মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৯ আশ্বিন ১৪৩১
সৈয়দপুরে তীব্র তাপ ও ভ্যাপসা গরমে জনজীবন বিপর্যস্ত

সেচ দিতে না পারায় আমন আবাদে বিড়ম্বনা

আবু-বিন-আজাদ, সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি
  ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৪:২০
ছবি: যায়যায়দিন

নীলফামারীর সৈয়দপুরে তীব্র তাপ ও ভ্যাপসা গরমে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। গরমে অনেকেই জ্বর, সর্দ্বি, ডায়ারিয়া, আমাশয়সহ নানারোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েছেন। যার ফলে প্রতিদিন স্থানীয় হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও ডাক্তারদের চেম্বারে রোগীর চাপ বেড়ে গেছে। গরমে তেস্টা মেটাতে ফুটপাতের সরবতের দোকানগুলোতেও কর্মজীবি মানুষজন ভিড় জমাচ্ছেন। দিন-মজুরসহ, রিক্সা-ভ্যান চালকরা একটু গাছের ছায়া বা কোনো জায়গায় ভবনগুলোর ছায়ার দেখা পেলেই সেখানে জিরিয়ে নিচ্ছেন। অনেকেই তীব্র তাপ ও ভ্যাপসা গরমে কাজ করতে না পেরে বেকার হয়ে থাকায় পরিবার-পরিজন নিয়ে বিপদে পড়ে রয়েছেন।

সৈয়দপুর বিমানবন্দরের আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, কয়েকদিন ধরে সৈয়দপুরে ৩৮-৩৯ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা বিরাজ করছে।

কথা হলে সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. আরশাদ হোসেন জানান, তাপ ও গরমে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেছে। যার ফলে হাসপাতালে আগত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। এসময় তিনি পরামর্শ হিসাবে বলেন, তীব্র তাপ ও গরমে বাইরে বের হওয়া যাবে না। বেশী করে পানি খেতে হবে। প্রয়োজনে কাজে বেরুলেও ছাতা ও পানি সাথে রাখতে হবে। সাবধানতা অবলম্বন না করলে গরমের কারণে বিভিন্ন রোগের পাশাপাশি হিটস্ট্রোকের আশংকা থাকে। তাই, সবারই সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।

এদিকে মড়ার উপর খড়ার ঘাঁ হয়ে দাঁড়িয়েছে ঘন্টার পর ঘন্টা ধরে বিদ্যূতের লোডশেডিং। যার ফলে বাড়িতে, অফিস, স্কুল-কলেজ, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন কর্মক্ষেত্রে লোডশেডিংয়ের কারণে মানুষজনের হাঁসফাঁস আবস্থা দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে লোডশেডিংয়ের কারণে কৃষকেরা আমন ধান লাগানো জমিতে সেচ দিতেও বিড়ম্বনায় পড়েছেন।

এদিকে উপজেলার ৮ হাজার ১শ’ ১৪ হেক্টরের বেশী জমিতে লাগানো উফসি, হাইব্রিড ও লোকাল আমন ধানের আবাদের উপরও এই তীব্র তাপ ও গরমের প্রভাব পড়েছে বলে কৃষকেরা জানিয়েছেন। নাম প্রকাশ করার না করার শর্তে অনেকে কৃষক পানির অভাবে ধানে চিটা পড়ার আশংকা করছেন। সেইসাথে অনেক কৃষক আমন আবাদের এবারের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে না বলেও আশংকা প্রকাশ করেছেন।

কথা হলে সৈয়দপুর উপজেলা কৃষি অফিসার ধীমান ভুষন জানান, এবারে উপজেলায় ৮হাজার ১শ’ ১৪ হেক্টর জমিতে আমন ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এরমধ্যে উফসি জাতের ৭হাজার ৩শ’ ২৪ হেক্টর জমিতে, হাইব্রিড ৯শ’ ৪ হেক্টর জমিতে ও বাকী জমিতে লোকাল ধানের আবাদ হচ্ছে। তীব্র তাপ ও লোডশেডিংয়ের কারণে জমিতে সেচ দিতে না পারায় জমি ফেঁটে যাওয়াসহ ধানে চিটা পড়ার ব্যাপারে তিনি জানান, এখনও পানির স্তর ঠিক থাকায় ধানের আবাদে কোনো ক্ষতি হওয়ার আশংকা নেই। তাছাড়া দুই/একদিনে বৃষ্টি নামবে তখন যেটুকু ক্ষতি হয়েছে সেটা পূরণ হয়ে যাবে। চিটা হয়ে যাওয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, এখনও ধানের শীষ ঠিকমতো বের হয়নি। তাই, চিটা পড়ার সম্ভাবনা নেই। তাছাড়া আমাদের কৃষি বিভাগ এনিয়ে মাঠে কৃষকদের নিয়ে কাজ করছেন।

যাযাদি/ এসএম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে