ডের নারী মোছা.জাকিয়া সুলতানা।

যাযাদি/ এস