মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৯ আশ্বিন ১৪৩১

প্রধান উপদেষ্টা বরাবরে স্মারক লিপি প্রদান

লোহাগাড়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
  ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৯:০৯
ছবি : যায়যায়দিন

চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক ১০ম গ্রেড বাস্তবায়ন সমন্বয় পরিষদ,র পক্ষ থেকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বরাবরে স্মারক লিপি প্রদান করা হয়েছে। গত ২৩ সেপ্টেম্বর সোমবার বিকালে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ ইনামুল হাসানের মাধ্যমে এ স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।

স্মারকলিপিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের যোগ্যতা ও ন্যায্যতার আলোকে ১০ম গ্রেড প্রদানের যৌক্তিকতাসুমহ তুলে ধরে বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১ দফা ঘোষণার পর ছাত্র-জনতা তীব্র আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েন, ছাত্র-জনতার তাজা রক্তের বিনিময়ে, বৈষম্যবিহীন রাষ্ট্র বিনির্মাণ, বাক স্বাধীনতা ফেরার নতুন সূর্যোদয়ের মাধ্যমে আমরা পেয়েছি বৈষম্যবিরোধী অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

আমরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পক্ষ থেকে সেসব বুক চেতিয়ে দেওয়া আত্মদানকারী বীরশহিদ ছাত্রদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে, শ্রদ্ধা জানিয়ে স্বারক লিপিতে বলা হয়, শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড আর শিক্ষার ভিত্তি হলো প্রাথমিক শিক্ষা। প্রাথমিক শিক্ষকরা শিক্ষার সূতিকাগারের কান্ডারি।

দেশ উন্নয়নশীল কাতারে, মাথাপিছু আয় ২৭৯৩ মার্কিন ডলার। ভিনদেশী ১০ লক্ষ রোহিঙ্গাদের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে রাষ্ট্রীয়ভাবে। নিজস্ব অর্থায়নে বিভিন্ন মেগা প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। পদ্মাসেতু, মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ে, কর্ণফুলী ট্যানেল এখন দৃশ্যমান, দেশ আর্থিকভাবে সক্ষমতা অর্জন করেছে। আমরা নোবেল বিজয়ী বীরের জাতি, আমাদের আশা আকাঙ্ক্ষার মূর্ত প্রতীক, নোবেল বিজয়ী মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা এখন রাষ্ট্র ক্ষমতায়।

বৈষম্যবিরোধী অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, সাম্য গড়ার প্রত্যয়ে উন্নত, সুখী ও সমৃদ্ধ এবং সমতার বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখছেন। বৈষম্যবিরোধী অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বৈষম্যহীন সমতার বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন সারথী হিসেবে আমরা প্রাথমিক শিক্ষকরা সমতার স্মার্ট নাগরিক গড়ার প্রধান নিয়ামক হিসেবে কাজ করতে বদ্ধপরিকর। প্রাথমিক শিক্ষকদের দৃঢ় বিশ্বাস নোবেল বিজয়ী বৈষম্যবিরোধী মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা শিক্ষকদের কখনো হতাশ করবেন না।

নিম্নে বৈষম্যবিরোধী অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা মহোদয়ের সমীপে প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকদের ১০ম গ্রেডের যৌক্তিকতা তুলে ধরা হলো। প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ যোগ্যতা: স্নাতক সমমান (২য় বিভাগ) বেতন গ্রেড।

১৩তম, যেখানে অষ্টম শ্রেণি পাস ড্রাইভার ভাইদের বেতন গ্রেড। ১২তম। সমযোগ্যতা সম্পন্ন অন্যান্য বিভাগে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ যোগ্যতা: স্নাতক সমমান, বেতন গ্রেড: ১০ম।

পুলিশের সাব ইন্সপেক্টর পদে নিয়োগ যোগ্যতা। স্নাতক বা সমমান, বেতন গ্রেড: ১০ম উপ-সহকারী কৃষি অফিসার পদে নিয়োগ যোগ্যতা: এসএসসি (৪ বছর কৃষি ডিপ্লোমা), বেতন গ্রেড: ১০ম।

নার্সদের নিয়োগ পদে যোগ্যতা: এইচএসসি ( ডিপ্লোমা ইন নার্সিং), যেকন গ্রেড ১০ম, ইউনিয়ন পরিষদ সচিব পদে নিয়োগ যোগ্যতা: আগে ছিল এইচএসসি বর্তমানে স্নাতক সমমান, বেতন গ্রেড ১০ম (সমাধিত) বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদে নিয়োগ যোগ্যতা স্নাতক সমমান, বেতন গ্রেড ১০ম ও ৯ম।

এছাড়া একই ক্যারিকুলাম, একই সিলেবাস ও একই শিক্ষার্থীদের নিয়ে কাজ করা পিটিআই সংলগ্ন পরীক্ষণ বিদ্যালয়ের শিক্ষক পদে নিয়োগ যোগ্যতা: স্নাতক (দ্বিতীয় শ্রেণি), দেড় বছরের ডিপ্লোমা ইন এডুকেশন (ডিইনএড)বেতনকোড ১০ ম।

কিন্তু প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতক (২য় বিভাগ) সমমান হলেও ১০ম গ্রেড পেতে শুধুমাত্র আমলাতান্ত্রিক প্রতিবন্ধকতা।

প্রধান উপদেষ্টা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা কোমলমতি শিক্ষার্থীদের উন্নত জীবনের স্বপ্নদর্শনে উদ্বুদ্ধ করেন। পড়াশোনা শেষ করে মহৎ পেশার নতুন নিয়োগ পাওয়া একজন সহকারী শিক্ষক ১৩তম গ্রেডে মাত্র ১১,০০০/- টাকা বেতন গ্রেডে (১১,০০০+৪৯৫০+১৫০০+২০০) মোট: ১৭,৬৫০/- টাকা পায়। মাসিক এ বেতনে সংকুলান না হয়ে অনেক ক্ষেত্রে ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে হতাশা ও মনঃকষ্ট নিয়ে যাপিত জীবন অতিবাহিত করেন শিক্ষকরা। মাসিক এ যেতনভাতা দিয়ে কখনো উন্নত জীবন মান সম্ভব নয়। আর এই কারণেই মেধাবীরা প্রাথমিকে শিক্ষকতা পেশায় না এসে জন্য পেশায় ছুটছেন উল্লেখ করে তারা বলেন, প্রাথমিকের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের যোগ্য ও স্মার্ট নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে প্রাথমিকের শিক্ষকতা পেশায় মেধাবীদের আকৃষ্ট করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা আশু প্রয়োজন। স্বাধীনতার পর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক এবং গ্রাজুয়েট শিক্ষকদের বেতন স্কেল একই ছিল। ১৯৭৭ সালে প্রধান শিক্ষকদের বেতন স্কেল ৩২৫ টাকা, সহকারী শিক্ষকদের বেতন স্কেল ৩০০ টাকা নির্ধারণ করে সর্বপ্রথম প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকদের মধ্যে ব্যবধান সৃষ্টি করা হয়। আমরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা পূর্বের ন্যায় (প্রধান শিক্ষকদের কার্যভার ভাতা প্রদান করে) প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকদের একই বেতন গ্রেডের যৌক্তিক দাবী দ্রুত বাস্তবায়ন চাই।

যৌক্তিকতা ও ন্যায্যতার বিবেচনায় একটি প্রস্তাবনা তৈরি করে পিটিআইসংলগ্ন পরীক্ষণ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও অন্যান্য ডিপার্টমেন্টের কর্মচারীদের ন্যায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের ১০ম গ্রেডের ন্যায়সংগত দাবি বাস্তবায়নে বৈষম্যবিহীন অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহোদয়ের সদয় অনুগ্রহ ও কামনা করেন তারা।

স্মারক লিপিতে উপজেলার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক ১০ম গ্রেড বাস্তবায়ন সমন্বয় পরিষদ,র পক্ষে সমন্বয়ক হিসাবে আতাউল্লাহ মুহাম্মদ সেলিম,আবছার উদ্দিন,মিজানুর রহমান, রিদুয়ানুল হক,মঞ্জুর আলম,এনামুল হক ও শাহাদাত হোসেন সোহেল স্বাক্ষর করেন।

যাযাদি/ এম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে