মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয় করনের দাবিতে নাজিরপুরে মানববন্ধন
প্রকাশ | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৪:৩৯
বৈষম্য দূরীকরণে মাধ্যমিক স্তরের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ, জাতীয়করণের পূর্ব পর্যন্ত শিক্ষা প্রশাসনের বিভিন্ন পদে সরকারী স্কুলের শিক্ষকদের পদায়ন বন্ধ রাখা ও একটি শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠনের দাবীতে পিরোজপুরের নাজিরপুরে বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মানববন্ধন কর্মসূচী ও র্যালী অনুষ্ঠিত হয়েছে, মানববন্ধন ও র্যালি শেষে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে শিক্ষা উপদেষ্টার কাছে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাকীয়করণ প্রত্যাশি জোট এ স্মারকলিপী প্রদান করেন।
মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টায় উপজেলা পরিষদ চত্বরে এ মানববন্ধন কর্মসূচী অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধন কর্মসূচীতে বিভিন্ন দাবী দাওয়ার বিষয় নিয়ে বক্তব্য রাখেন প্রধান শিক্ষক ইউনুস আলী শেখ, সরোয়ার হোসেন, মাওলানা ফরিদ আহম্মেদ, মোঃ নজরুল ইসলাম, মোঃ হুমায়ুন কবির প্রমুখ।
পরে ৪ দফা দাবী সংবলিত একটি স্বারকলিপি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও অরূপ রতন সিংহ এর কাছে প্রেরণ করেন।
মাধ্যমিক স্তরের প্রতিষ্ঠানের ৯৭% বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানগুলি জাতীয়করণ করা অত্যন্ত জরুরী। একই শিক্ষাগত যোগ্যতা, একই বই পড়ানো, একই বোর্ডের আওতায় পরীক্ষা অথচ সরকারি ও বেসরকারি নাম দিয়ে আর্থিক ও সামাজিক মর্যাদার মধ্যে বিরাট বৈষম্য তৈরী করে রাখা হয়েছে যা শিক্ষার গুনগত মান উন্নয়নে প্রধান অন্তরায়। শিক্ষার সকল স্টকহোল্ডারদের প্রাণের দাবি মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণ।
শিক্ষা বিভাগের দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো একাডেমিক ও প্রশাসনিক। শিক্ষকেরা একাডেমিক কাজে দক্ষ। তাদের সকল প্রশিক্ষণ পেড্যাগোজি কেন্দ্রিক। ক্লাস রুমের পঠন-পাঠনে তারা দক্ষ। অন্যদিকে শিক্ষা প্রশাসনে দীর্ঘ ৩১ বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারদের সকল প্রশিক্ষণ প্রশাসনিক। শিক্ষকতা ও প্রশাসন ভিন্ন চরিত্রের, ভিন্ন বৈশিষ্ট্যের, কাজের ধরন ভিন্ন, চর্চা বা অনুশীলন ভিন্ন। শিক্ষকরা প্রশাসনে অনভিজ্ঞ, জেলা শিক্ষা অফিসার ও উপপরিচালক পদে তাঁদের পদায়ন করা হলে সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক শূন্যতা যেমন সৃষ্টি হয় তেমনি ক্লাস রুম শিক্ষকতায় অভিজ্ঞ একজন শিক্ষককে উল্লেখিত পদ সমূহে পদায়ন করা হলে বিভিন্ন বিধি বিধান সম্পর্কে পূর্ব জ্ঞান না থাকার কারণে অফিসের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন নিম্নপদের লোকজনের পরামর্শ দ্বারাই পরিচালিত হতে হয়। প্রশাসনিক দৃঢ় সিদ্ধান্ত তাঁরা গ্রহণ করতে পারেনা। এছাড়াও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার পদে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষকগণকে পদায়ন করা হলে প্রশাসনিক অনভিজ্ঞ সিনিয়র শিক্ষকের অধীনে বেসরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসার প্রধানগণকে কাজ করতে হবে। এতে শিক্ষাঙ্গনে চরম অসন্তোষ সৃষ্টি হতে পারে। সে কারণে উপজেলা, জেলা, অঞ্চল ও মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মাধ্যমিক শাখায় ৩১ বছর শিক্ষা প্রশাসনে কাজের দক্ষতা সম্পন্ন ৬ষ্ঠ গ্রেডের অফিসার উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ও সহকারী শিক্ষা অফিসার, ৭ম গ্রেডের অফিসার সহকারী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারদের পদোন্নতি ও পদায়নের জোড় দাবী করছি।
শিক্ষার মাঠ প্রশাসনে কাজ করা ১০-২২ বছরের দক্ষ, অভিজ্ঞ ও প্রশিক্ষিত SESIP এর ১১৮৭টি পদ জনবলসহ রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের অসমাপ্ত কাজ দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে।
নানা মাত্রিক সমস্যায় মাধ্যমিক শিক্ষা জর্জরিত। স্কুল, মাদ্রাসা, সরকারি, বেসরকারি এ রকম নানা রকম প্রতিষ্ঠান হওয়ায় এদের মধ্যে বৈষম্য প্রকট। দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে শিক্ষা ব্যবস্থাকে যুগোপযোগী করতে একটি শিক্ষা সংস্কার কমিশন করার জোড় দাবি জানিয়ে স্মারকলিপীতে এ ৪ টি দাবী তুলে ধরেন।
যাযাদি/ এসএম