কবি আল মাহমুদকে মরণোত্তর রাষ্ট্রীয় সম্মান ও স্বাধীনতা পদক প্রদানের দাবি

প্রকাশ | ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৯:৪২

স্টাফ রিপোর্টার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
ছবি : যায়যায়দিন

আধুনিক বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান কবি আল মাহমুদকে মৃত্যুর ৫ বছর পর নানা আয়োজনে স্মরণ করা হয়েছে তার নিজের জন্মভিটা ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। তার কবর জাতীয় পতাকায় আচ্ছাদিত করা হয়। দেয়া হয় প্রতীকি গার্ড অব অর্নার। রাজনৈতিক কারনে মৃত্যুর পর যথাযথ সম্মান পাননি বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ভাষা সৈনিক আল মাহমুদ। সে কারনে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তাকে মরণোত্তর রাষ্ট্রীয় সম্মান ও স্বাধীনতা পদক প্রদানের দাবি জানানো হয়।

২০১৯ সালের ১৫ই ফেব্রæয়ারী মৃত্যুর পর ঢাকায় বিখ্যাত এই কবিকে জাতীয়ভাবে যথাযথ সম্মান দিয়ে দাফনের চেষ্টা ব্যর্থ হলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের মৌড়াইলে তার গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। এখানে ১৭ই ফেব্রুয়ারী নামাজে জানাযা শেষে মৌড়াইল গোরস্থানে অনেকটা নিরবে তাকে সমাহিত করা হয়।

আজ শনিবার দুপুরে শহরের নিয়াজ মুহম্মদ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জেলার  কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে কবি আল মাহমুদ গবেষণা কেন্দ্র ও স্মৃতি পরিষদ সমাবেশসহ নানা কর্মসূচীর আয়োজন করে।

এতে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র হাফিজুর রহমান মোল্লা কচি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি জাবেদ রহিম বিজন, কবি মহিবুর রহিম, কবি আল মাহমুদ গবেষণা কেন্দ্র ও স্মৃতি পরিষদ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সভাপতি ইব্রাহিম খান সাদাত, সাধারণ সম্পাদক জিহাদ হোসেন লিটন প্রমুখ। 

ইউনাইটেড কলেজের প্রভাষক শাহজাহান মিয়ার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন রাবেয়া জাহান তিন্নি, রাকিবুল ইসলাম শুভ, রুদ্র মোহাম্মদ ইদ্রিস। বক্তারা বলেন,ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধে আল মাহমুদের অবদান অবিম্মরণীয়। শুধু রাজনৈতিক কারনে মৃত্যুর পরও তাকে উপযুক্ত সম্মান দেয়া হয়নি। 

কবি আল মাহমুদের সাহিত্য কর্ম নিয়ে গবেষনা ও স্মৃতি ধরে রাখার উদ্দেশ্যে সম্প্রতি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গঠিত হয় কবি আল মাহমুদ গবেষণা কেন্দ্র ও স্মৃতি পরিষদ। এর সভাপতি ইব্রাহিম খান সাদাত জানান-প্রতিবছর ১৫ই ফেব্রæয়ারী মৃত্যু দিবসে কবি আল মাহমুদ সাহিত্য মেলা ও সোনালী কাবিন পদক প্রদান করা হবে। তিন আরো বলেন, পত্রিকায় প্রকাশিত খবর অনুযায়ী ৫২ হাজার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা ভাতা ও সম্মান গ্রহন করলেও একজন প্রকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ভাষা সৈনিককে পতিত সরকার অপদস্ত করেছে। তিনি স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে জাসদের মুখপত্র গনকন্ঠের সম্পাদক থাকা অবস্থায় জেল-জুলুমের শিকার হয়েছেন। আবার দৈনিক সংগ্রাম পত্রিকায় কাজ করার কারনে তাকে প্রকৃত সম্মান থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। আল মাহমুদ বাংলা একাডেমী ও একুশে পদকসহ অসংখ্য পুরস্কার পেয়েছেন। আমরা তাকে মরনোত্তর স্বাধীনতা পদক দেয়ার দাবি করছি।    

সমাবেশ শেষে একটি শোভাযাত্রা বের হয়ে মৌড়াইল কবরস্থানে পৌছে। সেখানে প্রয়াত কবির কবর জাতীয় পতাকায় আচ্ছাদিত করা হয়। বিএনসিসির পক্ষ থেকে দেয়া হয় প্রতীকি গার্ড অব অর্নার। এসময় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের পক্ষ থেকে কবির কবরে পুস্পস্তবক অর্পন করা হয়। তার রুহের মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া করা হয়।

উল্লেখ্য, কবি আল মাহমুদ ১৯৩৬ সালের ১১ জুলাই ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের মৌড়াইল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ২০১৯ সালের ১৫ই ফেব্রæয়ারি তিনি ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।

যাযাদি/ এম