শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৩ আশ্বিন ১৪৩১

গাংনীতে বৃষ্টির অজুহাতে সবজির দাম আকাশ ছোঁয়া

মজনুর রহমান আকাশ, গাংনী (মেহেরপুর)
  ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০৩
ছবি : যায়যায়দিন

মেহেরপুরের গাংনীতে টানা তিনদিনের বৃষ্টিতে তাপমাত্রার পারদ কমে গিয়ে জনজীবনে স্বস্তি ফিরলেও বৃষ্টির অযুহাতে সবজির দাম বৃদ্ধিতে অস্বস্তিতে পড়েছেন সাধারণ ক্রেতারা। চারদিনের ব্যবধানে বেগুন, পটল, ফুলকপি, বাধা কপি, শসা দাম বেড়েছে দ্বিগুন। আর তাতেই পকেট কাটা পড়ছে সাধারণ ক্রেতাদের।

ক্রেতাদের অভিযোগ, প্রতিনিয়ত বাজার মনিটরিং না থাকায় ব্যবসায়ীরা বেপরোয়া। প্রশাসনিক তদারকির অভাবে সিন্ডিকেট করে তাদের ইচ্ছা মতে বাজারদর নির্ধারণ করে থাকেন। যার প্রভাব পড়ে বাজারদরে। আর ব্যবসায়ীরা বলছেন, বৈরী আবহাওয়ায় চাষিদের উৎপাদন কমে গেছে। তাই কৃষক পর্যায়ে দাম বেড়েছে। এর সাথে পরিবহন ও আড়ৎ খরচ যোগ করেই খুচরা বিক্রি করতে হয়। তবে কৃষকরা বলছেন অন্যকথা। তাদের মতে, বৃষ্টির কারনে সবজি সংগ্রহ কমে গেছে এটা ঠিক। তবে আড়তের চেয়ে দ্বিগুন দাম বৃদ্ধির কথা নয়।

শুক্রবার বাণিজ্যিক শহর বামন্দী সবজি বাজার ঘুরে দেখা যায়, বেগুনের বতর্মান বাজার চলছে ৮০ টাকা করে, যা তিনদিন আগে ছিলো ৩৫ টাকা করে, শসা চলছে ৮০ টাকা কেজি দরে, যা পূর্বে ছিলো ৩৫ থেকে ৪০ টাকা করে, ফুলকপি ও বাধাকপি চলছে ১২০ টাকা করে, যা পূর্বে ছিলো ৫০ টাকা করে, এক পিচ লাউ বতর্মানে বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা করে, যা পূর্বে ছিলো ৩০ টাকা করে, আর উস্তে চলছে ১২০ টাকা করে, যা পূর্বে ছিলো ৬০ টাকা করে। প্রতি কেজি পটল বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা করে, যা তিনদিন পূর্বে ছিলো ৩০ টাকা। ঝিঙে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায় যা পূর্বে ছিলো ৪০ টাকা করে। ঢেড়স ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে যা ছিলো ৩৫ টাকা করে।

সবজি চাষিদের সাথে আলাপ কালে তারা জানান, মাঠ পর্যায়ে সবজি সংগ্রহ একটু কম হলেও আড়তে বিক্রি হচ্ছে কম দামে। শুক্রবার আড়তে বেগুন প্রতি কেজি ২৩ থেকে ২৫ টাকা, শসা ৪০ টাকা, ফুলকপি ও বাধাকপি ৫৫ টাকা, এক পিচ লাউ ৩০ টাকা আর উস্তি বিক্রি করেছেন ৬০ টাকা, প্রতি কেজি পটল ২৫ টাকা, ঝিঙে প্রতি কেজি বিক্রি করেছেন ২৮ টাকা করে দরে বিক্রি হয়েছে। অথচ বাজরে কয়েক হাত বদল হয়ে দাম বেড়েছে দুই তিন গুন।

সবজি ক্রেতা ইব্রাহিম জানান, বাজারে অন্যান্য পণ্যের সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে সবজির দাম। বৃষ্টি আর বৈরী আবহাওয়ার ধোয়া তুলে বিক্রেতারা দাম বাড়িয়েছে আকাশ ছোঁয়া। যে টাকা পকেটে নিয়ে বাজারে আসা হয়েছে তা দিয়ে প্রয়োজনের তুলনায় একেবারই কম সবজি কিনতে হবে। তিনি আরো জানান, বাজারে যে মরিচ কৃষকের কাছ থেকে আড়তে কিনছে ১৫০ টাকা সেই মরিচ খুচরা কিনতে হচ্ছে আড়াইশ’ টাকায়।

স্কুলশিক্ষক পলাশ আহমেদ জানান, শুক্রবার ছুটির দিনে সকলেই বাজার করতে আসে। এ সুযোগটি বিক্রেতারা কাজে লাগান। তার উপর বৃষ্টির অজুহাত। প্রত্যেকটি সবজিতে দু’এক টাকা বেশি হলে ক্রেতাদের তেমন কোন সমস্যা হতো না কিন্তু কেজি প্রতি ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। ফলে ক্রেতাদের নাভিশ্বাস । ব্যবসায়ি সিন্ডিকেট না ভাংতে পারলে ক্রেতা সাধারণকে এমনিভাবে ভুগতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। সবজি বিক্রেতা জাফর আলী জানান, গত কয়েকদিনের বৃষ্টির কারনে বাজারে সবজি আমদানি কমে গেছে। যার ফলে চাহিদার বিপরীতে আমদানি কমে যাওয়াই বেড়েজে সবজির দাম। এমন আবহওয়া চলতে থাকলে সবজির দাম আরো বাড়বে। একই কথা জানালেন সবজি বিক্রেতা মখলেচ। তিনি জানান, বৈরী আবহাওয়া সেই সাথে সবজি ক্ষেতে জলাবদ্ধতার কারনে বাজারে অল্প সংখ্যক সবজি আমদানি হচ্ছে। যার ফলে দাম বেড়েছে।

মেহেরপুর জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের দায়িত্বরত কর্মকর্তা সজল আহমেদ জানান, ব্যবসায়ীরা যদি সিন্ডিকেট করে বাজার পরিস্থিতি অস্থির করার চেষ্টা করে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। তাছাড়া বাজার মনিটরিংয়ে ভোক্তা অধিকার সর্বদা কাজ করে যাচ্ছে।

যাযাদি/ এসএম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে