শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৩ আশ্বিন ১৪৩১

হরিরামপুরে ভোগান্তির শেষ নেই খানাখন্দে ভরা  কালই-রামকৃষ্ণপুর সড়কে

শুভংকর পোদ্দার, হরিরামপুর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি
  ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৪:৩৩
ছবি : যায়যায়দিন

দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার কালই মোড় থেকে রামকৃষ্ণপুর সড়কটি বেহাল অবস্থায় রয়েছে। খানাখন্দে ভরা সাড়ে ৩ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সড়ক দিয়ে যাতায়াতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে কয়েক হাজার যাত্রী ও শতাধিক গাড়ি চালকদের। সড়কের মাঝখানে থাকা বড় বড় গর্তে পড়ে উল্টে যাচ্ছে অটোরিকশাসহ ছোট-বড় অসংখ্য যানবাহন। কিন্তু বিকল্প সড়ক না থাকায় ঝুঁকি নিয়েই প্রতিদিন যাতায়াত করতে হচ্ছে কয়েকটি এলাকার কয়েক হাজার মানুষকে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কালই মোড় থেকে রামকৃষ্ণপুর পর্যন্ত সাড়ে ৩ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে সড়কের অসংখ্য স্থানে কার্পেটিং উঠে ইটের খোয়া ও পাথর বেরিয়ে পড়েছে। সড়কজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় খানাখন্দ। এর মধ্যে ঝুঁকি নিয়ে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও ভ্যান, ইঞ্জিনচালিত ট্রলি- নসিমন, ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করছে।

এলাকার ভুক্তভোগী কয়েকজন বাসিন্দা সূত্রে জানা যায়, প্রায় চার বছর আগে থেকেই কালই মোড় থেকে রামকৃষ্ণপুর পর্যন্ত রাস্তা চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। কয়েক হাজার মানুষের চলাচলের প্রধান সড়ক এটি। সর্বশেষ কত বছর আগে সড়কটি সংস্কার করা হয় তা অনেকেরই মনে নেই। এরপর মেরামত না করায় সড়কের প্রায় সবস্থানেই ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। দুর্ঘটনা এড়াতে যানবাহন চলছে ধীরগতিতে।

এ সময় অটোরিকশাচালক সুমন মিয়া বলেন, রাস্তায় অনেক খানাখন্দ থাকায় প্রতিদিনই ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে। এ রাস্তায় চলাচল করতে গিয়ে সুস্থ-সবল মানুষেও অসুস্থ হয়ে ওঠে। অনেক সময় রিকশায় করে এই রাস্তা দিয়ে রোগী নিয়ে গেলে তাঁদের অবস্থা আরও কাহিল হয়ে পড়ে। সড়কের ঝাঁকুনিতে গর্ভবতী নারীদের এই সড়কে চলাচল করতে খুবই অসুবিধা হচ্ছে।

স্কুল পড়ুয়া একাধিক শিক্ষার্থী জানান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে হলে এই একমাত্র সড়কটি ব্যবহার করতে হয়। অতচ এই সড়কটি ব্যবহার করতে গিয়ে ড্রেস নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। হাটা চলা করা যায় না। পানির নিচে থাকা গর্তে রিকশার চাকা পড়ে রিকশা উল্টে যাচ্ছে। তাই প্রতিনিয়ত ঝুঁকি নিয়ে এই সড়কে চলাচল করতে হচ্ছে সবাইকে।

রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের রামকৃষ্ণপুর গ্রামের শরিফ বলেন, প্রতিদিন এই রাস্তা দিয়েই আমাদের যাতায়াত করতে হয়। কিন্তু রাস্তার এই বেহাল দশায় খুবই ভোগান্তি নিয়ে যাতায়াত করতে হয়। ১০ মিনিটের রাস্তা যেতে সময় লাগে ২০-২৫ মিনিট।

গোপালপুর গ্রামের আলিম বলেন, এই রাস্তা দিয়ে মাটি-বালির ট্রাক চলাচল করার কারনে রাস্তার অবস্থা বেশি খারাপ হয়েছে।

রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. কামাল হোসেন বলেন, আমাদের রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের সকল লোকের যাতায়াতের একটা মাত্র রাস্তা হল রামকৃষ্ণপুর থেকে কালোই মোড় পর্যন্ত রাস্তাটি। এই রাস্তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা। এই রাস্তা দিয়ে অসংখ্য রিক্সা, ভ্যান, ইঞ্জিন চালিত নানা ধরনের যানবাহন চলাচল করে। আমাদের চরাঞ্চলের যত লোকজন তারা আমাদের এই রামকৃষ্ণপুর ঘাটে নেমে এই রাস্তা দিয়েই ঝিটকা হাটে যায়। বিশেষ করে আমি প্রায় দুই মাস যাবত লেছড়াগঞ্জ ঘুরে ঝিটকা যায়। কারণ আমার মাজা ব্যাথা ঝাঁকিতে একটু অসুবিধা হয়। তো আমার মত এরকম আরো লোকজনের অসুবিধা থাকতে পারে। এ খানাখন্দ রাস্তায় যাতায়াত খুবই কষ্ট এবং যানবাহনগুলো খুব ঝুঁকির মধ্যেই যাতায়াত করে। জনস্বার্থে এই রাস্তাটি সংস্কার বিশেষ দরকার।

হরিরামপুর উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকৌশলী মাজহারুল হক আকন্দ জানান, এই অর্থবছরে রাস্তাটির সংস্কারের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে এবং রাস্তাটির অনুমোদন হয়েছে। খুব দ্রুতই রাস্তাটি সংস্কার করা হবে।

যাযাদি/ এসএম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে