ধর্মপাশায় কাগজপত্রে জেলে সমিতির নাম, নেতাদের দখলে জলমহাল

প্রকাশ | ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:৩২

ধর্মপাশা-মধ্যনগর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি
ফাইল ছবি

সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলাধীন ধারাম নামক জলমহালটি পাশের নেত্রকোনা জেলার মোহনগঞ্জ উপজেলা বিএনপির নেতা মহসিন আহমেদ ভোগদখল করছেন এবং ধর্মপাশা উপজেলা যুবদলের আহবায়ক কমিটির সদস্য ও সুনামগঞ্জ জেলা পরিষদের সদস্য চন্দন খান জলমহালটি নিয়ন্ত্রণ করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। অথচ ইজারা  হিসেবে নাম আছে দৌয়তলপুর স্পন্দন মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি মো, আবেদ মিয়া। কিন্তু তথ্য বলছে, ইজারা গ্রহীতা আবেদ মিয়া ও তার সমিতির সদস্যরা  শুধু দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে জলমহালটি দেখভাল করেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ধরাম  জলমহালটি চলিত ১৪৩১ বাংলা সন হইতে ১৪৩৬ বাংলা সন পর্যন্ত ৬ বছর বাৎসরিক ৪৩ লাখ টাকা  ৬ বছরের জন্য উন্নয়ন পরিকল্পনায় ইজারাপ্রাপ্ত হয় দৌয়তপুর স্পন্দন  মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি মো. আবেদ মিয়া।

ইজারার দরপত্রে আবেদনকারী হিসেবে দেখানো হয় সমিতির সভাপতি আবেদ মিয়ার নাম। তবে স্থানীয়দের  অভিযোগ গত ৫ ই আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পাশের নেত্রকোনা জেলার মোহনগঞ্জ উপজেলা বিএনপির নেতা মহসিন আহমেদ ও ধর্মপাশা উপজেলা যুবদলের আহবায়ক কমিটির সদস্য চন্দন খান প্রভাব কাটিয়ে সরকারি নীতিমালা লঙ্ঘন করে ধারাম নামক জলমহালটি সাব লিজ নিয়ে  ভোগদখল করছেন বিএনপির নেতা মহসিন আহমেদ ও জলমহালটি নিয়ন্ত্রণ করছেন যুবদল নেতা চন্দন খানসহ স্থানীয় প্রভাবশালী নেতারা।

নাম না প্রকাশ করা সত্ত্বে ধর্মপাশা উপজেলা যুবদলের একাধিক নেতা জানান, গত ৫ আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর যুবদল নেতা চন্দন খান প্রভাব কাটিয়ে জোরপূর্বক ধারাম নামক জলমহালটি ভোগদখল করছে। এমন কি গত জেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে নির্বাচন করেছে । আমরা মনে করি বিএনপি ও যুব দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে তাই তার বিরুদ্ধে দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।

দৌয়তলপুর স্পন্দন মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি আবেদ মিয়ার সাথে  যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন এ বিষয়ে পরে কথা হবে।

ধর্মপাশা উপজেলা যুবদল নেতা চন্দন খানের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করে হলেও মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়ায় তাই বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। জলমহালটি ভোগ করে আসা মোহনগঞ্জ উপজেলা বিএনপি  নেতা মহসিন আহমেদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও কল রিসিভ না করা বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয় নাই।

ধর্মপাশা উপজেলা যুবদলের আহবায়ক শওকত আলী বেপারী বলেন, গত জেলা পরিষদ নির্বাচনে বিএনপি সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে চন্দন খান নির্বাচন করেছে। গত ৫ই আগস্টে আওয়ামী সরকারের পতনের পর সে ধারম  জলমালটি দখল করে নিয়েছে। চন্দন খান  বিএনপি নেতা কর্মীদের উপর অত্যাচার নির্যাতন করছে। এতে যুবদলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে আমরা তার বিরুদ্ধে দলীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য জেলা কমিটির কাছে সুপারিশ করেছি।

জেলা যুবদলের সভাপতি এডভোকেট শওকত মনসুর বলেন, দখলদার ও চাঁদাবাজদের  বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে রয়েছেন আমাদের নেতা তারেক রহমান অতএব কোনো যু্বদল নেতার বিরুদ্ধে যদি  দখলের অভিযোগ পাওয়া যায়, তাহলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমি যুবদল নেতা চন্দন খানের বিষয়টি খোঁজ নিয়ে তা  তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পেলে তার বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ধর্মপাশা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মাদ গিয়স উদ্দীন বলেন, প্রকৃত মৎস্যজীবী সমিতির অনুকূলেই জলমাল ইজারা দেওয়া হয় । তবে কেউ যদি ইজারা নিয়ে সাব-ইজারা দেয়, সে ক্ষেত্রে  তদন্ত করে উদ্বোধন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।

যাযাদি/ এসএম