দীর্ঘ ৫৩ বছর পর সিঙ্গাইরে জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলন

প্রকাশ | ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:৪৪

সিঙ্গাইর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি
ছবি : যায়যায়দিন

স্বাধীনতা যুদ্ধের দীর্ঘ ৫৩ বছর পর প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে ঘটা করে মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইরে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। জামায়াতে ইসলামী সিঙ্গাইর উপজেলা শাখার উদ্যোগে শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিকেল আড়াইটা থেকে সন্ধা ৬ টা পর্যন্ত উপজেলা পরিষদ চত্বরে উৎসবমুখোর পরিবেশে এই কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে স্বত:স্ফূর্ত ভাবে অংশগ্রহণ করে দলটির বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী।  

এদিন বিকেল আড়াইটার দিকে কোরআন তেলোয়াতের মাধ্যমে উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর মাওলানা আব্দুল মান্নানের সভাপতিত্বে কর্মী সম্মেলন শুরু হয়। সম্মেলন আনুষ্ঠানিক ভাবে উদ্বোধন করেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শহীদ সাদ মাহমুদের বাবা মোঃ বাহাদুর খান। এতে যোগ দিতে জুমার নামাজের পর থেকে উপজেলার ১১ টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে উপজেলা চত্বরে আসতে থাকে। শুরু হওয়ার আগেই নেতাকর্মীদের পদচারণায় কানায় কানায় ভরে যায় পুরো সম্মেলন স্থল।

কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, জামায়াতে ইসলামী ঢাকা উত্তরাঞ্চলের টিম সদস্য মাওলানা মুহাম্মদ দেলোয়ার হোসাইন। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, মানিকগঞ্জ জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ কামরুল ইসলাম, ছাত্র শিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মোঃ জাহিদুর রহমান, জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিবিরের সাবেক সভাপতি আব্দুল কাদের, জেলা জামায়াতের সাবেক সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ আনোয়ার হোসাইন, হাফেজ আবুল কালাম আযাদ ও প্রফেসর মুহাম্মামদ আনোয়ার উল্লাহ্।

উপজেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সহকারি সেক্রেটারি মোহাম্মদ উল্লাহ ও জামায়াতে ইসলামী জয়মন্টপ ইউনিয়ন শাখার সভাপতি মুহিবুল্লাহ'র সঞ্চালনায় কর্মী সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে আরও বক্তব্য দেন, জেলার সদর উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট সালাহ উদ্দিন, জেলা শিবির সভাপতি মোঃ বাবুল হোসেন, উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর সাধারন সম্পাদক মুহাম্মামদ আবু জিহাদ, বায়তুলমাল সম্পাদক মোসলেম উদ্দিন, পৌর জামায়াতে ইসলামীর আমীর হুমায়ুন কবীর, উপজেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল্লাহ মনসুর ও সদর উপজেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সেক্রেটারি মো: শিপলু মিয়া প্রমূখ।

বক্তারা বলেন, আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকার আমাদের দলের শীর্ষ নেতাদের মিথ্যা ও বানোয়াট মামলায় ফাঁসি দেওয়া হয়েছে। অসংখ্য নেতাকর্মীকে গুম-খুন করা হয়েছে। এমন কোনো জুলুম-নির্যাতন নেই, যা আমাদের ওপর চালানো হয়নি। এরপরও তারা জামায়াতে ইসলামীর অগ্রযাত্রা কোনো ভাবেই রোধ করতে পারেনি। ফ্যাসিস্ট সরকার বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদেরকে পাখির মতো গুলি করে হত্যা করে। এই শহীদদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত দ্বিতীয় স্বাধীনতা স্বার্থক করতে একটি বৈষম্যহীন, সন্ত্রাস, দারিদ্র্য ও দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এই দেশে আর কোনো স্বৈরাচার ও ভোটচোর সরকারকে ক্ষমতায় আসতে দেওয়া হবেনা।

এদিকে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ হতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে নিহত সিঙ্গাইরের সাদ মাহমুদের বাবা বাহাদুর খান ও শহীদ তুহিন আহম্মেদের স্ত্রী রিয়ার হাতে নগদ দুই লাখ টাকা করে তুলেদেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মাওলানা মুহাম্মদ দেলোয়ার হোসাইনসহ অন্যান্য অতিথিবৃন্দ।

এসময় জেলা, উপজেলা, পৌর ও বিভিন্ন ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামী, তার অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

যাযাদি/ এসএম