শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১

ইউটিউব ও গুগলের মাধ্যমের জাল নোট তৈরি করতো, অতঃপর গ্রেফতার

মাসুম পারভেজ, কেরানীগঞ্জ (ঢাকা)
  ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৫:০৪
ছবি : যায়যায়দিন

ঢাকার কেরানীগঞ্জের শুভাঢ্যা এলাকা থেকে বিপুল পরিমাণ জাল টাকাসহ ২ জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-১০)।

শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে র‌্যাব-১০ এর সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) এম. জে. সোহেল লিখিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মো. গিয়াস উদ্দিন (২৭), ও রেদোয়ান শেখ ওরফে মুমিন (১৯)। তিনি জানান, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানাধীন শুভাঢ্যা ও চুনকুটিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে ৩ লক্ষ দশ হাজার টাকার জালনোট উদ্ধার এবং একটি ল্যাপটপ, একটি প্রিন্টার, একটি কিবোর্ড, একটি মাউস, ৪ টি ক্যাবল, একটি রাউটার, একটি হেয়ার ড্রায়ার, একটি পাম্প এন্ড স্প্রে, একটি ফয়েল রোল, ৮ বোতল বিভিন্ন রং এর কালি, একটি ষ্টীলের স্কেল, ২ টি কার্টার, ৩ টি কার্টিং ফ্রেম, ১০০ পাতা কাগজ, নগদ ২ হাজার টাকা, পাকিস্থানী ৫০ রুপি ও ৩ টি মোবাইলফোনসহ একটি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়। তিনি আরও জানান, সাম্প্রতিক একটি প্রতারক চক্র দীর্ঘদিন যাবত জাল নোট তৈরি করে রাজধানী ঢাকার কেরানীগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, যাত্রাবাড়ী, কদমতলী, শ্যামপুর, ডেমরা এবং নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করে আসছিলো। এই চক্রটি জাল নোটের ব্যবসা করে সাধারণ মানুষকে প্রতারিত করে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। র‌্যাব উক্ত প্রতারক চক্রের সদস্যদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে। গত ১৯ সেপ্টেম্বর, বিকালে রাজধানীর লালবাগ ক্যাম্পের একটি আভিযানিক দল গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ও তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানাধীন শুভাঢ্যা ও চুনকুটিয়া এলাকায় একটি অভিযান পরিচালনা করে এই ২ জনকে জালটাকাসহ গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিরা একটি সংঘবদ্ধ জাল টাকা প্রস্তুত ও সরবরাহকারী চক্র। তারা ইউটিউব ও গুগলসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সাহায্যে জাল টাকা তৈরির সার্বিক দক্ষতা অর্জন করে। অতঃপর তারা উচ্চভিলাষী অভিপ্রায় ও কম সময়ে অল্প পুঁজিতে অধিক অর্থ উপার্জনের উদ্দেশ্যে জাল টাকা প্রস্তুত করার পরিকল্পনা করে। পরবর্তীতে তারা জাল টাকা তৈরির প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি ক্রয় করে এবং জাল টাকা সরবরাহের জন্য জাল টাকা তৈরি ও সরবরাহকারী বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পেইজ ও গ্রুপে সংযুক্ত হয়।

অতঃপর ফেইসবুক গ্রুপ হতে কমেন্ট দেখে তাদের সাথে মেসেঞ্জারে চ্যাটিং এর মাধ্যমে ক্লায়েন্ট তৈরি করে। জাল টাকা সরবরাহের ক্ষেত্রে তারা অগ্রীম টাকা নিয়ে নিত এবং পরবর্তীতে তাদের সুবিধাজনক স্থানে জাল নোটগুলো সরবরাহ করতো। জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায়, চক্রটি বিভিন্ন সময়ে ঢাকার কেরানীগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, যাত্রাবাড়ী, কদমতলী, শ্যামপুর, ডেমরা এবং নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় তৈরিকৃত জাল নোট সরবরাহ করত। তারা প্রতি ১ লক্ষ টাকা মূল্যের জাল নোট ১৫-২০ হাজার টাকার বিনিময়ে বিক্রি করত। বিশেষ করে মাছ বাজার, লঞ্চ ঘাট, বাস টার্মিনালসহ বিভিন্ন মার্কেটে নানান কৌশল অবলম্বন করে জাল নোট সরবরাহ করে করতো। এছাড়াও তারা অধিক জন সমাগম অনুষ্ঠান বিশেষ করে বিভিন্ন মেলা, উৎসব, পূজা ও কোরবানীর পশুর হাট উপলক্ষে বিপুল পরিমান জাল নোট ছাপিয়ে ছিল বলে তথ্য প্রদান করে। আইন- শৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিতে জালনোট প্রিন্টিং এর সময় কাগজের অব্যবহৃত ও নষ্ট অংশগুলো পুড়িয় ফেলত। এ পর্যন্ত তারা বিভিন্ন সময়ে প্রায় ১-২ কোটি টাকা মূল্যমানের জাল নোটের ব্যবসা করেছে বলে জানা যায়।

গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

যাযাদি/ এসএম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে