রোববার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১

পীরগঞ্জে বাবা মায়ের পথ চেয়ে আছে অবুঝ তিন শিশু

পীরগঞ্জ (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি
  ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৩:০৪
ছবি: যায়যায়দিন

ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে তিন শিশু সন্তানকে রেখে অন্যের হাত ধরে পালিয়ে গেছেন মা ও ঢাকায় গিয়ে আরেক নারীকে বিয়ে করেছেন বাবা। শিশুদের দাদা-দাদিও নাই। কয়েক মাস ধরে এলাকাবাসীর সহায়তায় নানা-নানীর সংসারে বেড়ে উঠলেও অভাবের কারণে এখন সেখানেও ঠাই হচ্ছে না তাদের। দিন মজুর ফুপু রাশেদা শিশুদের দেখভাল করার দায়িত্ব নিতে চাইলেও তাদের ভোরণ পোষণ নিয়ে রয়েছেন চরম দুশ্চিন্তায়। এ অবস্থায় অবুঝ শিশুদের নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তিনি। তাদের বাড়ি পৌর শহরের রেলস্টেশনের পশ্চিমে জগথা ফকিরপাড়ায়।

স্থানীয়রা জানায়, জগথা মহল্লার পয়গাম আলী নামে এক ব্যক্তি প্রায় দুই বছর আগে সন্তান সম্ভবা স্ত্রী এবং দুই শিশু সন্তানকে রেখে ঢাকায় গিয়ে অন্যত্র বিয়ে করেন। তার স্ত্রী দুই সন্তান নিয়ে কষ্ট করে এলাকাতেই ছিল। এরই মধ্যে তৃতীয় সন্তান জন্ম দেন ওই নারী। বর্তমানে তার ছোট সন্তান বয়স ৯ মাস। বড় মেয়ের বয়স ৮ বছর এবং মেঝ মেয়ের বয়স ৪ বছর। তিন সন্তান নিয়ে কষ্ট করেই দিন পার করছিলেন পয়গামের স্ত্রী। দুই মাস আগে হঠাৎ করেই শিশু তিনটির মা অন্যের হাত ধরে পালিয়ে গেছেন। এতে অসহায় হয়ে পড়ে শিশুরা। এর পর থেকে এলাকাবাসির সহায়তায় নানা-নানীর সংসারে বড় হতে থাকে তারা। শিশুদের নানা পেশায় রিক্্রা-ভ্যান চালক। এলাকার লোকের সাহায্য সহায়তা কমে গেলে নানা-নানীর টানা টানির সংসারেও বোঝা হয়ে দাড়ায় তারা। সেখানেও ঠাই হয়নি তাদের। খেয়ে না খেয়ে দিন কাটতে থাকে তাদের। খবর পেয়ে সপ্তাহ খানেক আগে শিশুদের একমাত্র ফুপু রাশেদা বেগম পঞ্চগড় থেকে এসে তাদের দেখভাল শুরু করেছেন। কিন্তু তিনিও পেশায় দিন মজুর। তার একার পক্ষে শিশুদের ভরণ পোষন দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তাছাড়া বচ্চাদের রেখে তিনি কাজেও যেতে পারছেন না। এ অবস্থায় চরম বিপাকে পড়েছেন তিনি।

রুবেল নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, বাচ্চাগুলোকে দেখে আমার খুব মায়া হয়, স্ত্রীকে ডিভোর্স না দিয়েই বাচ্চাগুলোর বাবা ঢাকায় চলে যায়। এরপর দুই মাস পূর্বে মা আশা আক্তারও পালিয়ে গেছেন। তাদের দেখার মত তেমন কেউ নাই। এটা খুবই দুঃখজনক।

শনিবার দুপুরে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ছোট্ট বাচ্চাটি ক্ষুধার যন্ত্রণায় কাঁদছে, বাকি দুটো বাচ্চা পান্তা (তরকারি ছাড়া পানি দেওয়া ভাত) খাচ্ছে। তারা এখনো মা বাবার অপেক্ষায় প্রহর গুনছে। তারা জানেই না যে তাদের মা-বাবা ছেড়ে চলে গেছেন।

এ সময় রাশেদা বেগম বলেন, আমার বাসা পঞ্চগড়। বাচ্চাগুলোর কথা শুনে এখানে ছুটে এসেছি। বাচ্চাগুলোর খাবার সংকট। আমি দিন মুজুরীর কাজ করি। বাচ্চাগুলোকে রেখে এখন কাজেও যেতে পারছি না। সবাই যদি এগিয়ে আসে তাহলে বাচ্চা গুলোকে আমি বাচাতে পারব। না হলে কিযে হবে- আল্লাই জানেন।

এ বিষয়ে উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা এস এম রফিকুল ইসলাম বলেন, রোববার বিকালে (আগামীকাল) শিশু অধিকার কমিটির মিটিং আছে। সেখানে আসেন, বাচ্চাগুলোর বিষয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

যাযাদি/ এসএম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে