ঝুট ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে যুবদল-কৃষকদলের মধ্যে ধাওয়াপাল্টা ধাওয়া, সড়ক অবরোধ

সাংবাদিককে অস্ত্র ঠেকিয়ে হুমকি 

প্রকাশ | ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৫:০০ | আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৫:৫৫

আলফাজ সরকার আকাশ, শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
ছবি: যায়যায়দিন

গাজীপুরের শ্রীপুরে কারখানার  ঝুট ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে যুবদল ও কৃষকদলের কর্মী সমর্থকদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়েছে। এসময় ককটেল বিস্ফোরণ ঘটলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে রাখা হয়। এসময় বেশ কয়েকটি যানবাহনে ভাঙচুর চালানো হয়। এতে বেশ কয়েকজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। পরে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে।

বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টা থেকে সাড়ে দশটা পর্যন্ত শ্রীপুর পৌর এলাকার ২নং সিএন্ডবি নামক স্থানে এ ঘটনা ঘটে।  

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় একাধিক সুত্র মারফত জানা যায়, পৌর এলাকার সিএন্ডবির এসকিউ সেলসিয়াস সোয়েটার কারখানার ঝুট ব্যবসার কোম্পানির ওয়ার্ক অর্ডার পান  যুবদল নেতা এসএম পলাশের চঞ্চল এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। বুধবার সকালের দিকে তার লোকজন কারখানায় ঝুট বের করতে যান। এসময় কৃষক দলের কয়েকজন নেতাকর্মী ও তাঁদের লোকজন পলাশের লোকজনকে বাঁধা দেন। একপর্যায়ে কৃষক দল ও যুবদলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এসময় দেশীয় অস্ত্র উঁচিয়ে মহড়া দিয়ে সড়ক অবরোধ করে রাখে। একপর্যায়ে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। এসময় একটি হায়েস ও তিনটি প্রাইভেটকারসহ বেশ কয়েকটি যানবাহন ভাঙচুর করা হয়। 

সংঘর্ষের একপর্যায়ে ঘটনাস্থলের পাশেই কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হলে চারদিকে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। দৌড়াদৌড়িতে আহত হন দুই গ্রুপের বেশ কয়েকজন। এ ঘটনার ভিডিও ধারণের সময় মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়াসহ লাঞ্ছিত করা হয় বেশ কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মীকে। বেসরকারি টেলিভিশন যমুনা টিভির জেলা প্রতিনিধি হোসাইন আলী বাবুকে অস্ত্র ঠেকিয়ে হুমকি দেয় কৃষকদলের লোকজন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলে গণমাধ্যমকর্মীরা নিরাপদ স্থানে আসেন। 

যমুনা টিভির জেলা প্রতিনিধি হোসাইন আলী বাবু বলেন, 'ঘটনার ভিডিও করা মুহুর্তে কৃষকদলের কর্মী পরিচয়ে আমার সামনে অস্ত্র ঠেকিয়ে নিউজ না করার হুমকি দেওয়া হয়।'

এ বিষয়ে ওয়ার্ক অর্ডার পাওয়া চঞ্চল এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী এবং জেলা যুব দলের আহ্বায়ক সদস্য এস এম পলাশ বলেন,' গত ৫ দিন আগে আমি ওই কারখানায় ওয়ার্ক অর্ডার পেয়েছি। আজকে মাল বের করার সময় কৃষকদল নেতা আবুল কালাম আজাদের নেতৃত্বে আমার লোকজনের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। আমাকে জানে মেরে ফেলার হুমকি ধামকি দেওয়া হয়েছে।'

এ ঘটনায় জড়িত কেউ নিজের কর্মী সমর্থক নয় জানিয়ে গাজীপুর জেলা কৃষকদলের আহবায়ক আবুল কালাম আজাদ বলেন,' শুনেছি একাধিক ব্যক্তি ওই কারখানায় ওয়ার্ক অর্ডারের জন্য দরপত্র জমা দিয়েছে। কিন্তু সেখানে আমার নিজের নামে অথবা আত্মীয় স্বজনের নামে কোনো দরপত্র জমা দেওয়া হয়নি। আমাকে রাজনৈতিক হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য শুধুমাত্র আমার নাম ব্যবহার করা হচ্ছে। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। '

এ বিষয়ে শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন বলেন, ঝুট ব্যবসাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রপের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছিল। একপর্যায়ে কিছু সময় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবরোধ সৃষ্টি করে রাখে তাঁরা। পরে খবর পেয়ে থানা পুলিশ, শিল্প পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে।  এ ঘটনায় তদন্ত হচ্ছে। উর্ধতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে যথাযথ  আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

যাযাদি/ এসএম