শুক্রবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২ আশ্বিন ১৪৩১

জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেল মধুপুরের আনারস

হাফিজুর রহমান, ধনবাড়ী (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
  ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৮:৫৩
ছবি : যায়যায়দিন

টাঙ্গাইলের মধুপুরের ঐতিহ্যবাহী স্বাদের আনারস জিওগ্রাফিক্যাল আইডেন্টিফিকেশন (জিআই) বা ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে। গত মঙ্গলবার শিল্প মন্ত্রণালয়ের পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মুনিম হাসান স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপন জারি হয়। জেলা প্রশাসক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ৩১ নম্বর শ্রেণিতে পণ্যটি জিআই-৫২ হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়েছে।

আনারসের রাজধানী হিসেবে খ্যাত মধুপুর গড়াঞ্চল। বাংলাদেশে সর্ব প্রথম আনারস চাষের গোড়াপত্তন হয় ১৯৪২ সালে। মধুপুরের ইদিলপুর গ্রামের ক্ষুদ্র-নৃতাত্তি¡ক গারো সম্প্রদায়ের লোকজন প্রথম আনারস চাষ করেন। মেঘালয় থেকে ৭৫০টি চারা এনে চাষ শুরু করেন। ওই চাষকে সমৃদ্ধ করে বতর্মানে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আনারস চাষ হয়।

শত বছরের ঐতিহ্য-ইতিহাসের সঙ্গে মিশে আছে সুস্বাদু এ আনারস। মধুপুরের জলছত্র বাজারটি আনারসের বিখ্যাত হাট। প্রতিদিন কোটি টাকার বেচাকেনা হয় থাকে এখানে। দেশের বিভিন্ন স্থানের পাইকার ও খুচরা ব্যবসায়ীরা আনারস কিনে নিয়ে যান।

আকারভেদে ২০ থেকে ৬০ টাকা ধরে প্রতিটি আনারস বিক্রি হয়। আনারস চাষে উদ্বুদ্ধ করতে কৃষি বিভাগের নানামুখী উদ্যোগে প্রতিনিয়তই বাড়ছে চাষির সংখ্যা।

মধুপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাকুরা নাম্নী বলেন, চলতি মৌসুমে জেলায় প্রায় ৭ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে প্রায় পৌনে ৩ লাখ মেট্রিক টন আনারস উৎপাদন হবে। জায়ান্টকিউ (ক্যালেন্ডার), হানিকুইন (জলডুবি) ও এম-ডি-টু জাতের আনারস চাষ হয়ে থাকে। আনারস থেকে উদ্যোক্তাদের জ্যাম, জেলি, জুস ও আচার উৎপাদনের পরামর্শ দেওয়া হয়। বিদেশেও রপ্তানির পরিকল্পনা রয়েছে।

জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত মধুপুরের কৃষক ছানোয়ার হোসেন বলেন, ‘মধুপুরের ইতিহাস ও ঐতিহ্য আমাদের আনারস। জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ায় আমরা গর্বিত আনন্দিত ও উদ্বেলিত। বিশ্ব মানচিত্রে এই আনারসের কল্যাণে মধুপুর উজ্জ্বল নক্ষত্র হয়ে টিকে থাকবে।’

টাঙ্গাইলে জেলা প্রশাসক শরীফা হক গনমাধ্যম কে জানান, ‘রাজধানী ঢাকার নিকটবর্তী অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জেলা টাঙ্গাইল। জেলাটি ইতিহাস ও ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ। টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ি ও চমচমের পর এবার মধুপুরের আনারস জিআই পণ্য স্বীকৃতি পেল। এতে আমরা আনন্দিত, সেই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। জিআই পাওয়ায় এর বিশ্বব্যাপী ব্র্যান্ডিং এবং বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদ আরো বিস্তৃত হবে। জিআইয়ের সুফল পেতে ব্যাপক উদ্যোগ গ্রহণ করব। টাঙ্গাইলের আরো কয়েকটি পণ্য জিআই স্বীকৃতি পেতে আবেদন করা হয়েছে।’

যাযাদি/ এসএম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে