শুক্রবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২ আশ্বিন ১৪৩১

দুর্গন্ধের কারণ খুঁজতে গিয়ে বেরিয়ে এলো মানুষের হাত

মো. জামাল উদ্দিন দুলাল,  দেবিদ্বার (কুমিল্লা) থেকে
  ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৯:১৩
ছবি : যায়যায়দিন

কুমিল্লায় পিটিয়ে হত্যার পর ঘরের মধ্যেই মাটিচাপা দিয়ে রেখেছিলেন লাশ। শিয়াল-কুকুরে মাটি আচঁড়ে বের করে ফেলে একটি হাত। বের হওয়া অর্ধগলিত হাত থেকে সৃষ্টি হয় তীব্র দুর্গন্ধ। দুর্গন্ধের উৎপত্তি খুঁজতে গিয়ে দেখেন গর্তে মানুষের হাত। ঘটনাটি ঘটে কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার বারুর-পিরোজপুর গ্রামের সীমান্তে।

শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) মাটিচাপা দেওয়া অর্ধগলিত লাশটি উদ্ধার করেছেন পুলিশ। এর পরপরই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ৩ জনকে আটক করা হয়।

নিহত ব্যক্তির নাম নুরুল ইসলাম (৪০)। তিনি হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার পানিওন্দা গ্রামের মরগিছ ইসলামের ছেলে। এ ঘটনায় নোয়াজ আলী(৬০) নামে একজনকে আটক করেছে পুলিশ। বাকি দুইজন এ হত্যাকাণ্ডের জড়িত না থাকায় জিজ্ঞাসাবাদের পর তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। নোয়াজ আলী হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার বড়কান্দি এলাকার আব্দুল আলী ছেলে।

শুক্রবার বেলা ১১টায় নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্ত নোয়াল আলীর বিরুদ্ধে মামল রুজু হওয়ার পর তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ কর হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দেবিদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) শাহিনুল ইসলাম।

জানা যায়, নিহত নুরুল ইসলামকে দিনমজুরের কাজের কথা বলে গত ২১ সেপ্টেম্বর শনিবার দেবিদ্বার নিয়ে আসেন অভিযুক্ত নোয়াজ আলী। দুজনই থাকতেন চরবাকর-এলাহাবাদ সংযোগ সড়কের সাথে বারুর-পিরোজপুর গ্রামের সীমান্তের একটি ভাড়া ঘরে। নোয়াজ আলী দেবিদ্বারের বিভিন্ন এলাকায় লোক নিয়ে শ্রমিকের কাজ করতেন।

জাফরগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মো. নাসির বলেন, লাশ দেখার পর আমরা নিহতের সাথে থাকা নোয়াজ আলীকে গ্রামবাসী সহযোগিতায় ধরে আনি। তখন আমার তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করি লোকটা কি ভাবে মারা গেছেন। তিনি এক পর্যায়ে হত্যার দায় স্কীকার করে বলেন, আজ থেকে চার বছর আগে কবিরাজের মাধ্যমে নোয়াজ আলীর ছেলেকে তাবিজ করে মেরে ফেলে নুরুল ইসলাম। এ থেকেই নোয়াজ আলীর রাগ-ক্ষোভ জন্মায় নুরুল ইসলামের প্রতি। এ ঘটনার চার বছর পর গত ২১ সেপ্টেম্বর শনিবার কৌশলে কাজের কথা বলে দেবিদ্বার নিয়ে আসেন। গত সোমবার গভীর রাতে ঘুমন্ত নুরুল ইসলামকে গাছের গুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেন। হত্যার পরপরই একই ঘরে মাটিচাপা দিয়ে রাখেন।

মুদি দোকানদার আলী আকবর, রফিকুল ইসলাম ও স্বপ্না বেগম বলেন, সকালে তীব্র দুর্গন্ধ। যা সহ্য করার মতন ছিল না। আমরা অনেক খোঁজাখুঁজি করেছি। কিন্তু পাইনি। পরে চরবাকর-এলাহাবাদ সংযোগ সড়ক দিয়ে হাঁটাচলা সময় লোকজন দেখতে পান সড়কের পাশে একটি ঘরে গর্তের মধ্যে মানুষের হাত।

দেবিদ্বার থানার পরিদর্শক ( তদন্ত) শাহিনুল ইসলাম বলেন, লাশ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছি। এ ঘটনায় ঘটনাস্থল থেকে তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় এনেছিলাম। জিজ্ঞাসাবাদে দুজনের জড়িত থাকার সত্যতা পাইনি। বাকি একজনের বিরুদ্ধে মামলা রুজু হওয়ার পর আদালতে প্রেরণ করা হবে।

যাযাদি/ এসএম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে