বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১

টানা বৃষ্টিতে চৌগাছায় ভেসে গেছে মাছের ঘের, ক্ষতি আমন-সবজিরও

চৌগাছা (যশোর)  প্রতিনিধি
  ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৯:০০
ছবি : যায়যায়দিন

যশোরের চৌগাছায় চারদিন ধরে টানা বর্ষণে প্রায় ৩০ ভাগ মাছের ঘের ভেসে গেছে; ক্ষতির মুখে পড়েছেন আমন ও সবজি চাষিরাও।

উপজেলার ১১ টি ইউনিয়নের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে সুকপুকুরিয়া, পাশাপোল ও সিংহঝুলি ইউনিনের চাষিরা।

মাছের ঘের বা ব্যক্তি পুকুর ভেসে যাওয়ার কোনো তথ্য নেই চৌগাছা উপজেলা মৎস্য অফিসে। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা তাছলিমা আক্তার বলেন, ‘‘আমাদের উপজেলায় কোনো মাছর ঘের নেই। এই উপজেলায় বিল, বাওড় ও ব্যক্তিগত পুকুরে মাছ চাষ করে থাকেন চাষিরা। কয়েকদিনের বৃষ্টিতে নিচু এলাকার দুইএকটি বিল ভেসে গিয়ে থাকতে পারে। তা ছাড়া কারো ব্যক্তিগত পুকুর ভেসে গিয়েছে কিনা এমন তথ্য কেউ জানাইনি’’।

এদিকে চাষিদের হিসেব মতে টানা বৃষ্টিতে উপজেলার ১১ টি ইউনিয়নের প্রায় ৩০ শতাংশের বেশি মাছের ঘের ভেসে গেছে।

পাশাপোল ইউনিয়নের বাড়িয়ালি গ্রামের মাছ চাষি আকবার হোসেন, বিল্লাল, দশপাকিয়া গ্রামের রবিউল ইসলাম, বলেন, “ঘেরের সব মাছ পানিতে ভাসে গেছে। অনেক টাকা খরচ করিছি। এখন এই যে ক্ষতি, কীভাবে পোষাব জানিনে”।

তারা আরো বলেন, তাদের এলাকার প্রত্যেকটা ঘেরের একই অবস্থা। সব মাছের ঘের পানিতে ভেসে গেছে। বিলের পানি সরানোর কোনো ব্যবস্থাও নেই। এই এলাকার বিলএড়েলের সকল মাছ বৃষ্টির পানিতে ভেসে গিয়েছে বলে জানা গেছে। উপজেলার তিনটি বাওড় বৃষ্টির পানিতে ভেসে বাওড়ের মাছ ফসলের ক্ষেতে ছড়িয়ে পড়েছে।

সুকপুকুরিয়া ইউনিয়নের আন্দুলিয়া, আড়সিংড়ি, তিলকপুর, ইন্দ্রপুর, বল্লভপুর, গ্রামের বেশিরভাগ মানুষের ব্যক্তিগত পুকুরে মাছ বৃষ্টির পানিতে ভেসে গেছে।

উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে উপজেলায় টানা বৃষ্টির পানিতে উপজেলায় প্রায় ৬ শতাধিক হেক্টর জমির ফসল তলিয়ে গেছে। এছাড়া উপজেলার নিম্নাঞ্চলের সবজি ও আমন ক্ষেত কোনো না কোনোভাবে ক্ষতিগস্ত হয়েছে। এছাড়া আগাম শীতকালীন সবজিসহ অন্য ফসলও আক্রান্ত হয়েছে।

উপজেলার রামকৃষ্ণপুর গ্রামের আজিজুর রহমান জানান, তার দুইবিঘা জমির পটলের মাচা বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে। জহির উদ্দীন জানান, তার ১৭ শতাংশ জমির ফলন্ত বেগুন ক্ষেতে পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে তার প্রায় ১ লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে।

টানা বৃষ্টির পানিতে পান বরজেরও ব্যপক ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন বরজ মালিকরা।

উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা চাদ আলী বলন, “গত এক দশকে উপজেলায় আগাম সবজি চাষ ব্যাপক প্রসার ঘটেছে। বছরব্যাপী এখানে সবজি উৎপাদিত হয়। বিশেষ করে, আগাম শীতকালীন সবজি চাষ করে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছেন এখানকার কৃষক। এবার বৃষ্টিতে এসব সবজি গাছের গোড়া ডুবে গেছে; দমকা বাতাসে অনেক গাছের মাচা ভেঙে গেছে। ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুসাব্বির হুসাইন বলেন, “যশোরের চৌগাছা উপজেলাকে বলা হয় সবজির ভান্ডার। বছরে প্রায় ৩ শতাধিক কোটি টাকার সবজি বিক্রি হয় এখান থেকে। এই বৃষ্টিতে আগাম শীতকালীন সবজি এবং আমনের ব্যপাক ক্ষতি হয়েছে।” বৃষ্টি পরবর্তী ফসলের ক্ষেত পরিচর্জা সম্পর্কে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে বলে তিনি জানান।

যাযাদি/ এম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে