বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

খসে পড়েছে বোরহানউদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ছাদের পলেস্তারা

বোরহানউদ্দিন (ভোলা) প্রতিনিধি
  ১৮ আগস্ট ২০২৪, ১১:১৫
ছবি: যায়যায়দিন

ভোলার বোরহানউদ্দিন ৫০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এখন নিজেই অসুস্থ হয়ে পড়েছে। পুরাতন ৩১ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের প্রশাসনিক ভবনের ছাদের পলেস্তারা প্রতিদিন ধসে পড়ছে। ভবনের বিভিন্ন অংশ দিয়ে ফাটল দেখা দিয়েছে। একই সঙ্গে ভবন ক্রমশ দেবে যাওয়ায় চতুর্দিকের গ্রিল বেঁকে গেছে। এ অবস্থার মধ্যে এ ভবনে আতঙ্ক নিয়ে জরুরী বিভাগসহ দাপ্তরিক কাজ করছেন সংশ্লিষ্টরা। ফলে যে কোন মুহূর্তে প্রাণহানীর মতো দূর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। অন্যদিকে গত ৬-৭ বছর আগে হাসপাতালের সীমানা প্রাচীর ভেঙ্গে যাবার পর পুণঃনির্মাণ না হওয়ায় ডাক্তার-নার্সরা চরম নিরাপত্তা ঝুঁকিতে আছেন।

হাসপাতাল কতৃপক্ষ বলছেন, অনতিবিলম্বে ২০০৪-০৫ সালের দিকে নির্মিত সম্প্রসারিত ১৯ শয্যার ভবনে সকল কার্যক্রম স্থানান্তর করা হবে। এর ফলে ২ লাখ ৬৩ হাজার লোকসংখ্যার একমাত্র স্বাস্থ্যসেবার যায়গা সংকুচিত হবে বলে মনে করছেন সচেতনমহল।

বৃহস্পতিবার সরেজমিনে দেখা যায়, ১৯৮২ সালে নির্মিত পুরাতন ভবনের জরুরী বিভাগে ছাদের বড় অংশ নিয়ে ছাদের পলেস্তারা খসে পড়েছে। রোগীদের সেবা দিচ্ছিলেন স্বাস্থ্যকর্মী মিজানুর রহমান। ওই স্থানে তিনিসহ উপ-সহকারী কমিউনিটি স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ জানান, কয়েকদিন আগে তাঁদের পাশে ছাদের পলেস্তারা খসে পড়েছে। অল্পের জন্য তাঁরা রক্ষা পেয়েছেন। বারান্দায় ছাদের কার্নিশের বিশাল অংশ নিয়ে ধসে ঝুলে আছে। খসে পড়া স্থান দিয়ে মরিচা ধরা রড দেখা যাচ্ছে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা এবং আবাসিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তার রুমের ছাদেও ফাটল। অন্যদিকে দেখা যায় বারান্দার গ্রিলগুলো বেঁকে গেছে। ভবন দেবে যাবার ফলে এরকম হয়েছে; এটা স্পষ্ট।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নিরুপম সরকার জানান, মাত্র দুইদিন আগে বারান্দা দিয়ে রুমে যাবার সময় হঠাৎ সামনে পলেস্তারা খসে পড়ে। একটু উনিশ-বিশ হলে দূর্ঘটনা হতে পারতো।

ওই ভবনের দ্বিতীয় তলায় মহিলা ও শিশু বিভাগ। ওই বিভাগের অবস্থাও একই রকম। এদিকে সম্প্রসারিত ভবনে স্থানান্তর হলে স্থান সংকটে চিকিৎসা সেবা সংকুচিত হবে বলে মনে করছেন সচেতনমহল।

বোরহানউদ্দিন প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও উন্নয়নকর্মী ওমর ফারুক তারেক বলেন, ‘সব কিছুরই একটা মেয়াদকাল থাকে। ১৯৮২ সালে নির্মিত ভবনটি অনেক আগেই জরাজীর্ণ অবস্থায় ছিল। যথাসময়ে ভবন ভেঙ্গে নতুন ভবন করলে এ সংকট হতোনা।’ সংগঠক ও সংস্কৃতিকর্মী নুরুল

আমিন হিরন বলেন,‘সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত না নিলে সংকট হওয়াটা স্বাভাবিক।’

ভোলা স্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী মো. রুবেল জানান, ৩১ শয্যা বিশিষ্ট বোরহানউদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি পরিদর্শন করা হয়েছে। পরিত্যক্ত ঘোষণার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (টিএইচও) ডা. নিরুপম সরকার বলেন,‘ সহসাই আমরা পুরাতন ভবন থেকে সরে যাচ্ছি। স্থান সংকটে চিকিৎসা সেবা কিছুটা বিঘ্ন হয়তো হবে। তবে আমরা সাধ্যমত সেবা দিয়ে যাবো।’

দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ভোলা জেলা সিভিল সার্জন ডা. কে,এম শফিকুজ্জামান বলেন,‘পুরাতন ভবন ব্যবহার অনুপযোগী। ২-১ দিনের মধ্যেই এ ভবন ত্যাগ করা হবে। নতুন ভবন নির্মান অপারেশন প্লানে (ওপি) আছে। এ অর্থ-বছরে নতুন ভবন নির্মান হবার কথা রয়েছে। জরুরী ভিত্তিতে আমি সংশ্লিষ্ট বিভাগে খোঁজ নিচ্ছি।’

যাযাদি/ এসএম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে