গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক (নুর) বলেছেন, শেখ হাসিনা সরকার বাংলাদেশকে ভারতের পুতুল রাষ্ট্রে পরিণত করার চেষ্টা করেছিল। গত দেড় দশকে আওয়ামী লীগ সরকারের অত্যাচার আর নির্যাতনে দেশবাসী দুর্বিসহ ও যন্ত্রনার মধ্য দিয়ে দিন পাড় করেছে। বর্তমান সরকারকে অস্থিতিশীল করার জন্য নানা জায়গা থেকে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। আওয়ামী লীগ সরকারে দুঃসাহস এতোটাই বেড়ে গিয়েছিল যে, পরবর্তীতে প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামে বিরোধীদলের নেতা কর্মীদের ওপর হামলা, মামলা, গুম, খুন করে একদলীয় শাসন কায়েম করেছিল।

শনিবার সন্ধ্যায় মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার পাঁচ্চর গোল চত্বর বাসস্ট্যান্ডে জেলা গণঅধিকার পরিষদ আয়োজিত এক পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন।

ডাকসু’র সাবেক এই ভিপি বলেন, পিলখানা বিডিআর বিদ্রোহের নামে মেধাবী সেনাদের হত্যা করেছিল। ইসলাম নির্মূল করার জন্য শাপলা চত্ত্বরে সমাবেশে গণহত্যা চালিয়েছিল। সর্বশেষ ছাত্রজনতার প্রতিবাদ ও প্রতিরোধের মধ্য দিয়ে ৫ আগস্ট এই সরকারের পতন হয়েছে।

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনেই প্রার্থী দিতে পারে গণঅধিকার পরিষদ এমনটাই জানিয়ে দলের সভাপতি আরো বলেন, আগামীতে নতুন বাংলাদেশ রচিত হবে। নতুন নেতৃত্বের মাধ্যমে নতুন রাজনীতি প্রতিষ্ঠিত হবে। সেই অঙ্গিকার নিয়েই গণ অধিকার পরিষদের রাজনৈতিক পথচলা। পুরনো রাজনৈতিক দলে শাসন ব্যবস্থা ও কর্মপদ্ধতি দেশের মানুষ দেখেছে। যেই লাউ, সেই কদু। শত শত মানুষ ছাত্র আন্দোলনে জীবন দিয়েছে, আর যেন কাউকে জীবন দিতে না হয়, এজন্য টেকসই গণতন্ত্র চায় গণঅধিকার পরিষদ।

নুরুল হক বলেন, দেশের অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের আমলনামা খুব একটা ভাল না। যে লঙ্কায় যায়, সেই রাবণ হয়। সে চিত্র দেশের মানুষ দেখেছে। পুরনো চাঁদাবাজ, দখলবাজ, হুন্ডাবাহিনী-গুন্ডাবাহিনী তারাই যদি আবার নির্বাচিত হয়ে আসে, তাহলে আমাদের কার জন্যই সুখবর হবে না। এবার পরিবর্তনের সুযোগ এসেছে, জনগণের হাতে ক্ষমতা রয়েছে। আপনাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে, কাকে ভোট দিলে দেশের উন্নয়ন হবে। বিগতদিনে যে সরকার ক্ষমতায় এসেছে পুলিশ-প্রশাসনকে তাদের মতো করে পরিচালিত ও দলীয়করণ করে। জনগণ কারো কাছে যেন জিম্মি না থাকতে পারে, এজন্য রাষ্ট্রের সংস্কারের প্রয়োজন।

তিনি আরো বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য সময় দেয়া হবে। এক ফ্যাসিবাদ গেছে, আরেক ফ্যাসিবাদ তৈরীর প্রক্রিয়া চলছে। বিভিন্ন জায়গায় আগে যেখানে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগের লোকেরা চাঁদা নিতো, দখল করতো, নিয়ন্ত্রণ করতো, সেখানে এখন কিছু কিছু রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা একই কাজ শুরু করেছে। কোন রাজনৈতিক দল শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটাতে পারে নাই। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়েছে। তাই, আগামীর রাষ্ট্রনীতিতে তরুণদের অগ্রাধিকার থাকে, তরুণদের নেতৃত্ব থাকে সেজন্য গণ অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের কাজ করতে হবে। পরিবর্তনের রাজনীতির জন্য ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

গণঅধিকার পরিষদের মাদারীপুর জেলা শাখার সভাপতি গাউচ মৃধার সভাপতিত্বে জনসভায় আরো উপস্থিত ছিলেন গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সহকারী আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট ফিরোজ আহম্মেদ মুন্সী, প্রচার সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, সদস্য কাজী ইউসুফ, গণ অধিকার পরিষদের মাদারীপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার মনির, প্রবাসী অধিকার পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাইফুর মৃধা, ছাত্র অধিকার পরিষদের মাদারীপুর জেলা শাখার সভাপতি আবিদ ইসলামসহ মাদারীপুর জেলা, শরীয়তপুর জেলা ও শিবচর উপজেলার নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

যাযাদি/ এসএম