নাটোরে প্রধান শিক্ষকের রাজসিক বিদায়

প্রকাশ | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৫:৫২

নাটোর প্রতিনিধি
ছবি: যায়যায়দিন

নাটোরের প্রাচীনতম বিদ্যাপীঠ দিঘাপতিয়া পিএন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলিম উদ্দিন। রোববার ছিল তার কর্মজীবনের শেষ দিন। তার বিদায়কে স্মরণীয় করে রাখতে সহকর্মী শিক্ষক আর স্নেহের শিক্ষার্থীরা মিলে করেন রাজশিক আয়োজন। প্রিয় শিক্ষকের বিদায়কে স্মরণীয় করতে ঘোড়ার গাড়িতে নিজ বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়। 

সোমবার নাটোর সদর উপজেলায় দিঘাপতিয়া পিএন উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে শহরের দক্ষিণ পটুয়াপাড়া এলাকার নিজ বাড়িতে পৌঁছান এ শিক্ষক। এসময় স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা ঘোড়ার গাড়ির পিছনে মোটরসাইকেল ও অটোরিকশার বহন নিয়ে শিক্ষককে বাড়িতে পৌঁছে দেন।  

বিদায় ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- নাটোর সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নাজনীন সুলতানা, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রমজান আলীসহ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষিকা, কর্মচারীসহ শিক্ষার্থীবৃন্দ।

জানা গেছে, ২০১০ সালে নাটোর জেলার প্রাচীনতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দিঘাপতিয়া পিএন উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগ দান করেন। এর আগে ১৯৭৭ সালে বড়াইগ্রামের নগর উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে শিক্ষকতা শুরু বরেন। এরপর ১৯৯৪ সালে হয়বতপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে শিক্ষকতা করেন। তারপর ২০১০ সালে দিঘাপতিয়া পি এন উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। দীর্ঘ প্রায় ১৪ পর সুনামের সঙ্গে শিক্ষকতা করেন। অবসর জনিত কারণে গত ১৯ সেপ্টেম্বর শিক্ষকতা জীবনের সমাপ্ত ঘটে।

বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা তাপসী রানী ভট্টাচার্য্য বলেন, তিনি অনেক ভালো ও উদার মনের মানুষ। শিক্ষক হিসেবে শিক্ষার্থীদের কাছে বেশ প্রিয় ছিলেন। কখনো রাগ বা ক্ষোভ দেখিনি। পিতার মতো শিক্ষার্থীদের পড়িয়েছেন। আমার কর্ম জীবনে এমন শিক্ষক পেয়ে নিজেকে ধন্য মনে করছি। তিনি এত উদার মনের মানুষ, কোনো শিক্ষকের বিপদ হলে সঙ্গে সঙ্গে যেতেন এবং খোঁজ খবর নিতেন। স্যার অবসর জনিত কারণে বিদায় নিয়েছেন। সবাইকে মানতেই হবে। আমরা স্যারের দীর্ঘায়ু ও সুস্থ্যতা কামনা করছি।

সাবেক এ প্রধান শিক্ষক আলিম উদ্দিন বলেন, দীর্ঘ ৩৭ বছর শিক্ষকতা শেষে কাল অবসর নিয়েছি। মহান এ পেশায় নিজেকে নিয়োজিত করতে পেরে আজ সার্থক। আমার শিক্ষকতায় অনেক শিক্ষার্থীদের পেয়েছি। তাদের ভালোবাসায় পেয়েছি, তাদের মনে স্থান পেয়েছি বলেই শেষ বিদায়ে তারা আমাকে অশ্রুসিক্ত জলে বিদায় দিয়েছেন। আমি সার্থক এমন শিক্ষার্থীদের পেয়ে।
তিনি আরও বলেন, এ প্রতিষ্ঠান চালাতে গিয়ে আমার বিরুদ্ধে অনেক কু-চক্র ষড়যন্ত্র করেছিল। আমাকে হেয়প্রতিপন্ন করেছিল। সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে এ প্রতিষ্ঠান সুনামের সাথে চালিয়েছি। এ বিপদে আমার সহকর্মীরা পাশে ছিলেন।

আমার শিক্ষক ও শিক্ষিকারা অনেক ভালো মনের মানুষ। তারা আমার এ প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালনে সর্বত্র দিয়ে সহযোগিতা করেছেন। সেজন্য তাদের কাছে কর্তৃজ্ঞ।

যাযাদি/ এসএম