রোববার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১

চট্টগ্রামে নাশকতার ২৮ মামলায় গ্রেপ্তার ৭৩৫

চট্টগ্রাম ব্যুরো
  ২৫ জুলাই ২০২৪, ১৬:৪৪
ছবি: যায়যায়দিন

চট্টগ্রাম নগরে কোটাবিরোধী আন্দোলনের নামে সন্ত্রাসী কার্যক্রম, হত্যা, দাঙ্গা ও নাশকতার মামলায় এখন পর্যন্ত ৪০৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। নগরের বাহিরে জেলার ১১টি মামলায় ৩২৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলার গ্রেপ্তার অধিকাংশই বিএনপি-জামায়াত সমর্থক।

এছাড়া কোটাবিরোধী আন্দোলনের সময় সংঘর্ষে পুড়িয়ে দেওয়া হয় পুলিশ বক্স এবং চান্দগাঁও থানা, পানি উন্নয়ন বোর্ডের আঞ্চলিক অফিস ও স্বাধীনতার ঘোষণা স্মারক ম্যুরালে হামলা চালানো হয়। এসব ঘটনায় প্রায় ৩০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি)ও চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

পুলিশ জানিয়েছে, গত ১৬ জুলাই রাত থেকে বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) পর্যন্ত চট্টগ্রাম মহানগর ও জেলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৭৩৫ জনকে। এরমধ্যে সিএমপিতে নাশকতার ১৭টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর মধ্যে নতুন করে বুধবার রাতে হালিশহর থানায় একটি মামলা হয়েছে। ওই মামলায় এজাহারনামীয় ৩৭ জনকে আসামি এবং অজ্ঞাতনামা ১০০-১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে চারজনকে।

এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৫ জনসহ এসব মামলায় মোট ৪০৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আর জেলায় ভাঙচুরের ঘটনায় ১১টি মামলা করা হয়েছে। এসব মামলায় ৩২৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

সিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) কাজী মো. তারেক আজিজ বলেন, চট্টগ্রামে কোটাবিরোধী আন্দোলনে হত্যা, দাঙ্গা, সন্ত্রাসী কার্যক্রম ও নাশকতার ঘটনায় ১৭টি মামলা করা হয়েছে। এসব মামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৫ জনসহ মোট ৪০৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমরা সিসিটিভি ফুটেজ ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে আসামিদের শনাক্ত করার চেষ্টা করছি।

চট্টগ্রাম জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) আবু তৈয়ব মো.আরিফ হোসেন বলেন, চট্টগ্রামে কোটাবিরোধী আন্দোলন ঘিরে হামলা, ভাঙচুরের ঘটনায় ১১টি মামলা করা হয়েছে। এসব মামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৪ জনসহ মোট ৩২৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

অন্যদিকে চট্টগ্রামে কোটাবিরোধী আন্দোলনের সময় সংঘর্ষে বহদ্দারহাট পুলিশ বক্স পুড়িয়ে দেওয়া হয় এবং চান্দগাঁও থানা, পানি উন্নয়ন বোর্ডের আঞ্চলিক অফিস ও স্বাধীনতার ঘোষণা স্মারক ম্যুরালে হামলা চালানো হয়। এসব ঘটনায় প্রায় ৩০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এসব ঘটনায় পুলিশ তিনটি ও পানি উন্নয়ন বোর্ড একটি মামলা দায়ের করেছে এবং ৭০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, কমপ্লিট শাটডাউনের অংশ হিসেবে গত ১৮ জুলাই সকালে চট্টগ্রাম নগরের শাহ আমানত সেতু এলাকায় অবরোধ করে কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীরা। পরে পুলিশের ধাওয়ায় খেয়ে তারা বহদ্দারহাট এলাকায় অবস্থান। ওইদিন দুপুর ১টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দফায় দফায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশ ও ছাত্রলীগ-যুবলীগের সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষের শুরুতেই আন্দোলনকারীদের একটি পক্ষ পানি উন্নয়ন বোর্ড কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর চালায়।

এছাড়া সংঘর্ষ চলাকালে গুলিতে এক শিক্ষার্থী নিহতের খবর ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষুব্ধ আন্দোলনকারীরা বহদ্দারহাট পুলিশ ফাঁড়িতে আগুন দেয়। এতে ফাঁড়ির আসবাবপত্রসহ বেশকিছু মালামাল পুড়ে যায়। একই সময় ভাঙচুর চালানো হয় বহদ্দারহাট মোড়ে নবনির্মিত স্বাধীনতার ঘোষণা স্মারক ম্যুরালে। পরে সাড়ে ৫টার দিকে হামলার চেষ্টা করা হয় চান্দগাঁও থানায়। সে সময় পুলিশ গুলি, টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুর রহমান বলেন, প্রায় দুই থেকে আড়াই হাজার আন্দোলনকারী থানায় হামলা চালানোর চেষ্টা করে। হামলায় ছাত্রদের সঙ্গে অংশ নেয় বিএনপি-জামায়াতের লোকজন। বহদ্দারহাট পুলিশ বক্সে হামলার সময় পুলিশ না থাকায় তারা প্রাণে রক্ষা পেয়েছেন। হামলায় থানার প্রধান ফটক ও সিসিটিভি ক্যামেরা ভাঙচুর করা হয়। হামলায় আমার থানায় ৩০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

উল্লেখ্য, কোটা সংস্কারের দাবিতে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের ধারাবাহিক আন্দোলন গত ১৬ জুলাই থেকে চট্টগ্রামে সহিংসতায় রূপ নেয়। এরপর থেকে ১৯

জুলাই পর্যন্ত লাগাতার সংঘাতের ঘটনা ঘটে চট্টগ্রাম নগরীতে। সংঘাতে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন শতাধিক। যাাযদি/ এম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে