মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলা আওয়ামীলীগের উপদেষ্টা এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আনান জামানের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন হয়েছে।

আজ শনিবার সকাল ১১ টায় মানিকগঞ্জ প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সিংগাইর উপজেলা বিএনপি আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জেলা ও উপজেলা বিএনপি’র নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

এসময় সিংগাইর উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান মিঠু সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তার লিখিত বক্তব্য পাঠ করে জানান, আওয়ামীলীগ নেতা আনান জামানের গ্রামের বাড়ী সিংগাইর উপজেলার বলধারা ইউনিয়নের গোলাইডাঙ্গা গ্রামে।

দল ক্ষমতায় থাকতে আনান জামান তার গ্রামের বাড়ীতে ঢাকা থেকে উঠতি বয়সের ছেলে-মেয়েদের নিয়ে গান বাজনার আড়ালে প্রায়ই মাদকের আড্ডা ও অসামাজিক কর্মকান্ডে লিপ্ত থাকতেন। এতদিন এলাকার অনেকে বিষয়টি জানলেও উপজেলা আওয়ামীলীগ নেতা এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক হওয়ায় তাকে কেউ কিছু বলতে সাহস পাননি।

ভাওয়াল মির্জাপুর কলেজে ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী অনুষ্ঠিত

সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করে বলা হয়, সম্প্রতি আনান জামান (সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম) ফেসবুক আইডিতে লাইভে গিয়ে অভিযোগ করে বলেন, আমাকে এবং আমার মঞ্চ পুড়িয়ে দিয়ে যদি আপনার শান্ত হোন তবে তাই হোক। আমি আর লুকিয়ে রাখতে পাড়ছি না এত কষ্ট এত যন্ত্রণা। এগুলো আমাকে বলতে হচ্ছে।

গত আগষ্টের পাঁচ তারিখের পর থেকে আমাদের শিক্ষার্থীরা যখন রাস্তায় ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করছিল, রাষ্ট্রের নোংরা পরিস্কার করছিল, বন্যার সময় সাবাই এক হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ছিল,নিজের কাছে এত ব্যাথা এত যন্ত্রণা তুচ্ছ মনে হচ্ছে।

কিন্তু গত সোমবার যখন আপনারা বললেন ১৬ বছর ধরে আপনারা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন,একটি আর্থিক দুরবস্থার মধ্যে রয়েছেন। যদি আমি আপনাদের একটি মোটা অংকের টাকা না দেই তাহলে আপনারা যতগুলো হত্যা মামলা হবে তার মধ্যে আমার নাম দিয়ে দিবেন এবং নো জাসষ্টিজ করে আমার মঞ্জ পুড়িয়ে দিবেন। তাঁর পড় থেকে ভয় না এই যে অসম্মান আমি আর নিতে পাড়ছি না। আমি আর নিব না। আমি আসলে মৃত্যুটাকে উদযাপন করবো। আমি সাতদিনের মধ্যে কোই পাব এত টাকা। আমি তো টাকা দিতে পারবো না। আমি সাতশো মম জ্বালিয়ে নিজের মৃত্যু উদযাপন করতে পারবো। আপনার ভাল থাকুন সুন্দর থাকুন।

এদিকে জেলা এবং উপজেলা বিএনপির কোন নেতাকর্মী তার নিকট এই চাঁদা দাবি করেননি বলে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিএনপির দায়িত্বশীল নেতাকর্মীরা দাবি করে বলেছেন। আওয়ামীলীগ নেতা ও শিক্ষক আনান জামান যদি এই ঘটনার কোন প্রমান দিতে পারেন, যিনি তার কাছে চাঁদা দাবি করেছেন তার বিরুদ্ধে সংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া সহ প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর যদি তিনি (আনান জামান) ঘটনার সত্যতা প্রমান করতে না পারেন তাহলে মিথ্যা প্রচারনায় বিএনপির ভাবমূর্তী নষ্ট হওয়ায় আনান জামানের বিরুদ্ধে প্রচলিত আইন প্রয়োগ করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির নেতাকর্মীরা অভিযোগ করে বলেন, গত পনের বছর আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে আনান জামান নিজ এলাকায় অসহায় গ্রামবাসীদের নানাভাবে অত্যাচার নির্যাতন করেছেন। তিনি একজন শিক্ষক হওয়া সত্বেও ঢাকা থেকে ক্যাডার বাহিনী নিয়ে নিজ এলাকায় জায়গা-জমি দখল করতেন। আনান জামানের কাছে নিজ গ্রামের অনেক ব্যবসায়ীরা টাকা পাওয়ানা রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করলেই তিনি পুলিশ দিয়ে হয়রানি করতেন।

এদিকে আনান জামানের অভিযোগের বিষয়ে তার মুঠোফোন নম্বরে একাদিকবার কল দিলেও তিনি তা রিসিব করেননি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে এসএমস করেও কোন রিপ্লাই পাওয়া যায়নি। মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপি’র সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট আজাদ হোসেন খান, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম নূরতাজ আলম বাহার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম বাদল, সিংগাইর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবিদুর রহমান খান রোমান, সিংগাইর পৌর বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট খোরশেদ আলম ভূইয়া জয়,জেলা যুবদলের সদস্য সচিব তুহিনুর রহমান সহ জেলা ও উপজেলা বিএনপির অনেক নেতাকর্মীরা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

যাযাদি/ এম