কুমিল্লায় দাওয়াত না দেয়ার জের : প্রবাসীকে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা

প্রকাশ | ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৮:২৪

স্টাফ রিপোর্টার, কুমিল্লা
ছবি : যায়যায়দিন

কুমিল্লার বরুড়ায় একটি পারিবারিক অনুষ্ঠানে দাওয়াত না পেয়ে শিলমুড়ি দক্ষিণ ইউনিয়নের বালুয়া গ্রামের মো. জাকির হোসেন নামের এক লন্ডন প্রবাসীকে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টার ঘটনা ঘটেছে।

হামলার পর ওই প্রবাসীর বাড়ি ছাড়াও তার লোকজনের ১০টি বাড়িতে সশস্ত্র হামলা ব্যাপক ভাঙচুর ও মালামাল লুটে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। গত ১০ সেপ্টেম্বর বরুড়া উপজেলার শিলমুড়ি বাজার এবং পরে বালুয়া গ্রামে ওই হামলার ঘটনায় প্রতিপক্ষের লোকজনের মিথ্যা মামলা ও হামলার ভয়ে বাড়ি ছাড়া অন্তত ১০ টি পরিবারের লোকজন। 

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী প্রবাসী জাকিরের ছোট ভাইয়ের স্ত্রী সূচনা আক্তার বাদি হয়ে গত বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) কুমিল্লার আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। 

মামলার অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বালুয়া গ্রামের দুলাল মিয়া, জহিরুল ইসলাম, মনির হোসেন, জালাল মিয়া এবং বোরহান উদ্দিন সরকার পতনের পর থেকে এলাকায় বিএনপির নাম ভাঙিয়ে নানা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড শুরু করে। হামলায় আহত বালুয়া গ্রামের হাজী আনু মিয়ার ছেলে জাকির হোসেন স্ত্রী-সন্তানসহ লন্ডনে বসবাস করেন। সম্প্রতি তিনি দেশে এসে নিজ বাড়িতে আত্মীয় স্বজনদের নিয়ে একটি পারিবারিক ভোজ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। 

 ওই অনুষ্ঠানে দাওয়াত না দেওয়ায় দুলাল মিয়াসহ অন্যান্য আসামিরা প্রবাসী জাকিরের উপর ক্ষিপ্ত হয়। গত ১০ সেপ্টেম্বর দুপুরে জাকির স্থানীয় শিলমুড়ি বাজারে কেনাকাটা করতে যান। এসময় দুলাল মিয়া তাকে দেখে দৌড়ে এসে ‘আমাকে দাওয়াত দিলি না কেন’ বলেই পাশে থাকা একটি ইট দিয়ে প্রবাসী জাকিরের মাথায় আঘাত করেন। 

এসময় দুলালের সহযোগী জহির, মনির, জালাল ও বোরহান উদ্দিনসহ বেশ কয়েকজন দেশীয় অস্ত্র দিয়ে তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে ফেলে চলে যায়। পরে স্থানীয়রা আশংকানজক অবস্থায় জাকিরকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন। জাকিরের পরিবারের অভিযোগ অভিযুক্তরা হাসপাতালে এসেও আহতদের ভয়ভীতি দেখান। 

পরে ওইদিন বিকেলেই তারা জাকিরের বাড়ি ও তার লোকজনের ১০/১২টি বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট করেন। পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভুক্তভোগী জাকির লন্ডনে গিয়ে একটি হাসপাতালে ভর্তি হন। বর্তমানে সেখানে চিকিৎসাধীন আছেন তিনি। 

প্রবাসী জাকির হোসেন মুঠো ফোনে বলেন, এর আগেও দুলাল চক্র তার কাছ থেকে একাধিকবার চাঁদা নেয়। এবার সরকার পতনের পর তারা সংঘবব্ধ হয়ে কয়েকবার চাঁদা চায়। এছাড়া এলাকার লোকজনের সাথে আমার কিছু জমি সংক্রান্ত বিরোধের নেপথ্যে ছিল দুলাল চক্র।  কিন্তু আমি নিজ দায়িত্বে এসব বিরোধ মীমাংশা করায় কোন দুলাল চক্র আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়।  

তাই চাঁদা না পেয়ে অনুষ্ঠানে দাওয়াত না দেয়ার অযুহাত তুলে আমাকে হত্যার চেষ্টা করেছে। বাড়ি ঘরে হামলা, ভাংচুর ও একটি হোন্ডাসহ মালামাল লুটে নেয়। পরে তারাই উল্টো আমাদের বিরুদ্ধে মাদকের মিথ্যা অপবাদ ও হামলার মিথ্যা অভিযোগে মামলা দায়ের করেছে। 

তিনি আরও বলেন, আমার বাড়ি কাজ করার সময় একই গ্রামের মাজহারুল ইসলাম হাসান কাজ তদারকী করতো। সেই সময় থেকে তার সাথে পরিচয়। এখন তাকে আমার সাথে জড়িয়ে জড়িয়ে থানায় আমার উপর হামলাকারী দুলাল মিয়া তার স্ত্রী কুহিনুর বেগমকে বাদী করে গত ১৪ সেপ্টেম্বর থানায় মিথ্যা মামলা দিয়েছেন। এ অভিযোগের কোন সত্যত্ ানাই। এদিকে অভিযুক্তদের মুঠোফোনে কল করা হলে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে তারা মোবাইল সংযোগ কেটে দেন। পরে আর ফোন তোলেননি।

বরুড়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হক বলেন, আমি বরুড়া থানায় নতুন যোগদানের আগেই এ হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ নিয়ে উভয় গ্রুপের লোকজন আহত আছে। থানা ও আদালতে পাল্টাপাল্টি মামলাও হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। 

যাযাদি/ এস