সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১

গোসাইরহাটে পৌরঃ আয়কর, ভ্যাটের টাকা ও নিয়োগ বাণিজ্য 

গোসাইরহাট (শরীয়তপুর) প্রতিনিধি
  ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২০:১২
নিয়োগ বাণিজ্য 

শরীয়তপুর গোসাইরহাট পৌরসভায় উন্নয়নমূলক কাজ এবং হাট-বাজার ইজারার আয়কর ও ভ্যাটের টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করা ও নিয়োগ বাণিজ্যর অভিযোগ উঠেছে।

গোসাইরহাট পৌরসভার বাংলা বছর ১৪৩১ সনের অর্থ বছরের ইজারাকৃত হাট বাজার ইজারা মূল্যের ৫% টাকা যাহার পরিমান ১৮,৯৪,৭২৪ (আঠারো লক্ষ চুরানব্বই হাজার সাতশত চব্বিশ টাকা) টাকা জমা দেন নাই সরকারী কোষাগারে ভূমি অফিস জানায়৷ ঁঁ

অফিস সূত্রে জানাযায়, শরীয়তপুর কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট সার্কেল-২ অফিস থেকে বাংলা ১৪২৯ ও ১৪৩০ সনের গোসাইরহাট পৌরসভার আওতাধীন হাট-বাজার, জলমহল, বালুমহল, খেয়াঘাট- এর ইজারা উপর সংযোজন কর ও সুদ বাবদ বাবদ সরকারি রাজস্বের হিসাব বকেয়া টাকা জন্য বার বার তলব করা হয়, যাহার টাকার পরিমান ৯৮,৭৯,২০২ (আটানব্বই লক্ষ উনআশি হাজার দুইশত দুই টাকা) সরকারী কোষাগারে জমা দেন না পৌরসভা কর্তৃপক্ষ৷

এদিকে, গোসাইরহাট পৌরসভার (অপসারণকৃত) মেয়র ও পৌরঃ নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল আলীম মোল্লার বিরুদ্ধে নিয়োগ-বাণিজ্য, টাকা আত্মসাৎ, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা না দেওয়াসহ পাহাড় সমান অভিযোগ উঠে গোসাইরহাট পৌরসভার (অপসারণকৃত) মেয়র আব্দুল আউয়াল সরদারও আলীম মোল্লার বিরুদ্ধে।

টিকাদানকারী (মহিলা) প্রার্থী সুমাইয়া আক্তার (৩০), বলেন, আমি উপজেলা নির্বাহী অফিসার এর কার্যালয়ে অভিযোগ দাখিল করেছি, আমি গোপন সূত্রে জানতে পারি যে তানিয়া সুলতানাকে গোসাইরহাট পৌরসভা কার্যালয় কর্তৃক টিকাদান কাজে প্রশিক্ষন প্রাপ্ত প্রার্থীকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে বলে সার্কুলার প্রকাশ করেন। কিন্তু তানিয়া সুলতানার সকল সনদপত্রের সমস্যা আছে। তানিয়া সুলতানা কোন প্রকার টিকাদানকারীর কোন সনদ না থাকায় অভিযোগকারীদের সাথে গোপন ভাবে অর্থনৈতিক লেনদেনের মাধ্যমে উক্ত সার্কুলারে নিয়োগ দেন।

আরো একজন প্রার্থী মাসুম মিয়া (২৯), বলেন ,যেখানে আমি এবং সায়মন হোসেন টিকাদানকারী (পুরুষ) পদে চাকুরীর জন্য আবেদন করি। পরীক্ষার ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিমাণে অনিয়ম লক্ষ্য করা যায়। যেখানে সায়মন হোসেন, গোসাইরহাট পৌরসভার পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল আলিম মোল্যার নিকট পরীক্ষা সকল প্রশ্নপত্র জমা থাকায় প্রশ্নপত্র তাদেরকে দেওয়া হয়৷ যেখানে প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা শুরু হওয়ার সময় উল্লেখ ছিল সকাল ১০টায় কিন্তু অভিযুক্তব্যক্তি বর্গের অবৈধ লেনদেনের সহায়তায় উক্ত কুচক্রী মহল ৩০ মিনিট পরে পরীক্ষা শুরু করে। অন্যদিকে ম্যাজিষ্ট্রেট স্যার এই ১.৩০ মিটিনের পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে পরীক্ষার হলে এক মুহূর্তের জন্যও পরীক্ষার হল পরিদর্শনে আসেন নাই। তিনি পরীক্ষার হল পরিদর্শনে গেলে তাহাকে উক্ত ৩০ মিনিট পরে পরীক্ষা শুরু হওয়ার এবং হলের মধ্যকার অনিয়মের বিষয়ে অভিযোগ করতাম। সায়মন হোসেন পরীক্ষার সময় আমার সামনে বেঞ্চে বসে পরীক্ষা দেয় এবং সে এমন অযোগ্য লোক যে, বিভিন্ন কু-চক্রের লোকজন তাকে অবৈধ ভাবে উত্তর পত্র এনে দিলেও সে দেখে দেখেও লিখতে পারে নাই যাহা আমি স্ব-চক্ষে দেখি। আমার সামনে বসে পরীক্ষা দেওয়ায় আমি দেখিতে পারি যে, তার পরীক্ষা তেমন ভালো হয়নি। যেখানে পরীক্ষার সময় পরীক্ষার হলের মধ্যে বিভিন্ন লোকের মাধ্যমে সায়মন হোসেনকে অবৈধ ভাবে উত্তরপত্র দিয়ে সহায়তা করা হয়েছে।

জয়ানাল আবেদীন বলেন, নিয়োগ পরিক্ষা বাতিলের ব্যাপারে সুপ্রিমকোর্টে মামলা করি, আদালত সেই মামলায় নিয়োগ স্থগীত করেন৷ আদলত ডিসি অফিসকে মামলার তদারকি দায়ীত্বদেন৷ পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আহমেদ সাব্বির সাজ্জাদ আবেদনকারীদের অফিসে ডাকেন৷ পরে কোন সুরাহা হয়না বলে জানান৷

গোসাইরহাট পৌরসভার সাবেক মেয়র আব্দুল আউয়াল সরদার বলেন, পৌরসভার বিভিন্ন পদে ১৩ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে নিয়োগ প্রদানে কোনো আর্থিক লেনদেন করেননি তিনি। তিনি দাবি করেন, জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি গিয়ে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। কাউকে অগ্রিম প্রশ্নপত্র দেওয়া হয়নি। জয়নাল আবেদীন নামের একজন চাকরি প্রার্থী তার বাড়িতে গিয়ে চাকরি পাওয়ার জন্য তাকে মোটা অঙ্কের অর্থের প্রস্তাব দেয়। কিন্তু তিনি সে প্রস্তাব নাকচ করে দেন। ওই প্রার্থীর চাকরি না হওয়ার কারণে তিনি এসব অভিযোগ করেছেন বলে জানান।

যাযাদি/ এম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে